নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে, আবার ভোটের আবেদন করব: হিরো আলম

নির্বাচন করবেন না হিরো আলম
হিরো আলম। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের ফল বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে আগামীকাল রোববার নির্বাচন কমিশনে (ইসি) লিখিত আবেদন করবেন ওই নির্বাচনের পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম।

শনিবার সন্ধ্যায় হিরো আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। অনেক কারচুপি হয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থীর লোকজন ভোটকেন্দ্রের বাইরে ১ হাজার টাকায় এক একটি ভোট কিনেছেন। একজন নারী ভোটারকে দিয়ে ৪০টি ভোট দেওয়ানো হয়েছে। ১২-১৩ বছরের ছেলে-মেয়েদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকিয়ে ভোট দেওয়ানো হয়েছে। যারা ভোট দিয়েছেন তাদের অনেকের নাম-ঠিকানা ভোটার তালিকায় ছিল না। এসবের ভিডিও ফুটেজ আমার কাছে আছে। আমি আগামীকাল নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ভোটের ফল বাতিল চাইব এবং পুনরায় নির্বাচন আয়োজনের জন্য আবেদন করব।'

আপনি আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে আর নির্বাচন করবেন না এই কথা বলার পরও পুনর্নির্বাচন চাইছেন কেন, জবাবে হিরো আলম বলেন, 'ভোট সুষ্ঠু হয়নি। আমি তো আর এমনি অভিযোগ করছি না। নির্বাচন কমিশন তদন্ত করে দেখুক। সেই তদন্ত রিপোর্ট জনগণকে দেখাক যে তারা কতটা সুষ্ঠু ভোট করেছে।'

'আমি তো এই সরকারের অধীনে আর নির্বাচন করব না। সুষ্ঠু নির্বাচন জনগণের দাবি। আমি ছাড়াও তো আরও প্রার্থীরা আছেন। তারা নির্বাচনে আবার অংশ নেবেন। আমি নেব না', বলেন হিরো আলম।

ভোটকেন্দ্রে নৌকার ব্যাজধারীদের হামলার ব্যাপারে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, 'ডিএমপি কমিশনার আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তুলছেন। আমি নাকি এক কেন্দ্রে দুবার করে গেছি। এক কেন্দ্রে আমি একবারই গেছি। তিনি অভিযোগ করেছেন যে আমি অনুমতি নিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাইনি বলে আমাকে নিরাপত্তা দিতে পারেননি। আমি কেন কেন্দ্রে ঘোরার জন্য আবার ডিএমপির অনুমতি নেব? সেখানে তো আগে থেকেই পুলিশ মোতায়েন করা আছে। তাহলে আমার কেন অনুমতি নিতে হবে?'

ভোট কারচুপির অভিযোগের ব্যাপারে হিরো আলম বলেন, 'আমি সকাল থেকে অনেক কেন্দ্রে ঘুরেছি। দুপুর ১টা পর্যন্ত অনেক বুথে ৭-৮টির বেশি ভোট পড়তে দেখিনি। তাহলে এত ভোট পড়ল কি করে? কীভাবে আরাফাত সাহেব ২৭-২৮ হাজার ভোট পেলেন? কারচুপি যে হয়েছে এটা দেখেই বোঝা যায়।'

ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের ভোট চলাকালে বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে যান হিরো আলম। স্কুলের মাঠে নৌকা প্রতীকের কর্মী ও সমর্থকরা হিরো আলমকে কটু কথা বলেন ও ধাক্কাধাক্কি করেন। ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা সেখান থেকে হিরো আলমকে স্কুল ফটকের বাইরে আনার পর নৌকার ব্যাজধারীরা তাকে রাস্তায় ফেলে পেটান।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেদিন তার নিরাপত্তা দেয়নি অভিযোগ করে হিরো আলম বলেন, ভোটার মাঠে বিজিবি মোতায়েন করেছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু বিজিবি সদস্যরা গাড়ি থেকেই নামেননি। এমন কি আমাকে মারার সময়ও তারা গাড়ি থেকে নামেনি।

'আমি আমার আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছি। আজ রাতেই সব কাগজ তৈরি করে আগামীকাল নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দেব। সেই সঙ্গে ফলাফল বাতিল করে যেন পুনরায় ভোট দেওয়া হয় সেই আবেদন করব, যোগ করেন তিনি।

গত ১৭ জুলাই এই উপনির্বাচনে মোট ১২৪টি কেন্দ্রে ১১ দশমিক ৫১ শতাংশ ভোট পড়ে। ২৮ হাজার ৮১৬ ভোট পেয়ে জয়ী হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিরো আলম পান ৫ হাজার ৬০৯ ভোট।

Comments

The Daily Star  | English
August 5 declared as July Mass Uprising Day

Govt declares 3 new days for nat’l observance

The interim government yesterday declared August 5 as “July Mass Uprising Day” to commemorate the student-led protests that toppled the Sheikh Hasina regime that day last year.

3h ago