খুঁড়িয়ে শুরু নতুন ৩ দলের নির্বাচন যাত্রা

নির্বাচন কমিশন এই তিন দলের ১০ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে।
জাতীয় নির্বাচন ২০২৪
প্রতীকী ছবি

সদ্য নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট (বিএনএম) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) ঢাকা মহানগরীর ২০ আসনের মধ্যে ১৮টিতে মাত্র ২৯ জন প্রার্থী দিয়েছে।

আসনগুলোয় তৃণমূল বিএনপি ও বিএনএমের ১৬ জন প্রার্থী রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১১ জন জাতীয় পার্টি অথবা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য এবং বাকিরা রাজনীতিতে নতুন ও ভোটারদের কাছে খুব কম পরিচিত।

বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) একটি ইসলামী দল এবং এর ১৩ জন প্রার্থীর বেশিরভাগই সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারীর শিষ্য।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) এই তিন দলের ১০ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে। তাদের কেউ কেউ এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করেছেন।

জানতে চাইলে বিএনএম প্রধান মুহাম্মদ শাহজাহান ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কতজনকে তাদের দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তা জানাতে পারেননি। ঢাকার চার প্রার্থীর রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কেও তিনি জানেন না।

প্রাথমিকভাবে ঢাকার ২০টি আসনে ২৬ জনের নাম ঘোষণা করলেও তৃণমূল বিএনপির ১৪ জন প্রার্থী ইসিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

তিনটি দলই এর আগে ঘোষণা করেছিল যে, তারা সারা দেশের ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবে।

দ্য ডেইলি স্টার দৈবচয়ন পদ্ধতিতে এই তিন দলের ঢাকার ১০ প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তাদের কেউই এর আগে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেননি। কেবল ঢাকা-১৯ আসন থেকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া সাইফুল ইসলাম অতীতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিয়ে সাভারের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হন। তিনি জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা।

বিএনএম থেকে মনোনয়ন জমা দেওয়া সাইফুলের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। কারণ আয়কর ও গ্যাস বিল সময়মতো পরিশোধের প্রমাণপত্র তিনি জমা দেননি।

বিএনএম ঢাকায় কেবল পাঁচজন প্রার্থী দিতে পেরেছে। তবে তাদের মধ্যে ইসিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দুইজন। এর মধ্যে ঢাকা-১১ আসনের হোসেন আহমেদ আশিক জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা।

এ ছাড়া ঢাকা-৪ আসনে তৃণমূল বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী রফিকুল ইসলাম জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি এখনো জাতীয় পার্টির কার্যনির্বাহী কমিটিতে আছেন। যোগাযোগ করা হলে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি এখন আর দলের (জাপা) সদস্য না। কারণ দল নতুন নেতাদের এগিয়ে আসতে দেয় না।'

যে ১০ জন প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়, তাদের মধ্যে পাঁচজন ছাত্রলীগের সদস্য, একজন জাসদ ছাত্রলীগের সদস্য এবং বাকিরা এর আগে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।

ঢাকা-১ আসনের বিএসপি প্রার্থী শামসুজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী তাকে নির্দেশ দেওয়ায় তিনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। আশিক্কীনে আউলিয়া ঐক্য পরিষদের সহ-সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান ১৭ বছর ধরে মাইজভান্ডার দরবার শরীফের ভক্ত।

সাইফুদ্দীন মাইজভান্ডারী ঢাকা-১৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ঢাকায় দলটির ১৩ জন প্রার্থী রয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকা-১১ আসনের ফারাহনাজ হক চৌধুরী কৃষক শ্রমিক পার্টির (কেএসপি) চেয়ারপারসন। তিনি বিএসপি থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। কারণ তার দল এখনো ইসির নিবন্ধন পায়নি।

ঢাকা-১৮ আসনে তৃণমূল বিএনপি প্রাথমিকভাবে দুজন প্রার্থী দিয়েছে। তাদের দুজনের প্রার্থিতাই বাতিল হয়েছে।

ঢাকা-১৪ আসনের তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী নাজমুল ইসলাম স্বাক্ষরহীন হলফনামা জমা দেওয়ায় প্রার্থিতা হারিয়েছেন। আশির দশকের শেষের দিকে তিনি ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

নাজমুল সম্প্রতি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি দলের (আওয়ামী লীগ) প্রতি অনুগত ছিলাম। তৃণমূল বিএনপিতে আমার অনেক বন্ধু আছে যারা আমাকে বলেছিল যে, আমি যদি এই দলে যোগ দিই, তবে একদিকে সরকারকে সহযোগিতা করা হবে, অন্যদিকে আমার নির্বাচিত হওয়ারও একটা সুযোগ থাকবে, যদি সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে কোনো সমঝোতা হয়।'

ঢাকা-১৯ আসনের তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মাহবুবুল হাসানও ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি আওয়ামী লীগকে ভালোবাসি। কিন্তু সেখানে (আওয়ামী লীগে) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা কঠিন এবং মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যাও অনেক বেশি।'

Comments