এক হাতের জীবন

এক হাত দিয়ে রিকশা চালান হাবিবুর রহমান। ১৯৮৮ সাল থেকে। জীবনযুদ্ধের এক বড় যোদ্ধা তিনি।
হাবিবুর রহমান
হাবিবুর রহমান। ছবি: রবিউল কমল/স্টার

এক হাত দিয়ে রিকশা চালান হাবিবুর রহমান। ১৯৮৮ সাল থেকে। জীবনযুদ্ধের এক বড় যোদ্ধা তিনি।

বয়স ৪৫ বছর বা এর একটু বেশি। এই বয়সেও শুধু ডান হাত দিয়ে রিকশা চালিয়ে যাচ্ছেন। পরিবারের সবার মুখে খাবার তুলে দিচ্ছেন।

মাত্র ১২ বছর বয়সে রিকশা থেকে পড়ে গিয়ে বাম হাত হারান হাবিবুর। সেই থেকে শুরু হয় তার কঠিন জীবনযুদ্ধ। শুধু ডান হাত দিয়ে এ যুদ্ধকে মোকাবিলা করছেন তিনি। রাজধানীতে এক হাতে রিকশা চালিয়ে জীবিকার যোগান দিচ্ছেন।

হাবিবুর রহমানের গ্রামের বাড়ি জামালপুরে। পরিবার নিয়ে থাকেন আগারগাঁও। সংসারে ২ ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। ২ ছেলে পড়ছে মাদ্রাসা ও স্কুলে।

হাবিবুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '১২ বছর বয়সে আমার জীবনে এক মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে। রিকশা থেকে পড়ে যাই। তখন আমি রিকশার যাত্রী ছিলাম। ওই দুর্ঘটনায় আমার বাম হাত কেটে ফেলতে হয়। তারপর থেকেই আমার এক হাতের জীবন শুরু।'

তিনি আরও বলেন, '১৯৮৮ সাল থেকে এক হাত দিয়েই ঢাকায় রিকশা চালাচ্ছি। বর্তমানে সংসার চালাতে খুব কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সবকিছুর দাম অনেক বেশি। সংসারের খরচ বেড়েছে। আমার আয় বাড়েনি। মানুষের কাছে বাড়তি ভাড়া চাইলে দিতে চায় না। অনেক সময় খারাপ ব্যবহার করে। একদিন রিকশা না চালালে পরের দিনের খাবার নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হয়।'

'এক হাত দিয়ে রিকশা চালাতে আমার তেমন সমস্যা হয় না। কখনো কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। এক হাত দিয়ে রিকশা চালাই বলে প্রথম দিকে অনেক যাত্রী ভয় পেতেন। কিন্তু, আমাকে যারা চেনেন তারা ভয় পান না। যারা একবার আমার রিকশায় চড়েছে তারাও ভয় পান না,' যোগ করেন তিনি।

হাবিবুর রহমান বলেন, 'নিজে আয় করে নিজের সংসার চালাই—এটাই আমার সবচেয়ে গর্বের বিষয়। যতদিন বাঁচি এই সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই। এটা সত্যি, এক হাত দিয়ে রিকশা চালানো অনেক কষ্টের। কিন্তু, মানিয়ে নিতে হচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English

An economic corridor that quietly fuels growth

At the turn of the millennium, travelling by road between Sylhet and Dhaka felt akin to a trek across rugged terrain. One would have to awkwardly traverse bumps along narrow and winding paths for upwards of 10 hours to make the trip either way.

12h ago