বান্দরবান

ভোট দেওয়া ভোটারদের দিয়েই লাইন

কেন্দ্রের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা নৌকার ব্যাজধারী ভলান্টিয়াররা ভোট দিয়ে আসা ভোটারদের জোর করে আবার লাইনে দাঁড় করায়।
বাংলাদেশ জাতীয় নির্বাচন ২০২৪
কালাঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল সাড়ে ১০টার একটু আগেও কোনো ভোটারের লাইন দেখা যায়নি। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে নারী ও পুরুষদের পৃথক দুটি লাইন দেখা যায়। লাইনের নারী ও পুরুষদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তারা আগেই ভোট দিয়েছেন। কিন্তু, নৌকার কর্মীদের চাপে আবার লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে। ছবি: স্টার

চলমান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে আজ রোববার সকাল ৮টায়। সকাল সাড়ে ১০টায় বান্দরবান সদর পৌরসভায় ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কালাঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ভোটের লাইনে ভোটার নেই। 

সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে কেন্দ্রের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা নৌকার ব্যাজধারী ভলান্টিয়াররা ভোট দিয়ে আসা ভোটারদের জোর করে আবার লাইনে দাঁড় করায়।

সাড়ে ১০টার একটু আগেও সেখানে কোনো লাইন দেখা যায়নি। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে নারী ও পুরুষদের পৃথক দুটি লাইন দেখা যায়।

লাইনের ভোটারদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দেখা গেছে, তাদের আঙুলে অমোচনীয় কালির দাগ আছে। 

জানতে চাইলে তারা বলেন, ইতোমধ্যে তারা ভোট দিয়েছেন। কিন্তু নৌকার কর্মীদের চাপে আবার লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে।

তাদের দুজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা সকালে ভোট দিয়েছি। আমাদের যেতে না দিয়ে আবার দাঁড়িয়ে থাকতে বলেছে, তাই দাঁড়িয়ে আছি।'

তারা জানান, ভোটারের লাইনের পাশে হাটাহাটি করতে থাকা কালাঘাটা এলাকার বাসিন্দা ও নৌকার কর্মী সুকুমার বড়ুয়া তাদের লাইনে দাঁড়াতে বলেছেন।

কেন ভোটারদের ভোট দেওয়া শেষ হলেও, লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে জানতে চাইলে সুকুমার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা কাউকে জোর করে লাইনে দাঁড় করাইনি। যারা ভোট দিয়েছে তারা চলে গেছে।'

কেন্দ্রের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় নৌকার প্রার্থীর প্রতিনিধি দিলীপ বড়ুয়া। ভোট দেওয়ার পরও ভোটাররা কেন লাইনে দাঁড়িয়ে, জানতে চাইলে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যারা এসব কাজ করেছে তারা অন্যায় করেছে।'

কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার হারুন অর রশিদকে ভোটারদের জোর করে লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা এমন কিছু শুনিনি। আপনারা এমন কিছু দেখলে আমাদের জানাবেন।'

এ কেন্দ্রে সকাল ১০টা পর্যন্ত ১২ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানান তিনি। যদিও সকাল থেকে একাধিক কেন্দ্রে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভোটকেন্দ্রে ভোটার নেই।

বান্দরবান আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে সাড়ে ৯টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, এ কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি নেই বললে চলে যদিও কেন্দ্রের মোট ভোটার ৩ হাজার ৭৫৬ জন।

কেন্দ্রের ৪ নম্বর বুথের দায়িত্বরত সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার অজয় সেন ডেইলি স্টারকে জানান, দেড় ঘণ্টায় ৩৩৬ জন ভোট দিয়েছেন যা মোট ভোটারের ৮ দশমিক ৯ শতাংশ।

প্রিসাইডিং অফিসার মোহাম্মদ সলিম উল্লাহ জানান, তারাছা ইউনিয়নের ছাইঙ্গ্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫১ নম্বর কেন্দ্রে সকাল থেকে ১৪০ জন ভোট দিয়েছেন, যা এ কেন্দ্রের মোট ভোটের ১৮ শতাংশ।

সরেজমিনে এসব কেন্দ্রে ভোটারের লাইনে ভোটার দেখা যায়নি।

Comments