আওয়ামী লীগ আমার এজেন্টদের বের করে দিচ্ছে: হিরো আলম

এই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না জানি না। যেহেতু এজেন্টদের বের করে দিচ্ছে, এখন তারা জোর করে সিল মারবে কি না তাও জানি না
হিরো আলম
আজ সোমবার সকালে বনানী মডেল হাইস্কুল কেন্দ্রে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম | ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সমর্থকরা একতারার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম।

আজ সোমবার সকালে বনানী মডেল হাইস্কুল কেন্দ্রে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ অভিযোগ তোলেন।

আলম বলেন, 'বিভিন্ন জায়গায় আমার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হচ্ছে। যখনই বলছে একতারার লোক, হিরো আলমের লোক তখনই এজেন্টদের বের করে দিচ্ছে। এভাবে যদি এজেন্ট বের করে দিয়ে তাদের এজেন্ট দিয়ে একতরফা সিল মারার চিন্তা-ভাবনা করছে। তাছাড়া আমাদের এজেন্টদের কেন বের করে দেওয়া হবে?' 

'এই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না জানি না। যেহেতু এজেন্টদের বের করে দিচ্ছে, এখন তারা জোর করে সিল মারবে কি না তাও জানি না। তবে এখন পর্যন্ত আমরা সিল মারার ঘটনা শুনিনি। এজেন্টদের বের করে দিচ্ছে এবং আমার এজেন্টদের মারধরও করেছে। ৬ জনকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে।'

হিরো আলম
আজ সোমবার সকালে বনানী মডেল হাইস্কুল কেন্দ্রে যান স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। তার বাম পাশে নির্বাচনী এজেন্ট মো. ইলিয়াস ও ডানে মো. রবিন | ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

এ সময় হিরো আলমের নির্বাচনী এজেন্ট মো. ইলিয়াস গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, বালুঘাট কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের সভাপতি জহির সাহেব ঢুকতেই দেননি, ভাসানটেক সরকারি বিদ্যালয় কেন্দ্রে রতন চেয়ারম্যান, সাইদুল সাহেব বের করে দিয়েছে। গ্রিন হেভেন স্কুলে আমাদের এজেন্ট তুষারকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কেন্দ্রে ৩ জনকে থাকতে দিয়েছে, বাকিদের বের করে দেওয়া হয়েছে। গুলশান মডেল কেন্দ্রে প্রথমে বের করে দেওয়া হয়েছিল। তাদের আবারো কেন্দ্রে রেখে আসার পরে মেরে বের করে দেওয়া হয়েছে, তাদের মোবাইল ফোন রেখে দেওয়া হয়েছে, একজন নারী এজেন্টের গায়ে হাত দেওয়া হয়েছে। লতিফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধ ভাসানটেক স্কুল থেকে বের করে দিয়েছে। বনানী মডেল থেকে বের করে দিয়েছে। ডিওএইচএস স্কলাশটিকা থেকে বের করে দিয়েছে। মাটিকাটা আইডিয়াল থেকে বের করে দিয়েছে। লামিয়াতে ঢুকতেই দেয়নি। পাশের জামিয়া কেন্দ্রের সামনে আমাদের এজেন্ট দাঁড়িয়ে আছে, ঢুকতেই পারছে না।

এক প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেন, 'রিটার্নিং অফিসারকে সকালে ফোন করেছিলাম, বনানী থানাতেও ফোন করেছিলাম যে, আমার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি আপনারা দেখেন। তারা আশ্বাস দিয়েছেন দেখবেন। গণমাধ্যমে সংবাদ আসে "হিরো আলমের এজেন্ট পাওয়া যায়নি", "হিরো আলম এজেন্ট দেয়নি"; আমরা এজেন্ট ঠিকই দেই কিন্তু এজেন্টদের বের করে দিচ্ছে।'

হিরো আলমের নির্বাচনী এজেন্ট মো. রবিন বলেন, 'সকাল ৬টায় এসেছি আমরা। আমাদের বলা হয়েছে পুরুষ এজেন্ট দরকার নেই, নারী এজেন্ট থাকবে। পারে নারীদেরও বের করে দেওয়া হয়েছে।'

আলম বলেন, 'নির্বাচনের পরিস্থিতি খুব একটা ভালো না দেখছি। যেহেতু আমার এজেন্টদের বের করে দিচ্ছে, এই ভোট কতটা সুষ্ঠু হবে তাও জানি না।'

এক প্রশ্নের জবাবে এই স্বতন্ত্র প্রার্থী বলেন, 'আমাদের এখানে আওয়ামী লীগের লোকজন বের করে দিচ্ছে। সরাসরি বলে দিলাম। আওয়ামী লীগ ছাড়া কে বের করে দিতে পারে?'

গত ১৫ মে চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠানের (ফারুক) মৃত্যু হলে আসনটি শূন্য হয়। সংসদের কোনো আসন শূন্য হলে ৯০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচন করতে হয়। এই হিসেবে আসনটিতে ১২ আগস্টের মধ্যে উপনির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা ছিল।

একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী, সেই সময় ধরে পরবর্তী ৫ বছর মেয়াদ ধরলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অর্থাৎ আসনটিতে যিনি নির্বাচিত হবেন তিনি প্রায় ৫ মাসের জন্য সংসদ সদস্য হবেন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৫, ১৮, ১৯ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ড এবং ঢাকা সেনানিবাস এলাকা নিয়ে গঠিত এই আসনে ভোটকেন্দ্র আছে ১২৫টি এবং ভোটার ৩ লাখ ২৫ হাজার ২০৫ জন।

১২৪টি ভোটকেন্দ্রের ৬০৫টি ভোটকক্ষে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভোটগ্রহণ চলবে।

এ আসনে উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আছেন ৮ জন। তাদের মধ্যে দলীয় প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের মোহম্মদ আলী আরাফাত, জাতীয় পার্টির সিকদার আনিসুর রহমান, জাকের পার্টির কাজী মো. রাশিদুল হাসান, তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. রেজাউল ইসলাম স্বপন ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের মো. আকবর হোসেন।

Comments