জবাবদিহিতে বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও এগিয়ে: তথ্যমন্ত্রী

ছবি: বাসস

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, স্বচ্ছ্বতা ও জবাবদিহিতে বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও এগিয়ে।

তিনি আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটে 'এনআইএমসি মিডিয়া এওয়ার্ড' প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, 'বাংলাদেশে যখন নির্বাচন হয়, সেটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন, মেয়র নির্বাচন বা জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেটিই হোক, তখন সমস্ত প্রার্থীর ট্যাক্স বা আয়করের ফাইল জমা দিতে হয়। অথচ ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষ করেছেন কিন্তু আজ অবধি ট্যাক্স বা আয়করের ফাইল জমা সম্পন্ন করেননি। সুতরাং এ ধরনের স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও এগিয়ে আছি। আমাদের দেশে কেউ এটা ফাইল না করে পারে না।'

তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের সরকার সুশাসনের ওপর জোর দিচ্ছে বিধায় ক্যাবিনেট ডিভিশনের অধীনে এই প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে, কারণ তারা মানুষকে জানাচ্ছে সরকারের দপ্তরে কীভাবে এবং কি কি সুবিধা মানুষ পেতে পারে। অনেক কিছু সম্পর্কে মানুষ জানে না। যেমন তথ্য অধিকার আইন অনেক সাধারণ মানুষ জানে না। এমন কি অনেক সাংবাদিকও ভালো মতো জানে না। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার পর এ আইন সংসদে পাস হয় এবং সে আইন বলে তথ্য কমিশন গঠিত হয়। তথ্য কমিশন গঠিত হওয়ার পর এ পর্যন্ত ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে।'

'কোনো দপ্তরে গিয়ে ফাইলের পাতা চুরি বা কোনো দপ্তরে গিয়ে সেখানে কাউকে ম্যানেজ করে তথ্য জানার দরকার নেই' উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, 'অনেকে সরকারি কিংবা বেসরকারি কোনো দপ্তরে গিয়ে তথ্য না পেয়ে তথ্য কমিশনের মাধ্যমে আবেদন করেছে এবং কমিশন তা নিষ্পত্তি করেছে। এ রকম বহু নজির আছে। কিন্তু আইন না জানার ফলে তথ্য চুরি করার চেষ্টা হয়, সরকারি অফিসে পিয়ন, দারোয়ান বা যে ফাইলের ফটোকপি করে তার কাছ থেকে তথ্য নেওয়া হয়, সে জন্য তাদের ম্যানেজ করা হয় এবং তারা ম্যানেজ হয়ে দিয়েও দেয়, যা সমীচীন নয়। এগুলোর প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না কারণ আমাদের তথ্য অধিকার আইন আছে। তথ্য অধিকার আইনেও যদি আপনি না পান, তাহলে আদালত আছে।'

তথ্যমন্ত্রী হাছান বলেন, 'বিশ্বের প্রতিটি দেশেরই কিছু রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা থাকে যা প্রকাশযোগ্য নয়, সেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলুন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলুন, যুক্তরাজ্য বলুন, সবদেশেই। কিন্তু আমাদের দেশে একটি ভুল ধারণা হচ্ছে, সবকিছু "পাবলিক" হতে হবে, যা ঠিক নয়, মানুষকে এটিও জানাতে হবে।'

সরকার সবকিছুতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজ থেকে ১২-১৪ বছর আগে কোনো জায়গায় টেন্ডার ফেললে সেই টেন্ডার বক্স ছিনতাই, মারামারি গোলাগুলি, মৃত্যু-আহত এগুলো নিয়মিত ঘটনা ছিল পত্রিকার পাতায়। এখন সবকিছু অনলাইন, ই-টেন্ডারে হয়। ই-টেন্ডারিং একটা স্বচ্ছতা নিশ্চিত করেছে। এ সময় ই-ফাইলের পাশাপাশি কাগজের ফাইলও দরকার উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি মনে করি, ই-ফাইলিং অবশ্যই আমাদের কাজে গতি এনেছে, আমি বিদেশে বসে ই-ফাইল সই করি এবং প্লেনে বসে ফাইল সই করেছি এমনও হয়েছে। কিন্তু সংরক্ষণের জন্য কাগজের ফাইলও দরকার আছে।'

অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নেওয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে পরিচালিত ব্রিটিশ কাউন্সিলের 'প্লাটফর্ম ফর ডেভেলপমেন্ট' প্রকল্পের আওতায় সারাদেশের ১৫০ জন সাংবাদিককে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট আয়োজিত প্রশিক্ষণ শেষে নির্বাচিত ১০ জনকে তাদের রিপোর্টিংয়ের জন্য 'এনআইএমসি মিডিয়া এওয়ার্ড' স্মারক দেন মন্ত্রী।

জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহিন ইসলামের সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বিশেষ অতিথি এবং যুগ্মসচিব আয়েশা আক্তার, ইউরোপীয় ইউনিয়নের এটাশে ফানি ফারমাকি, ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টিম মিসিওসিয়া এবং 'প্লাটফর্ম ফর ডেভলপমেন্ট' প্রকল্পের টিম লিডার আরসেন স্টেপনিয়ান সম্মানীয় অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

Multiple blasts heard in Tehran, black smoke visible in east: AFP

Israel army says struck Iran centrifuge production, weapons manufacturing sites

20h ago