ফেসবুক থেকে: ‘২ বেলা ভাত আরেক বেলা উন্নয়ন খাই’

স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

'আমরা ২ বেলা ভাত খাই, আরেক বেলা উন্নয়ন খাই। এভাবেই চলছে জীবন।' দ্য ডেইলি স্টারের ফেসবুক পেজে শেয়ার করা নিউজে এই মন্তব্য করেছেন সাইদুর রহমান।

'জীবন এখন যেমন: কম কিনছেন কম খাচ্ছেন' শিরোনামে গত মঙ্গলবার দ্য ডেইলি স্টারে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেই সংবাদ ফেসবুকে শেয়ার করলে প্রায় ৯৫ হাজার রিয়েকশন, ৯ হাজারের বেশি শেয়ার এবং ২ হাজারের বেশি পাঠক মন্তব্য করেছেন।

হাজার দুয়েক মন্তব্য থেকে কয়েকটি তুলো ধরা হলো:

সৈয়দ নাজিম উদ্দিন লিখেছেন, 'সবাই যে কষ্টে আছেন, তা নয়। ক্ষমতা ও ক্ষমতার আশেপাশে যারা আছেন, তারা ভালো আছেন। তারা ভালো থাকুক। কারণ তারা যত বেশি ভালো থাকবে, তত তাড়াতাড়ি দেশটা সিঙ্গাপুর-কানাডা হবে।'

রাজীব আহমেদের মন্তব্য, 'দেশের নিম্ন-মধ্যবিত্তরা অনেক কষ্টে আছে সত্যি। কিন্তু, সরকার সেই সত্য কথাটা স্বীকার করতে চায় না।'

আবদুল্লাহ আল মামুনের ভাষ্য, 'নির্মম বাস্তবতার সম্মুখীন আমরা মধ্যবিত্তরা।'

হৃদয় বেপারী লিখেছেন, 'দেশে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। তাই আমরা ২৫ কেজি চালের জায়গায় ১৫-২০ কেজি দিয়ে চালানোর চেষ্টা করছি।'

রিপন সরকারের মন্তব্য, 'আমরা মধ্যবিত্ত না, আমরা এখন নিম্ন-মধ্যবিত্ত। আর তাই তো আমাদের এই অবস্থা। গরিব আরও গরিব হচ্ছে, ধনী আরও উচ্চ পর্যায়ের ধনী হচ্ছে।'

জিয়াউর রহমান লিখেছেন, 'আগস্টে আমার মেয়ের জন্য কোনো বাড়তি খাবার কিনতে পারিনি।'

মনিকা বিশ্বাস মন্তব্য করেছেন, 'সরকার দেশের মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় জিনিসের দাম বাড়িয়ে দেবে, যাতে দেশের মানুষ গরিব থেকে আরও গরিব হয়। এতে বিদেশি ব্যাংক থেকে খুব সহজেই লোন পাওয়া যাবে এবং দেশে উৎপন্ন দ্রব্য যা মূল্যবৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষের ভোগের বাইরে চলে যাবে ও সেই দ্রব্য বিদেশে রপ্তানি করে মোটা টাকা ইনকামও হবে। যাতে সাপও মরল আর লাঠিও ভাঙল না।'

মিতুল চৌধুরী লিখেছেন, 'সবার জন্য চাল, ডাল ও তেল কেনার ব্যবস্থা করা হোক।'

মোহাম্মদ হোসাইনের ভাষ্য, 'সরকারের নীতি-নির্ধারকের কেউ কেউ মনে করে দেশে গরিব কেউ নেই। তাদের মত সবাই টাকা উড়াই। যে সংসার চালায় সে জানে কত কষ্ট।'

আবদুল হান্নানের মন্তব্য, 'আমরা যারা সমাজে সাধারণ মানুষ বাস করি, তারা তো অসহায়। না পারি সাহায্য চাইতে, না পারি ভালোভাবে চলতে। আমাদের তো কোনো কোটা নেই। দিন যত যাচ্ছে, খরচ ততই বাড়ছে।'

আতিকুর রহমান বকুল লিখেছেন, 'নিদারুণ ও নীরব বাকরুদ্ধ অবস্থায় পরিবার-পরিজন নিয়ে আজ মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্ত মানুষগুলো। আকাশের উপরে যিনি আছেন, উনি ছাড়া যেন দেখার কেউ নেই।'

সানজিদা রহমানের ভাষ্য, 'এমন ঘটনা এখন বলতে গেলে প্রতিটি মধ্যবিত্ত ফ্যামিলিরই।'

এবি মজুমদার রনির মন্তব্য, 'চরম এক ভোগান্তিতে পড়েছি। সত্যিই কবে যে রেহাই পাব! সবারই তো পরিবার-পরিজন আছে। এভাবে আর কত কাল চলবে! সবচেয়ে বেশি বিপাকে আছে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তরা। এখনও বাংলাদেশে এই ২ ধরনের পরিবারই বেশি এরা কোথায় যাবে! সবাই তো আর ভাল বেতন পায় না বা ব্যবসা করেও যে সফল এমনও না। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো এমন হলে সবাই চলবে কী করে…'

নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে আমিনুল হক লিখেছেন, 'আমার জীবনে প্রথম ওএমএস-এর চাল কিনতে গতকাল ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। ৩ কেজি আটা ও ৫ কেজি মোটা চাল ২১০ টাকা দিয়ে কিনলাম। দেখলাম দিশেহারা খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। আল্লাহ আমাদের ধৈর্য্য ধরার তওফিক দাও।'

জুয়েল রানা লিখেছেন, 'ক্রেতার কষ্টে কী হবে! নেতারা তো সুখে আছে।'

কাজী ইফতেখায়ের আলিফের মন্তব্য, 'কী বলবো দুঃখের কথা। না পারি কারো কাছে বলতে, না পারি সইতে। আমাদের মতো গরিব মানুষের অবস্থা এখন বেঁচে থেকেও জিন্দা লাশ।'

মাহবুব আহসান লিখেছেন, 'দেশের সাধারণ জনগণ কষ্ট আছে সত্যি, কিন্তু সরকার সেই সত্য শব্দটা স্বীকার করতে চায় না। কিন্তু দেখেন যারা সরকারি আমলা এবং সরকারের লোক তারা কিন্তু দিব্বি ভালো আছেন। সরকারি বেতনের সঙ্গে সঙ্গে তাদের ঘুষ ও দুর্নীতির বাণিজ্য আছে বলেই কোনো শব্দই উচ্চারণ করছে না।'

মাহমুদুল হাসানের মতে, 'মিডল ক্লাস নামে যে বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতিটি বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে আছে, তা বড়জোর বছর তিনেক টিকবে।'

প্রিন্স সিকে লিখেছেন, 'কী আর করার! এই দেশের সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী, সরকার আমলাদের কাছে এমনভাবে সাধারণ জনগণ আমরা জিম্মি, এখন শুধু বলি ছাইড়া দে মা কাইন্দা বাঁচি। ভাল-মন্দ খাবার আশা ছেড়ে দিয়ে দুটো ডাল ভাত খেয়ে যদি বেঁচে থাকতে পারি এটাই আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।' 

মিরাজ হোসাইনের মন্তব্য, 'এটা এমন এক দেশ, যেই দেশে মানুষের কথা ভাবার কেউ নাই! যারাই ক্ষমতায় এসেছে, তারাই দেশটাকে লুটে পুটে খেয়েছে, দেশের মানুষকে চুষে খেয়েছে, মানুষের কথা তারা ভাবে নাই, দেশের কথা ভাবে নাই! আজ ২০২২ এ এসে দেশ যখন উন্নয়নের রোড মডেল, তখন মানুষকে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে, এই উন্নয়ন দিয়ে কী করবো আমরা?'

সৈয়দ মুস্তফা হাফিজ লিখেছেন, 'পুঁজি ভেঙে খাচ্ছি, জানিনা এভাবে আর কদ্দিন চলতে পারবো।'

মিতালি মিতুর মন্তব্য, 'এত কিছু বুঝার পরেও দিন দিন সব কিছুর দাম আরও বাড়িয়ে দেন। এই দেশ গরিব আর মধ্যবিত্তদের না। তারা মরলে কী, বাঁচলেই বা কী? স্বার্থ লোভীদের অধিক মুনাফা হচ্ছে সেটাই যথেষ্ট।'

মুস্তাফিজ রহমান লিখেছেন, 'আগে আমরা ছিলাম গরিব রাষ্ট্রের নাগরিক। এখন উন্নয়নশীল দেশের নাগরিক। যখন গরিব ছিলাম তখন চাল কিনা হতো ৫০ কেজি। একটু যখন একটু ধনী হলাম ২৫ কেজিতে নামলাম।'

খাদিজা আক্তার খুঁকির মন্তব্য, 'আমি ৫০ কেজি বস্তা কিনি সবসময়। কালকে ২৫ কেজি আনলাম।'

মেহরাব হোসেনের মতে, 'জনগণ না খেয়ে মরলে কারো কিছু আসে যায় না। বিপদে আছি। সব কিছুর দাম বাড়াচ্ছে, কিন্তু বেতন বাড়াচ্ছে না৷ আর বেতনই বা কেমনে বাড়াবে। কোম্পানিতে কাজেরও কোনো অর্ডার নেই।'

যোবায়েত ইসলাম শ্রাবণ লিখেছেন, 'নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় দেশে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের চলা দায়...। যা মুখে বলে বোঝানো সম্ভব নয়।'

আরিফুল ইসলামের মতে, 'জনগণের অবস্থা চাল বিক্রেতা বোঝে, জনগণের প্রতিনিধিরা বোঝে না।'

মোফাজ্জেল হোসেন জয়ের মন্তব্য, বাংলাদেশের কাঁচামালের দাম বাড়ার প্রধান কারণ হলো, কৃষি জমি নষ্ট করে আবাসন প্রকল্প তৈরি করা। শত শত বিঘা জমি নষ্ট হচ্ছে, ধান কোথায় ফলাবে।'

মো. রাহাত খান লিখেছেন, 'ভাত খাওয়া কমিয়ে কিছু উন্নয়ন খান।'

নাসিম চৌধুরীর মতে, 'সিঙ্গাপুরে থাকবেন, আর কম দামে চাল কিনবেন এটা হতে পারে না।'

দেলোয়ার ইমনের ভাষ্য, 'দেশরে সিঙ্গাপুর বানাইতে গিয়া মানুষ গুলারে সোমালিয়ান বানাই দিছে।'

মো. আমিনুর রহমানের মন্তব্য, 'তাতে কী, দেশের তো উন্নয়ন হচ্ছে। অর্ধেক ভাত আর অর্ধেক উন্নয়ন খেলেই তো শরীর মন সব ভালো থাকবে।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh alleges border abuse by BSF

Those pushed-in allege torture, abuses in India

A Bangladeshi woman has alleged that India’s Border Security Force (BSF) tied empty plastic bottles to her and her three daughters to keep them afloat, then pushed them into the Feni river along the Tripura border in the dark of night, in a chilling account of abuse at the border.

5h ago