‘আপনাদের মেয়ে আর নেই’ ফোনে বলার পর স্বামী পলাতক

রাজধানীর পশ্চিম শেওড়াপাড়ায় চার সন্তানের মা এক নারীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে এ ঘটনার পর থেকে পলাতক ওই নারীর স্বামী।
মৃত ফাহমিদা তাহসিন কেয়ার স্বামী সিফাত আলী ভোরে শ্বশুরবাড়িতে ফোন করে বলেন, 'কেয়া আত্মহত্যা করেছেন—সিলিং ফ্যানে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছেন।'
তবে কেয়ার পরিবারের দাবি, পারিবারিক কলহের জেরে কেয়াকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে সিফাত।
যোগাযোগ করা হলে কেয়ার বাবা রফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজ ভোররাত ২টার দিকে সিফাত আমার স্ত্রী নাজমা বেগমকে ফোন দিয়ে বলে যে কেয়া অসুস্থ, দ্রুত তাদের বাসায় যেতে। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, "আপনাদের মেয়ে আর নেই"।'
নাজমা ও তার স্বামী তাৎক্ষণিক কেয়াদের ফ্ল্যাটে যান। তবে তারা সেখানে কেয়াকে পাননি।
পরে সিফাত ফোনে জানান, তারা যেন পান্থপথে বিআরবি হাসপাতালে যান। সেখানে চিকিৎসক কেয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
রফিকুল বলেন, 'আমরা সেখানে সিফাতের বন্ধু ও ড্রাইভারকে পেলেও সিফাতকে পাইনি। পরে জানতে পারি, সে তার বোন ও দুলাভাইসহ পালিয়ে গেছে।'
রফিকুল আরও বলেন, 'সিফাতের রাগী স্বভাবের ছিল এবং প্রায়ই বাচ্চাদের সামনেই আমার মেয়েকে গালিগালাজ ও মারধর করত। সম্প্রতি মারধর করার পর আমার মেয়ে জানায়, সে আর সংসার করতে চায় না, বাবার বাড়ি ফিরে আসতে চায়। কিন্তু আমরা তাকে বোঝাই, এখন সংসার ভাঙা ঠিক হবে না।'
'আমি সিফাতকেও বলেছিলাম যেন সে আর আমার মেয়েকে নির্যাতন না করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে আমার মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করে এবং এটাকে আত্মহত্যা হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছে,' অভিযোগ রফিকুলের।
কেয়ার মা সাংবাদিকদের বলেন, 'কেয়ার রান্নাঘরে মুরগি কাটা ছিল, রান্নার প্রস্তুতি দেখা গেছে। এভাবে একটা মেয়ে কীভাবে আত্মহত্যা করে।'
জানতে চাইলে মিরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রোকনুজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কেয়ার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে স্বামী সিফাত পলাতক।'
'এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা। ময়নাতদন্ত, সুরতহাল ও পুলিশের তদন্ত শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে,' বলেন তিনি।
Comments