মায়ের জমি দেখতে বিকেল ৩টায় খুলনার দিঘলিয়ায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

খুলনার দিঘলিয়ায় ভৈরব নদের তীরে নগরঘাট এলাকায় বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে কেনা ৪ বিঘা জমি দেখতে ব্যক্তিগত সফরে খুলনায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দিঘলিয়ায় প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফাইল ফটো

খুলনার দিঘলিয়ায় ভৈরব নদের তীরে নগরঘাট এলাকায় বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে কেনা ৪ বিঘা জমি দেখতে ব্যক্তিগত সফরে খুলনায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী আজ শুক্রবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া থেকে বিকেল ৩টার দিকে সড়কপথে খানজাহান আলী সেতু (রূপসা সেতু) পার হয়ে আড়ংঘাটা বাইপাস ধরে দিঘলিয়া ঘাটে পৌঁছবেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছে।

২০১৮ সালের ৩ মার্চ সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী জনসভায় যোগ দিতে খুলনায় এসেছিলেন।

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে খুলনার দিঘলিয়া উপজেলায় ৪ বিঘা জমি আছে। পাকিস্তান আমলে কেনা সেই সম্পত্তিতে আছে গোডাউন, যা এখন 'শেখ হাসিনার গোডাউন' নামে পরিচিত।

প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা জমি পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. সুজিত অধিকারী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর এই সফর একেবারেই ব্যক্তিগত। সে কারণে তার সঙ্গে দলের নেতাকর্মীরা সাক্ষাৎ করতে পারবেন না।'

দিঘলিয়ায় প্রধানমন্ত্রী
খুলনার দিঘলিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে তোরণ। মহানগরীর রেলগেট এলাকা থেকে তোলা। ৬ জানুয়ারি ২০২৩। ছবি: হাবিবুর রহমান/স্টার

খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে খুলনার দিঘলিয়ার ভৈরব নদের পাশে নগরঘাট এলাকায় ১ একর ৪৪ শতক (৪ বিঘা) জমিতে পাট গুদাম ও এক কক্ষের ঘরসহ জমি কেনেন। ওই জমিতে নির্মাণ করা হয় পাট গোডাউন যা বর্তমানে 'শেখ হাসিনার গোডাউন' নামে পরিচিত।'

দিঘলিয়ায় এই ৪ বিঘা জমির কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও জানতেন না। ২০০৭ সালে তার ব্যক্তিগত আইনজীবীর মাধ্যমে ওই জমির কথা জানতে পারেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবদ্দশায় পাটের গুদাম ও এক কক্ষের আধাপাকা ঘর ছিল সেই জমিতে। এই পাট গুদাম দেখাশোনা করতেন বঙ্গবন্ধুর ছোটভাই শেখ আবু নাসের।

জমি দেখাশুনার পাশাপাশি শেখ আবু নাসের এক সময় এখানেই ব্যবসা সম্প্রসারণ করেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদত বরণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই সম্পত্তির মালিকানা পান।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে শেখ আবু বকর পরিবার নিয়ে প্রায় ২০ বছর সেই জমিতে বসবাস ও দেখাশোনার কাজ করছিলেন। বর্তমানে জাহিদুল ইসলাম এই সম্পত্তি দেখাশোনা করছেন। তিনি এক যুগের বেশি সময় ধরে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের মাধ্যমে এই দায়িত্ব পান। পুরনো সেই গুদামঘর ভেঙে নতুন আধুনিক গুদাম ঘর ও নদের তীরে রেস্ট-হাউজ করা হয়েছে।

নগরঘাট-দিঘলিয়া প্রধান সড়কের পাশ দিয়ে গোডাউনের যে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে তার নাম দেওয়া হয়েছে শেখ রাসেল সড়ক। ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত আদমজী জুট মিলের গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করা হয় এটি। পরে নরসিংদীর একটি পাটকলের গুদাম হিসেবে এটি ব্যবহার করা হয়।

এই সম্পত্তির তৎকালীন কেয়ারটেকার আবু বকর এখানে উৎপাদিত নারকেল, কলা, বেশ কয়েক রকমের সবজিসহ নানান ফলমূল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠিয়েছিলেন।

Comments