ধরলার প্রাণ যায়

লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি শুকিয়ে নালায় পরিণত হয়েছে। কোথাও রয়েছে হাঁটু পানি আবার কোথাও কোমর পানি। পানির অভাবে নৌকা চালাতে পারছেন না মাঝিরা। অন্যদিকে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় নদীর বুকে বিভিন্ন স্থানে চাষাবাদ করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
ধরলা নদী শুকিয়ে নালায় পরিণত হয়েছে। ছবি: এস দিলীপ রায়
ধরলা নদী শুকিয়ে নালায় পরিণত হয়েছে। ছবি: এস দিলীপ রায়

লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি শুকিয়ে নালায় পরিণত হয়েছে। কোথাও রয়েছে হাঁটু পানি আবার কোথাও কোমর পানি। পানির অভাবে নৌকা চালাতে পারছেন না মাঝিরা। অন্যদিকে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় নদীর বুকে বিভিন্ন স্থানে চাষাবাদ করছেন স্থানীয় কৃষকরা।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার চর কুলাঘাট এলাকার কৃষক মনসুর আলী দেওয়ান (৬৭) দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ধরলা এবার একটু আগেই শুকিয়ে নালায় পরিণত হয়েছে। পানি না থাকায় চরাঞ্চলের মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, গত কয়েক বছর ধরে ধরলার এরকম পরিণতি হয়েছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে পানি কমে যায়, এরপর শুকিয়ে বালুময় চরে পরিণত হয়। তবে বর্ষায় আবার বন্যার সৃষ্টি হয়। তখন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় বসতভিটা, আবাদি জমি, ফলের বাগানসহ নানা স্থাপনা।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার চর সোনাইগাজীর কৃষক সেকেন্দার আলীর ভাষ্য, এখন পায়ে হেঁটে ধরলা পাড়ি দিতে পারছেন। নদীর বুকে তারা ফসলের চাষাবাদ শুরু করছেন। শুকিয়ে যাওয়া ধরলার এ পরিণতি দেখে তার খুব কষ্ট হয়।

সেকেন্দার আলী জানান, এক যুগ আগেও তিনি ধরলার এরকম রূপ দেখেননি। ধরলাকে পানিতে ভরপুর দেখতে তিনি অভ্যস্থ।

ধরলা নদী শুকিয়ে নালায় পরিণত হয়েছে। ছবি: এস দিলীপ রায়
ধরলা নদী শুকিয়ে নালায় পরিণত হয়েছে। ছবি: এস দিলীপ রায়

 
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার সারডোব এলাকায় নৌকা ঘাটের মাঝি সিরাজুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, নৌকা চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত পানি না থাকায় তিনি এখন নৌকা চালাতে পারছেন না। চরাঞ্চলের মানুষকে এখন পায়ে হেঁটে চর পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুরুল এলাকার মাঝি রুস্তম আলীও একই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ধরলায় পানি কমে যাওয়ায় তার উপার্জন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, ধরলা বাংলাদেশের একটি অন্যতম আন্তঃসীমান্ত নদী। এটি লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার চ্যাংড়াবান্ধা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে আবারও ভারতের মধ্যে ঢুকে গেছে। সেখান থেকে আবার লালমনিরহাটের মোগলহাট ও কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার গোড়কমণ্ডল এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এই নদীর মূল চ্যানেলটির উৎপত্তি ভারতের কুচবিহারে। এটি কুড়িগ্রাম শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ব্রহ্মপুত্র নদে মিলিত হয়েছে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশরী মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বর্ষাকালে একটি খরস্রোত নদীতে পরিণত হয় ধরলা। সে সময় নদীটি প্রশস্ত ও অশান্ত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশ অংশে ধরলার দৈর্ঘ্য প্রায় ৭৫ কিলোমিটার। ধরলার বুকে কয়েকটি চ্যানেল থাকায় পানির প্রবাহ বিভিন্ন অংশে ভাগ হয়ে গেছে এবং নদীটি নালায় পরিণত হয়েছে। 

খনন করে একটি চ্যানেলে রাখা হলে শীতকালেও ধরলায় আশানুরুপ পানি পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

 

Comments

The Daily Star  | English
World Bank’s senior official speaks on lending culture in Bangladesh

Banks mostly gave loans to their owners rather than creditworthy borrowers

Bangladesh’s banking sector was not well-managed in recent years. Banks mostly gave loans to their owners, rather than to creditworthy entities. Consequently, several banks are now in difficulty.

12h ago