ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে পুলিশ চেকপোস্ট, তল্লাশি
নারায়ণগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে ঢাকামুখী যাত্রীবাহী বিভিন্ন পরিবহন থামিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ৷ জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের৷
পুলিশ বলছে, নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে আজ বুধবার চেকপোস্টগুলোতে তল্লাশি চলছে৷ তবে বিএনপি নেতারা বলছেন, ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে এ ধরনের তৎপরতা চালাচ্ছে পুলিশ৷ নেতা-কর্মীদের আটকাতেই এ তল্লাশি চলছে৷
জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জেলার ৭টি থানা এলাকাতেই চেকপোস্ট রয়েছে৷ এসব চেকপোস্টে আগেও রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে তল্লাশি চালানো হয়েছে৷ বিএনপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আলাদাভাবে কোনো তৎপরতা নেই পুলিশের৷ কিন্তু কেউ যাতে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করতে না পারে সে বিষয়ে পুলিশের তৎপরতা রয়েছে৷'
সারাদিনে চেকপোস্টগুলোতে পুলিশি তৎপরতা থাকলেও কাউকে এখন পর্যন্ত আটক করা হয়নি বলে জানিয়েছেন এসপি৷
জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকায় এবং সোনারগাঁয়ের মেঘনাঘাট টোলপ্লাজায় পুলিশের ২টি চেকপোস্টে বাস, প্রাইভেট কার, লেগুনা, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ যাত্রীবাহী বিভিন্ন যান থামিয়ে পুলিশের তল্লাশি কার্যক্রম দেখা গেছে৷ যাত্রীরা কোথায় এবং কেন যাচ্ছেন সেসব প্রশ্ন করছে পুলিশ৷ সকাল থেকেই এমন কার্যক্রম চলছে বলে পরিবহনগুলোর যাত্রী ও চালকরা জানিয়েছেন৷
রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব বিশ্বরোড এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে কথা হয় লেগুনা চালক মো. রফিকের সঙ্গে। বরপা থেকে যাত্রাবাড়ি যাত্রী পরিবহন করেন তিনি৷
রফিক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ডেমরা ব্রিজের ওদিকে একটি চেকপোস্ট আছে৷ সেখানে দুপুরের দিকে পুলিশ আমাদের থামিয়ে যাত্রীদের নানা প্রশ্ন করেছে৷ কে, কোথায় যাচ্ছে জানতে চেয়েছে৷'
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সকাল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মৌচাক এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনগুলোতে তল্লাশি চালানো হয়েছে৷ মহাসড়কে এর আগে নাশকতার পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল৷ সে কারণে পুলিশের এমন সতর্ক অবস্থান৷ প্রয়োজনের ভিত্তিতে মহাসড়কে চেকপোস্ট বাড়ানো হতে পারে৷'
সোনারগাঁয়ের মেঘনা টোলপ্লাজা এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঢাকামুখী যানবাহনগুলোতে তল্লাশি চালানো হয়েছে বলে জানান কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি আবুল কাশেম৷
তিনি বলেন, 'এটি নিয়মিত একটি কার্যক্রম৷ কোনো যানবাহনে অবৈধ মালামাল থাকতে পারে কিংবা অস্ত্র থাকতে পারে। তাই সকাল থেকে আমাদের তৎপরতা রয়েছে। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত সন্দেহজনক কাউকে পাওয়া যায়নি৷'
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আওয়ামী লীগের ভিত নড়ে গেছে৷ বিরোধী মত ঠেকাতে পুলিশ-প্রশাসনকে ব্যবহার করছে সরকার৷ তারা ঢাকামুখী বিভিন্ন সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে নিরীহ মানুষকে হয়রানি করছে৷ সাধারণ মানুষের মনে ভীতি সঞ্চার করার জন্য সব ধরনের কার্যক্রম চালাচ্ছে সরকার৷ এতে কাজ হবে না৷ বিএনপির গণসমাবেশ সফল হবেই৷'
এদিকে মহাসড়কে কেউ এখন পর্যন্ত আটক বা গ্রেপ্তার না হলেও গত রাত থেকে বিকেল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ১৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ৷ নাশকতার অভিযোগে মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ গত কয়েকদিন ধরেই এ অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ৷
গত ১৭ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে জেলার ৭টি থানায় মোট ১১টি মামলা হয়েছে৷ এসব মামলার ৮টির বাদী পুলিশ, ২টির বাদী ছাত্রলীগের ২কর্মী এবং একটির বাদী শ্রমিক লীগ নেতা৷
Comments