ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনজীবীদের আদালত বর্জন আংশিক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনজীবীদের আদালত বর্জন আংশিক প্রত্যাহার
বর্জন কর্মসূচিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের চিত্র। ফাইল ছবি: মাসুক হৃদয়/স্টার

দাবি পূরণ সাপেক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনজীবীরা তাদের আদালত বর্জন কর্মসূচি আংশিক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। 

আদালতে চলমান সংকট নিরসনে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর গুলশানে আইনমন্ত্রীর আবাসিক কার্যালয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে স্থানীয় আইনজীবীদের দ্বিতীয় দফা বৈঠক হয়। 

বৈঠক শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুল দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, আইনজীবীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে জাল স্ট্যাম্প ও জাল কোর্ট ফি বিক্রির সঙ্গে জড়িত নাজির মোমিনুল ইসলাম চৌধুরীকে অপসারণ এবং জেলা জজ শারমিন নিগার, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুককে সরিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। 

আশ্বাস অনুযায়ী, আইনজীবীরা তাদের আদালত বর্জন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেবেন। তবে আইনজীবীদের সম্পূর্ণ দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা জেলা জজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর আদালত বর্জন অব্যাহত রাখবেন।

এই আইনজীবী নেতা বলেন, 'আমাদের ৩টি দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। দাবিগুলো পূরণ সাপেক্ষে আগামী রোববার থেকে আইনজীবীরা আদালতের বিচারিক কার্যক্রমে অংশ নিবেন। তবে জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুককে সরিয়ে নেওয়ার আগ পর্যন্ত এই ২ আদালত বর্জন অব্যাহত থাকবে।'

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত আইনমন্ত্রীর আবাসিক কার্যালয়ে চলা এই বৈঠকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর নূর দুলাল এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. তানবীর  ভূঁঞা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আগামীকাল শনিবার সমিতির কার্যালয়ে সাধারণ সভা করে বর্জন কর্মসূচি আংশিক প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত ১ ডিসেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর এজলাসে আইনজীবীরা মামলা দাখিল করতে গেলে বিচারক মোহাম্মদ ফারুক মামলা গ্রহণ না করে জেলার সব আইনজীবী সম্পর্কে ঢালাওভাবে আপত্তিকর মন্তব্য এবং মিথ্যাচার করেন বলে অভিযোগ করেন আইনজীবীরা। 

এ ঘটনায় ২৬ ডিসেম্বর আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ জরুরি সভা করে ১ জানুয়ারি থেকে ওই বিচারকের আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত নেন। এরপর জেলা ও দায়রা জজের ইন্ধনে আদালতের কর্মচারীরা গত ৪ জানুয়ারি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি দিয়ে আইনজীবীদের সম্মানহানি করা হয়েছে‌ বলেও অভিযোগ করা হয়। এরপর আইনজীবীরা আদালতের দুর্নীতিবাজ নাজির মোমিনুলের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে জাল স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি বাণিজ্য চলছে উল্লেখ করে তাদের ৩ জনের অপসারণ দাবিতে ৩ কার্যদিবস আদালত বর্জন কর্মসূচি দেয়। তবে দাবি আদায় না হওয়ায় দ্বিতীয় দফায় আরও ৩ কার্যদিবস আদালত বর্জন করেন আইনজীবীরা। সবশেষ ১২ জানুয়ারি তৃতীয় দফায় আবারও ৩ কার্যদিবস আদালত বর্জন কর্মসূচি ঘোষণা করে তারা।

এদিকে, আইনজীবীদের টানা আদালত বর্জনের কারণে বন্ধ হয়ে যায় বিচারিক কার্যক্রম। এতে ভোগান্তিতে পড়েন জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিচারপ্রার্থীরা। 

উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের‌ পৃথক ২৩টি এজলাসে প্রতিদিন অন্তত আড়াই থেকে ৩ হাজার মামলার শুনানি হয় বলে জানিয়েছে আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আজাদ রকিব আহমেদ তুরান।

 
 

Comments

The Daily Star  | English

NBR officials end strike after govt warning

Following a stern government warning and mounting pressure from the country’s top business leaders, officials of the National Board of Revenue have withdrawn their shutdown.

5h ago