ক্যাশলেস সমাজ প্রতিষ্ঠায় ৩-৪ বছর লাগবে: জয়

প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, শতভাগ মানুষকে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সেবার আওতায় নিয়ে আসার অংশ হিসেবে আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে ক্যাশলেস সমাজ প্রতিষ্ঠা সরকারের লক্ষ্য।
সজীব ওয়াজেদ জয়। ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, শতভাগ মানুষকে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সেবার আওতায় নিয়ে আসার অংশ হিসেবে আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে ক্যাশলেস সমাজ প্রতিষ্ঠা সরকারের লক্ষ্য।

তিনি আজ রোববার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ইন্টার-অপারেবল ডিজিটাল ট্রানজেশন প্লাটফর্ম (আইডিটিপি) 'বিনিময়'-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য একটি ক্যাশলেস সমাজ প্রতিষ্ঠা।'

জয় বলেন, 'বর্তমানে প্রায় ৫-৬ কোটি গ্রামবাসীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। যদি আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবারও জয়লাভ করতে পারে, তবে বাংলাদেশের শতভাগ মানুষের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকবে এবং আমাদের সরকারের পরবর্তী মেয়াদে তারা ক্যাশলেস সমাজে বাস করবেন।'

সজীব বলেন, 'নেটওয়ার্ক সিস্টেম স্থাপিত হয়েছে, সরকারের সেবা ডিজিটালাইজড হয়েছে, প্রযুক্তি উন্নত হয়েছে, বাংলাদেশে বৃহৎ আইটি কোম্পানি গড়ে উঠেছে। এখন দেশেই ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন সেট ও কম্পিউটার মেমোরি চিপস উৎপন্ন হচ্ছে এবং এগুলো রপ্তানি শুরু হতে যাচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'এখন আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে- একটি ক্যাশলেস সমাজ প্রতিষ্ঠা। আমরা ইতোমধ্যেই এ ব্যাপারে কাজ শুরু করে দিয়েছি। কিন্তু এতে ৩ থেকে ৪ বছর সময় লাগবে।'

আজ সকালে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মেজবাউল হক এই প্লাটফর্মের বৈশিষ্ট্যগুলো বর্ণনা করে একটি উপস্থাপনা পরিবেশন করেন।

আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, 'বিনিময়' ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনের জন্য একটি যুগান্তকারী প্লাটফর্ম- যা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সরকারের একটি সময়োচিত ও সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপ।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরকার সকল ব্যাংক এমএফএস অপারেটর ও পিএসপি অ্যাকাউন্টকে ইন্টার-অপারেবল করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর ফলে ভোক্তা, ব্যবসায়ী, পিএসপি, ই-ওয়ালেটস, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সরকারি সংস্থা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লেনদেন সহজ হবে।

বিনিময় সব ধরনের আর্থিক লেনদেনকে ব্যয়-সাশ্রয়ী, সহজ ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে। এ ছাড়াও, এর মাধ্যমে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন প্রদান, রেমিট্যান্স পাঠানো, ট্যাক্স-ভ্যাট পরিশোধ, বিভিন্ন উপযোগী বিল পরিশোধ ও ই-কমার্স লেনদেন করা যাবে।

ওয়েব-ভিত্তিক প্লাটফর্ম বিনিময় ব্যাংকের বিভিন্ন অ্যাপস, মোবাইল আর্থিক সেবা ও পেমেন্ট সিস্টেম প্রোভাইডারের মধ্যে সমন্বয় সাধন করবে।

আইসিটি ডিভিশন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ইনোভেশন অ্যান্ড এন্টারপ্রেনারশিপ ডেভেলপমেন্ট অ্যাকাডেমি (আইডিইএ) প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে ভেলওয়ার লিমিটেড, মাইক্রোসফট বাংলাদেশ ও অরিয়ন ইনফর্মেটিকস লিমিটেড এই প্লাটফর্মটি তৈরিতে সহায়তা করেছে।

বিনিময় প্লাটফর্মের দায়িত্ব সমন্বয় করবে ভেলওয়ার লিমিটেড।

বাংলাদেশ ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার এক প্রজ্ঞাপনে ইন্টার-অপারেবল ডিজিটাল লেনদেন প্লাটফর্মের (আইডিপিটি) খরচ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে।

যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, বিকাশ থেকে রকেটে টাকা পাঠাতে প্রতি হাজারে খরচ হবে ৫ টাকা। আর এমএফএস সেবা (বিকাশ, রকেট ইত্যাদি) থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠাতে (প্রতি হাজারে) খরচ হবে ১০ টাকা। অপরদিকে, এমএফএস থেকে পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারের (পিএসপি) অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে খরচ হবে হাজারে ৫ টাকা।

এতে আরও জানানো হয়, সোমবার থেকে এই প্লাটফর্মে লেনদেন করা যাবে।

Comments