৫ সিটি নির্বাচন: গাজীপুর-সিলেটে মেয়র পদে আ. লীগের নতুন মুখ

আগামী ২৫ মে গাজীপুর, ১২ জুন খুলনা ও বরিশাল এবং ২১ জুন রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে।
আজমত উল্লাহ খান এবং আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

খুলনা ও রাজশাহীর বর্তমান মেয়ররা আগামী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে পারেন। এ ছাড়া, গাজীপুরে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান এবং সিলেটে যুক্তরাজ্যফেরত আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বরিশালের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ সম্প্রতি জনমানুষের কাছে দোয়া চেয়েছেন। তবে আওয়ামী লীগ এবার তাকে মনোনয়ন নাও দিতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

সাদিক আবদুল্লাহর চাচা আবুল খায়ের আবদুল্লাহ এবার মেয়র পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন এবং তার দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করছেন দলের অভ্যন্তরীণরা।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন গতকাল রোববার দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে সংসদ ভবন কার্যালয়ে দেখা করেছেন এবং মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য তার সবুজ সংকেত পেয়েছেন।

তিনি বলেন, 'আমি আগামীকাল (আজ) মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করব।'

খুলনার মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকও পুনরায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল সম্প্রতি আব্দুল খালেককে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন। রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে তার মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন।

গতকাল পর্যন্ত খুলনা থেকে আর কেউ মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেননি।

সিলেটে যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা করে মেয়র পদে প্রার্থী হিসেবে 'দোয়া' চাইছেন।

তিনি গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন। সাক্ষাৎ শেষে তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড আমাকে সিলেটের জন্য কাজ করতে বলেছে।'

আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনে মেয়র হিসেবে কাকে বেছে নেওয়া হবে তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে দলটি।

গাজীপুরের বরখাস্তকৃত মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে রয়েছেন।

তবে গতকাল আওয়ামী লীগ মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করার পর তাদের কেউই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেননি।

২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনে গাজীপুরের মেয়র হন আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও ক্লিপে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করতে দেখা যায় এবং তিনি সেখানে শহীদের সংখ্যা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন। এ ঘটনার পর ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর তাকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

দল থেকে বহিষ্কারের ৭ দিন পর তাকে মেয়র পদ থেকেও বরখাস্ত করে সরকার। ক্ষমতাসীন দল গত ২১ জানুয়ারি তাকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৭ জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।                                     

গত ৩ এপ্রিল ৫ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

আগামী ২৫ মে গাজীপুর, ১২ জুন খুলনা ও বরিশাল এবং ২১ জুন রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে।

প্রথম দিনে মোট মোট ১৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তাদের মধ্যে সিলেটে ৫ জন এবং বরিশালে ৪ জন মেয়রপ্রার্থী রয়েছেন।

আওয়ামী লীগ সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিলে তা দলের জন্য গুরুতর সমস্যা হয়ে উঠতে পারে।

বিএনপি ২০০৮ সালের পর অনুষ্ঠিত বেশিরভাগ জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন বর্জন করায় ক্ষমতাসীন দল মনোনীত প্রার্থীরা আওয়ামী লীগের 'বিদ্রোহী' প্রার্থীদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন।

এবার বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না ধরে নিয়ে আওয়ামী লীগ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। দলটির অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব 'বিদ্রোহী'দের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।

জাতীয় নির্বাচনের আগে সিটি নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ তাদের জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক শক্তির পরিচয় দিতে চায়।

এ ছাড়া, ক্ষমতায় থেকেও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারে, তা দেখাতে চায়।

Comments