সামর্থ্য সামান্য, তা দিয়েই ঈদ আনন্দ

ঈদের সন্ধ্যায় ভাষানটেক বাজারের পাশে একটি চটপটির দোকানে চটপটি খাচ্ছে কিশোর জাহিদুল। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

বছর ঘুরে সারা দেশে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর। ঈদ মানেই খুশি, আর এ খুশি ধনি-দরিদ্র সবার। যার যতটুকু সামর্থ্য আছে ততটুকু নিয়েই পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদের খুশিতে মেতে ওঠে সবাই।

রাজধানী ঢাকার বস্তিতেও দেখা গেছে ঈদের খুশি। ঈদ উপলক্ষে নতুন না হলেও ভালো পোশাক পরে ঘোরাঘুরি করেছে শিশু-তরুণসহ সব বয়সের মানুষ। শিশুদের মধ্যে ঈদের আমেজ চোখে পড়ার মতো। দলবেঁধে ঘুরছে তারা। রঙিন পোশাকে হাসি আনন্দে কাটছে তাদের ঈদ। 

গতকাল শনিবার ঈদের দিন ভাষানটেক বস্তিতে গিয়ে বস্তিবাসীর ভেতরে ঈদের আমেজ দেখা গেছে। বিভিন্ন ঘরে খাবারের ভালো সুবাস পাওয়া যাচ্ছিল।

ভাষানটেক বাজারের পাশে একটি চটপটির দোকানে দেখা হয় কিশোর জাহিদুল ইসলামের (১৩) সঙ্গে। পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া জাহিদ সেখানে চটপটি খাচ্ছিল।

জাহিদ জানায়, ভাষানটেক বস্তিতে তাদের বাসা। বাবা নেই। মা গৃহকর্মীর কাজ করেন। 

মামাদের কাছ থেকে ঈদ উপহার হিসেবে শার্ট, প্যান্ট, জুতা পেয়েছে জাহিদ। এগুলো পেয়ে খুব খুশি সে। সাড়ে ৫০০ টাকা সালামিও পেয়েছে জাহিদ।

ঈদের দিন কেমন কাটল, জানতে চাইলে সে জানায়, বাসা থেকে সকাল বেলা সেমাই, নুডলস, ভাত খেয়ে মায়ের অনুমতি নিয়ে বের হয়েছে।

'সকালে বের হইছি। স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে সারাদিন ঘুরছি। কচুক্ষেত, পল্লবী দিয়ে রিকশায় ঘুরছি। অনেক মজা করছি,' জাহিদ জানায়।

একই বস্তিতে আরেকটি ঘরে গিয়ে দেখা হয় শিশু অলিউল্লাহর (১২) সঙ্গে। দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে সে তৃতীয়। তাদের বাবা শারীরিক প্রতিবন্ধী, মা গৃহকর্মী।

একটি মুরগির দোকানে কাজ করে মাসে ২ হাজার টাকা বেতন পায় অলিউল্লাহ। এবারের ঈদে নিজের আয়ের টাকা দিয়ে শার্ট, প্যান্ট ও জুতো কিনেছে। তাই খুব খুশি সে।

ঈদের সকালে মায়ের কাছ থেকে ১০০ টাকা নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছে অলিউল্লাহ। জানায়, 'আজ ছুটি, কাল থেকে আবার কাজ। তাই ঘুরতে বেরিয়েছি।' 

ভাষানটেক ২ নম্বর বস্তির একটি ঘরে ১ ছেলে ও ১ মেয়ে নিয়ে থাকেন মো. হানিফ। বস্তিতে একটি চায়ের দোকান চালান তিনি। 

হানিফ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার ৪ বছরের ছেলে জোনায়েদের জন্য ঈদে শার্ট, প্যান্ট কিনে দিয়েছি। ছেলের তো চাহিদা অনেক। ঘড়ি, চশমা, খেলনা কতকিছু চায়। সব তো পূরণ করতে পারি না।'

Comments

The Daily Star  | English

Power grid failure causes outage across 21 districts

According to the Power Grid Bangladesh PLC, the situation has since returned to normal

8h ago