বাংলাদেশে নাগরিক অধিকারের পরিসর অবদমিত: সিভিকাস

বিশ্বব্যাপী নাগরিক স্বাধীনতা ও অধিকার নিয়ে কাজ করা অলাভজনক সংস্থা সিভিকাস মনে করে, বাংলাদেশের মানুষের নাগরিক অধিকারের পরিসর অবদমিত।

বিশ্বব্যাপী নাগরিক স্বাধীনতা ও অধিকার নিয়ে কাজ করা অলাভজনক সংস্থা সিভিকাস মনে করে, বাংলাদেশের মানুষের নাগরিক অধিকারের পরিসর অবদমিত।

গত বৃহস্পতিবার বৈশ্বিকভাবে প্রকাশিত সংস্থাটির 'পিপল পাওয়ার আন্ডার অ্যাটাক ২০২২' শীর্ষক প্রতিবেদনে টানা পঞ্চমবারের মতো বাংলাদেশের এই অবস্থানকে চিহ্নিত করা হয়।  

বিশ্বের ১৯৬টি দেশের মানুষের নাগরিক অধিকারের অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে এ প্রতিবেদনে। সংগঠন করা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা—এ তিন গুরুত্বপূর্ণ অধিকারের অবস্থা এখানে মূল্যায়ন করা হয়েছে। নাগরিক অধিকার কতটুকু আছে, সেই নিরিখে ৫টি ক্যাটাগরিতে এসব দেশকে ফেলা হয়েছে।

এই ৫টি ক্যাটাগরি হলো- উন্মুক্ত, সংকীর্ণ, বাধাগ্রস্ত, অবদমিত ও বন্ধ। এ বছরও বাংলাদেশ 'অবদমিত' ক্যাটাগরিতে পড়েছে।

প্রতিবেদনে উন্মুক্ত দেশের তালিকায় আছে কানাডা, চেক প্রজাতন্ত্র, জার্মানি, নরওয়ে এবং সুইডেন। এখানে বাংলাদেশকে উদ্বেগের একটি বিশেষ দেশ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গভিত্তিক এই সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, 'সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে নাগরিক অধিকারের পরিসর কমে আসার বিষয়টি নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ আছে। এগুলোর মধ্যে মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক ও বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের বিচারবিভাগীয় হয়রানি, হুমকি ও হামলার মতো ঘটনা রয়েছে।'

দুর্নীতির তথ্য প্রকাশের অভিযোগে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের আওতায় মামলা করা হয়েছে জানিয়ে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, 'সাংবাদিক ও সমালোচকদের বিরুদ্ধে কঠোর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করা হচ্ছে।'

এ ছাড়াও বাংলাদেশে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারকে চুপ থাকতে বাধ্য করা ও তাদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করার পাশাপাশি বিদেশে আশ্রয় নেওয়া সাংবাদিক এবং অ্যাক্টিভিস্টদের পরিবারকে টার্গেট করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় এ প্রতিবেদনে। বলা হয়, 'তারা (সরকার) শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন অধিকারকেও হয়রানি করেছে এবং তাদের নিবন্ধন বাতিল করেছে।'

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, 'পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে এবং সন্ত্রাসবিরোধী এলিট ইউনিট র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে নির্যাতন, দুর্ব্যবহার ও গুমের অভিযোগ পাওয়া গেছে।'

২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের ওপর ক্রমাগত আক্রমন অব্যাহত আছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে সিভিকাসের প্রতিবেদনে।

এ অবস্থায় মানবাধিকার সংস্থাটি সরকারকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ বন্ধ করাসহ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া বন্ধ করা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা দেওয়ার সুপারিশ করেছে।

সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সংস্থাটি বলেছে, 'ভুয়া খবর বা ভুল তথ্যের মতো অস্পষ্ট ধারণার ওপর ভিত্তি করে কোনো অভিব্যক্তি অপরাধ হিসেবে গণ্য করার মতো যে কোনো আইন বাতিল করা হোক।'

Comments

The Daily Star  | English

Yunus promises election on time

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday reaffirmed his commitment to holding the 13th national election in the first half of February next year.

7h ago