আশ্রয়ণের ঘরে ‘রডের ব্যবহার নেই বললেই চলে’, গুঁড়িয়ে দিলো প্রশাসন

মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণে কম রড ব্যবহার করে বিম নির্মাণের অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ৫টি অর্ধসমাপ্ত ঘর পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দিয়েছে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রশাসন।
গত শুক্রবার রাতে ৫টি ঘর গুঁড়িয়ে দেয় দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রশাসন। ছবি: সংগৃহীত

মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণে কম রড ব্যবহার করে বিম নির্মাণের অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ৫টি অর্ধসমাপ্ত ঘর পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দিয়েছে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রশাসন।

গত শুক্রবার রাতে এই অনিয়মের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান সহকারী কমিশনার (ভূমি)। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর জেলা প্রশাসকের অনুমতিক্রমে রাতেই ঘরগুলো ভেঙে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার আজমপুর গ্রামে সুরমা নদীর পাড়ে গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ণ-৩ প্রকল্পের আওতায় ৫৯টি ঘর নির্মাণের কাজ চলছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আম্বিয়া আহমদের তত্ত্বাবধানে ঘর নির্মাণের ঠিকাদার হিসেবে শ্রমিকসহ মালামাল সরবরাহ করছেন উপজেলা শ্রমিক লীগের একাংশের সভাপতি তাজির আলী।

ইউএনও ফারজানা প্রিয়াঙ্কা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নির্মাণকাজের সময় গ্রিড বিমে কম রড এবং ক্ষেত্র বিশেষে রড ব্যবহার করা হচ্ছে না, এমন অভিযোগ পেয়ে রাতেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'নিয়মানুযায়ী ঠিকাদারকে ৫ কার্যদিবস সময় দেওয়া হয়েছে ঘরগুলো সঠিক উপায়ে পুনর্নির্মাণ শুরু করার জন্য। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'

এদিকে, গৃহহীনদের বাড়ি নির্মাণে অনিয়ম ও রাতে ভেঙে ফেলার পর বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।

আজমপুর গ্রামের বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কানন আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রকল্প এলাকার নদীর অপর পাড়েই উপজেলা সদর। সদরের এত কাছে হওয়ার পরও যেভাবে এখানে অনিয়ম হয়েছে, তাতে দুর্বল মনিটরিংয়ের বিষয়টি প্রমাণিত। এজন্য শুধু শ্রমিকরা নয়, বরং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও ঠিকাদার দায়ী।'

তিনি বলেন, 'শুধু যে কয়টি ঘর ভাঙা হয়েছে ‍সেগুলো নয়, বরং ইতোমধ্যে প্রায় নির্মিত সবগুলো ঘরের কাজ যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। নয়তো ভবিষ্যতে ঘরগুলো ভেঙে পড়তে পারে।'

যদিও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আম্বিয়া আহমেদ প্রকল্পের কাজ তত্ত্বাবধানে কোনো ঘাটতি ছিল না বলে দাবি করেন।

ঠিকাদার তাজির আলীর দাবি, তাকে বিপদে ফেলতে শ্রমিকদের ব্যবহার করে কাজে অনিয়ম করিয়েছে প্রতিপক্ষ।

ইউএনও ফারজানা প্রিয়াঙ্কা বলেন, 'সঠিক তত্ত্বাবধান ছিল বলেই অনিয়ম করার সময়ই বিষয়টি ধরা পড়েছে এবং আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পেরেছি। বাকি যে সব ঘর ইতোমধ্যে অনেকটা নির্মিত হয়েছে, সেগুলোর কাজও পর্যবেক্ষণ করা হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

1h ago