শহীদ মিনার থেকে গণসংহতির জেলা সমন্বয়ককে ‘আটক’, দেড় ঘণ্টা পর মুচলেকা নিয়ে মুক্তি

তরিকুল সুজনকে পুলিশ ভ্যানে তুলে থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে থাকাকে কেন্দ্র করে গণসংহতি আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল সুজনের সঙ্গে পুলিশের 'অসদাচরণের' অভিযোগ পাওয়া গেছে৷ এ ঘটনায় তরিকুল সুজনকে পুলিশ ভ্যানে তুলে থানায় নিয়ে যাওয়ার দেড় ঘণ্টা পর মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়৷

গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের চাষাঢ়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ ঘটনা ঘটে৷

এ সময় উপস্থিত ২ জন গণমাধ্যমকর্মী ঘটনার দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করতে গেলে তাদের সঙ্গেও পুলিশের অসদাচরণ করার অভিযোগ উঠেছে।

ওই ২ গণমাধ্যমকর্মীর মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে তাদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দেওয়ারও হুমকি দেয় পুলিশ।

গতকাল দুপুরে পুলিশি বাধার মুখে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের প্রতিবাদী ব্যানার ঢাকা হয় কালো কাপড়ে৷ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শহরের চাষাঢ়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ওই ব্যানারে লেখা ছিল 'একুশের উচ্চারণ, দূর হ দুঃশাসন'৷

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরুর দিকে পুলিশের বাধায় ব্যানারটিতে কালো কাপড় লাগানো হয়৷ পরে এই কালো কাপড় বাঁধা অবস্থাতেই শহীদ মিনারে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা চলে৷

অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর থেকে শহীদ মিনারে থাকা লোকজনকে শহীদ মিনার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয় পুলিশ৷ এর প্রতিবাদ জানালেই পুলিশ অসদাচরণ শুরু করে বলে অভিযোগ তরিকুল সুজনের৷

দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'সাংস্কৃতিক জোটের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহীদ মিনারের উত্তর পাশে দাঁড়িয়ে আমি ও সাংবাদিক সোহেল রানা নাস্তা করছিলাম৷ এ সময় এক পুলিশ সদস্য এসে আমাদেরকে শহীদ মিনার থেকে বের হতে বলেন। একটু পরে আরও আরেক জন পুলিশ সদস্য একই কথা বলেন। তারা ২ জনই মারমুখী আচরণ করেছেন।'

তিনি বলেন, 'তারা আমাদেরকে খাওয়া বন্ধ করে বেরিয়ে যেতে বলেন৷ তাদের হাতে বাঁশের লাঠি ছিল৷ তাদের এমন মারমুখী আচরণের প্রতিবাদ জানাই আমরা ২ জনই৷ কারণ, ওই সময়ে শহীদ মিনারে অবস্থানের বিষয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল না, আর আমরা কোনো অপরাধমূলক কাজও করছি না। আমরা প্রতিবাদ করায় তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে পুলিশ ভ্যানে তুলে থানায় নিয়ে যান৷ প্রায় দেড় ঘণ্টা থানায় আটকে রেখে মুচলেকা নিয়ে রাত ১টার দিকে দেছে দেয়।'

এ ঘটনার সময় তরিকুল সুজনের সঙ্গে ছিলেন নিউজ নারায়ণগঞ্জের প্রতিবেদক সোহেল রানা। তিনি বলেন, 'পুলিশ আমার সঙ্গেও অসদাচরণ করেছে৷ তরিকুল সুজনকে পুলিশ ভ্যানে তোলার ছবি তুলতে গেলে তারা আমার মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে বলেন, এই মুহূর্তে ঘটনাস্থল ত্যাগ না করলে আইসিটি মামলা দেবে। পুলিশের এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই কাম্য না৷'

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান মোল্লা বলেন, 'একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। কাউকে আটক করা হয়নি৷ তরিকুল সুজন স্বেচ্ছায় পুলিশ ভ্যানে উঠে থানায় এসেছিলেন৷ পরে বিষয়টি থানাতেই মীমাংসা করা হয়েছে৷ আইনগত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে একটি মুচলেকা রাখা হয়েছে৷'

 

Comments

The Daily Star  | English

Is the govt secretly backing wrongdoers?

BNP acting chairman Tarique Rahman yesterday questioned whether the government is being lenient on the killers of Lal Chand, alias Sohag, due to its silent support for such incidents of mob violence.

2h ago