হাসপাতালে গাড়িতে ২ মরদেহ উদ্ধার: মালিককে বলা শেষ কথা ‘আমরা গাড়িতে ঘুমাব’

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার মালিবাগের একটি প্রাইভেট হাসপাতালের বেসমেন্টে পার্ক করা প্রাইভেটকারের মধ্যে থেকে দুই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয় গতকাল। প্রাইভেটকারের মালিককে তাদের বলা শেষ কথা ছিল, তারা গাড়ির মধ্যে ঘুমাবেন।

এ বিষয়ে জানতে গাড়ির মালিক জুবায়ের আল মাহমুদ সৌরভের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল দ্য ডেইলি স্টার।

মুঠোফোনে তিনি জানান, তিনি ও তার চালক জাকির হোসেন (৪০) নোয়াখালী থেকে ঢাকায় এসেছিলেন। তার স্ত্রীর ভাইকে বিমানবন্দরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। জাকিরের বন্ধু মিজানও তাদের সঙ্গে ছিলেন।

জুবায়েরের ভাষ্য, 'মিজান সিরাজুল ইসলাম হাসপাতালে তার আত্মীয়কে দেখতে যাওয়ার জন্য গাড়িটি ভাড়া নিয়েছিলেন।'

'আমি যখন হাসপাতাল থেকে বের হচ্ছিলাম, তখন জাকির আমাকে বলেছিলেন, রোগী সকাল ১১টার দিকে ছুটি পাবেন। আর তিনি সেই সময় পর্যন্ত গাড়ির ভেতরে ঘুমাবেন,' বলেন তিনি।

পরে গতকাল পুলিশ  প্রাইভেটকার থেকে জাকির ও মিজানের মরদেহ উদ্ধার করে।

জুবায়ের বলেন, 'রোগীর সঙ্গে মিজানসহ চারজন থাকায় আমি বাসে নোয়াখালী ফিরেছি। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে আমি জাকিরকে ফোন দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি রিসিভ করেননি। গাড়ির জিপিএস ট্র্যাকার দেখে জানলাম, গাড়িটি তখনো হাসপাতালের বেসমেন্টে আছে।'

তিনি বলেন, 'তারপর আমি অনেকবার ফোন করেছি, কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। এদিকে দীর্ঘ ভ্রমণে আমি ক্লান্ত ছিলা, তাই ঘুমিয়েছিলাম। পর দিন সকালে আবার ফোন দিয়েও যোগাযোগ করতে পারিনি। জিপিএসে দেখেছিলাম, গাড়িটি বেসমেন্টেই আছে।'

তারপর মিজান ও রোগীর অন্য আত্মীয়দের নম্বর সংগ্রহ করে মিজানের সঙ্গে যোগাযোগের করার চেষ্টা করেও পারেননি বলে জানান তিনি।

ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'গতকাল দুপুর ৩টার দিকে পুলিশ আমাকে ফোন করে তাদের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে।'

পুলিশ বলেছে, তারা গাড়ির মধ্যে পাওয়া এই দুই ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করছে। গাড়িটি রোববার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে হাসপাতালের বেসমেন্টে প্রবেশ করেছিল।

রমনা বিভাগের ডেপুটি কমিশনার মাসুদ আলম বলেন, 'জাকির ড্রাইভারের সিটে ছিলেন, আর মিজান পাশের সিটে ছিলেন। তারা খুন নাকি অন্য কোনো কারণে মারা গেছেন তা এখনো স্পষ্ট নয়। সিসিটিভি ফুটেজ ও অন্যান্য প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে।'

মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

Comments