গণগ্রেপ্তার ও বিরোধী নেতাকর্মীদের বাড়িতে অভিযানে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের উদ্বেগ

গণগ্রেপ্তার ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বাড়িতে পুলিশি অভিযান আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে সহিংসতা ও ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে পারে বলে উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।

আজ সোমবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, বাংলাদেশে যখন জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে, বিরোধী দলগুলো তখন প্রশাসনের দমন-পীড়ন এবং ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের হামলার শিকার হচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সরকারকে আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বিরোধী দলগুলোর রাজনৈতিক স্বাধীনতে ও শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করার অধিকার রক্ষার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে প্রায়ই সহিংসতা হয়। কিন্তু বিরোধীদের সভা-সমাবেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের হামলা বা নেতাকর্মীদের লাঞ্ছিত করার ঘটনার সঠিক তদন্ত ও বিচার করতে প্রশাসন ব্যর্থ।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দ. এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ড. মীনাক্ষী গাঙ্গুলী বলেছেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার বলেছেন যে বাংলাদেশের গণতন্ত্র পরিণত যার মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালনা এবং শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায়। কিন্তু আগের নির্বাচনগুলোতে সহিংসতা, বিরোধীদের ওপর আক্রমণ এবং ভোটারদের ভয় দেখানোর মতো ঘটনা ঘটেছে।'

'রাজনৈতিক হামলা ও গ্রেপ্তারের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো আসন্ন সংসদ নির্বাচনের জন্য একটি অশুভ সংকেত দিচ্ছে,' বলেন তিনি।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতিতে বলা হয়, চলতি বছর ২২ আগস্ট থেকে বিএনপি জ্বালানি ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করলে, পুলিশ-বিরোধী দল বিএনপির সমর্থক ও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৪ জন নিহত হয়েছে এবং শতাধিক আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

বিএনপি নেতাদের বরাত দিয়ে সংস্থাটি জানায়, দলটির সমর্থকদের বিরুদ্ধে অন্তত ২০ হাজার মামলা করা হয়েছে। অনেক মামলার আসামি অজ্ঞাতনামা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী এই মামলাগুলো বিরোধী দলের সদস্যদের বাড়িতে অভিযান চালাতে ব্যবহার করছে, যা স্পষ্ট রাজনৈতিক হয়রানি এবং ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।

প্রবাসীদের মধ্যে কেউ ভিন্নমত পোষণ করলে হুমকি দেওয়ার উপায় হিসাবে সরকার ওই প্রবাসীদের আত্মীয়দেরও লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার দমন-পীড়ন দেশের সীমানা ছাড়িয়ে আরও প্রসারিত করতে প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে।

ড. মীনাক্ষী গাঙ্গুলী বলেন, 'মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এবং সংসদ নির্বাচনের কারণে বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো বাড়তি নজরদারির মধ্যে আছে।'

'এ ধরনের দমন-পীড়ন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য হুমকিস্বরূপ বলে বাংলাদেশের কূটনীতিকদের উচিত প্রকাশ্যে এবং ব্যক্তিগতভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করা,' যোগ করেন তিনি।
 

Comments

The Daily Star  | English
election before ramadan 2026 in Bangladesh

Election possible a week before Ramadan next year: Yunus tells Tarique

He said it will be possible if preparations completed, sufficient progress made in reforms and judicial matters

3h ago