‘বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিতে না পেরে’ পদ্মাসেতু থেকে ঝাঁপ

চলন্ত প্রাইভেটকারের দরজা খুলে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মাসেতু থেকে ঝাঁপ দিয়েছেন নুরুজ্জামান (৩৮) নামের এক গার্মেন্টস শ্রমিক।
পদ্মা সেতু
ফাইল ছবি

চলন্ত প্রাইভেটকারের দরজা খুলে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মাসেতু থেকে ঝাঁপ দিয়েছেন নুরুজ্জামান (৩৮) নামের এক গার্মেন্টস শ্রমিক।

পুলিশ ও নুরুজ্জামানের সঙ্গে থাকা ব্যক্তির দেওয়া তথ্যমতে, জাতীয় শোক দিবসে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে ফুল দিতে না পেরে ঝাঁপ দিয়েছেন তিনি।

আজ সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত পদ্মা নদীতে খোঁজাখুঁজি করে তার সন্ধান মেলেনি।

মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. আরিফ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

নুরুজ্জামানের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানার কাঁচপুর এলাকায়। ঢাকার ডেমরা এলাকার একটি গার্মেন্টস কোম্পানিতে আয়রনম্যান পদে চাকরি করেন তিনি।

এসআই দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গতকাল রোববার রাতে টুঙ্গিপাড়ায় যাওয়ার জন্য একটি প্রাইভেটকার ভাড়া করেছিলেন নুরুজ্জামান। আজ ভোরে ওমর ফারুক নামের একজনকে নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় যান তিনি। কিন্তু ফুল দেওয়ার জন্য অনুমতি কার্ড না থাকায় সেখান থেকে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর পদ্মাসেতু দিয়ে ফেরার পথে চলন্ত গাড়ির দরজা খুলে ঝাঁপ দেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, 'ঝাঁপ দেওয়ার আগে তিনি মোবাইলে ভিডিও করেছিলেন। সেখানে তিনি বলছিলেন, শেখ মুজিবুর রহমান সবার। আমরা কেন ফুল দিতে পারব না? খবর পেয়ে নৌ-পুলিশ পদ্মানদীতে খোঁজাখুঁজি করলেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।'

গাড়িতে নুরুজ্জামানের পাশে থাকা ওমর ফারুক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সকাল ৭টায় নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকা থেকে গোপালগঞ্জের উদ্দেশে রওনা করে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছাই সকাল সাড়ে ১০টায়। এরপর সেখানে ২ ঘণ্টার মতো অবস্থান করে চেষ্টা করি ফুল দিতে। কিন্তু আমাদের কাছে কোনো কার্ড না থাকায় আমরা ফুল দিতে পারিনি। এরপর সেখান থেকে বাসার উদ্দেশে রওনা করি।'

'সেতুতে অবস্থানকালে গাড়িটি কম গতিতে চলছিল। কারণ সেখানে সেতু কর্তৃপক্ষ ডিভাইডার দিয়ে রেখেছিল। তখন নুরুজ্জামান গাড়ি থামাতে বললেও আমরা তার কথা শুনিনি। এরপর তিনি কিছু না বলেই দরজা খুলে সেতুতে ঝাঁপ দেন। এরপর ৯৯৯ এ কল দিয়ে জানালে নৌ-পুলিশ এসে আমাদের সঙ্গে কথা বলেন', যোগ করেন তিনি।

ওমর ফারুক আরও বলেন, 'ঝাঁপ দেওয়ার আগে সেতুতে অবস্থানকালে নুরুজ্জামান মোবাইলে নিজের ভিডিও ধরাণ করে কথা বলছিলেন। তিনি শেখ মুজিবকে ভালোবাসেন, ফুল দিতে পারেননি তাই কষ্ট পেয়েছেন— এসব বলছিলেন।'

তিনি বলেন, 'আমার সঙ্গে নুরুজ্জামানের প্রায় ৪ বছরের সম্পর্ক। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নন। তবে তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে অনেক ভালোবাসতেন। কাঁচপুর এলাকায় তিনি ২ মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন।'

ওমর ফারুক জানান, তারা ১৩ হাজার টাকায় প্রাইভেটকারটি ভাড়া করেছিলেন।  তারপর টুঙ্গিপাড়া যাওয়ার পথে ঢাকার শাহবাগ থেকে ফুলের তোড়া কিনেছিলেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

Political parties want road map to polls

Leaders of major political parties yesterday asked Chief Adviser Prof Muhammad Yunus for a road map to reforms and the next general election.

6h ago