আবারও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ চা-শ্রমিকদের

মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে হবিগঞ্জের মাধবপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছেন চা-শ্রমিকরা।
ঢাকা-সিলেট
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছেন চা-শ্রমিকরা। ছবি: স্টার

মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে হবিগঞ্জের মাধবপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছেন চা-শ্রমিকরা।

আজ রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তেলিয়াপাড়া, সুরমা, নোয়াপাড়াসহ ৫টি বাগানের চা-শ্রমিকরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বর এলাকায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন এবং মহাসড়ক অবরোধ করেন।

এতে মহাসড়কে উভয় পাশে কয়েকশ যানবাহন আটকা পড়ে।

লস্করপুর ভ্যালির সাধারণ সম্পাদক অনিরুদ্ধ বাড়াইক বলেন, 'আমাদের লস্করপুর ভ্যালির ২৩টি চা-বাগানের বাগান পঞ্চায়েত নিয়ে আমরা বসেছিলাম। তারা সবাই ১৪৫ টাকা মজুরিতে ধর্মঘট প্রত্যাহারে অস্বীকৃতি জানান।'

মনু ধলাই ভ্যালির সভাপতি ধনা বাউরি বলেন, 'আমাদের শ্রমিকেরা ১৪৫ টাকা মজুরি মানছেন না। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে বলে দিতে চাই, যদি বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে থাকে তাহলে আমরাও স্বাধীন হয়ে বাঁচতে চাই। আমাদের কেন মানসিকভাবে নির্যাতন করছেন?'

তিনি আরও বলেন, 'করোনাকালে যখন সবকিছু বন্ধ ছিল, তখনো আমাদের শ্রমিকরা করোনার ভয় কাটিয়ে কাজ করে গেছেন। আমরা এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের ২৩টি চা বাগানে কাজ বন্ধ থাকবে। দাবি আদায়ে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকের আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা আমরা প্রত্যাহার করলাম।'

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা বলেন, সারাদেশে ধর্মঘট চলবে।

বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) নৃপেন পাল বলেন, '৩০০ টাকা দৈনিক মজুরির দাবিতে চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে ৯ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত ২ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন শ্রমিকরা। এই ৪ দিন শ্রমিকরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি করেন। এতে তাদের দাবি আদায় না হওয়ায় ১৩ আগস্ট থেকে পূর্ণদিবস এ কর্মবিরতি পালন করেন শ্রমিকরা। এ দিন চা-শ্রমিকরা চান্দপুর এলাকায় পুরাতন ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে সেখান থেকে হাজারো চা-শ্রমিক পায়ে হেঁটে চুনারুঘাট পৌর এলাকায় প্রধান সড়কে অবস্থান নেন এবং সেখানে সড়ক অবরোধ করে পথসভা করেন।'

তিনি বলেন, 'সমস্যা সমাধানে ১৬ আগস্ট শ্রীমঙ্গলের লেবার হাউজে সকাল ১১টায় শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেন। আমরা তার কাছে আমাদের বিভিন্ন সমস্যা ও দাবি তুলে ধরি। তিনি গুরুত্ব সহকারে আমাদের কথাগুলো শোনেন এবং আমাদের আস্বস্থ করেন। তখন শোকের মাস বিবেচনা করে এবং সরকারের প্রতিনিধি দল যেহেতু আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন তাই ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ ও রাজপথের আন্দোলন স্থগিত করি।'

নৃপেন পাল আরও বলেন, 'গত বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকায় শ্রম অধিদপ্তরে চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও মালিক সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেন শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন। কিন্তু তখনও আমাদের মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় গত বৃহস্পতিবার মাধবপুরের জগদীসপুরে মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা।'

Comments