বাংলা ভাই-এরশাদ শিকদার-সাকা চৌধুরীদের ফাঁসিতে ঝুলানো জল্লাদ মুক্তি পাচ্ছেন আজ

অস্ত্র ও হত্যা মামলায় ৪২ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত শাহজাহানের সাজা কমে ৩২ বছর হয়েছে। সেই সাজা খেটে ৭৩ বছর বয়সী শাহজাহান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছেন।
জল্লাদ শাহজাহান
শাহজাহান ভূঁইয়া। ছবি: সংগৃহীত

মনে আছে শাহজাহান ভূইয়ার কথা? কোন শাহজাহান ভূঁইয়া? জেলখানার প্রধান জল্লাদ। যিনি ফাঁসি দিয়েছেন কুখ্যাত বাংলা ভাই, খুনি এরশাদ শিকদার, মানবতাবিরোধী অপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ ২৬ জনকে।

আজ রোববার ৩২ বছর পর সেই জল্লাদ শাহজাহান মুক্তি পেতে যাচ্ছেন।

অস্ত্র ও হত্যা মামলায় ৪২ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত শাহজাহানের সাজা কমে ৩২ বছর হয়েছে। সেই সাজা খেটে ৭৩ বছর বয়সী শাহজাহান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছেন।

১৯৫০ সালের ২৬ মার্চ নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ইছাখালী গ্রামে জন্ম নেওয়া শাহজাহান ভূঁইয়া উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ করে স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।

নথি অনুসারে, ১৯৯২ সালের ৮ নভেম্বর ডাকাতির জন্য ১২ বছর এবং ১৯৯৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর অপর একটি মামলায় ডাকাতি ও হত্যার জন্য ৩০ বছরের কারাদণ্ড হয় তার। এ ছাড়া, উভয় রায়ে তাকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড হয় তার।

শাহজাহান দাবি করেন তিনি আরও বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছেন। তবে, জেলের রেকর্ডে এই সংখ্যা ২৬।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হয়তো তিনি ঠিক বলে থাকতে পারেন। কিন্তু, এখন পর্যন্ত আমাদের রেকর্ডে ২৬টি তথ্যই আছে।'

এই ২৬ জনের তালিকায় আছে সাবেক মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী এবং বঙ্গবন্ধুর খুনি বজলুল হুদা ও শাহরিয়ার রশিদের নাম।

কারা কর্মকর্তারা বলছেন, প্রবিধান অনুসারে শাহজাহানের সাজা ১০ বছরের কিছু বেশি সময় কমানো হয়েছে। যেহেতু শাহজাহানের সঙ্গে কেউ কখনো দেখা করতে আসেনি, তাই কারা কর্তৃপক্ষ তার ওই ২ মামলার জরিমানার ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সুভাষ কুমার ঘোষ বলেন, 'শাহজাহান রোববার সকাল ১০টার দিকে কারাগার থেকে বের হবেন। তিনি জীবনের একটা বড় অংশ জেলে কাটিয়েছেন। একদিকে কারামুক্ত হওয়ার খবরে তিনি খুশি, আবার যাওয়ার কোনো জায়গা না থাকায় তিনি উদ্বিগ্নও।'

সুভাষ জানান, কারা কর্তৃপক্ষ শাহজাহানকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করবে, যাতে তিনি তার বাকি জীবন সুন্দরভাবে কাটাতে পারেন।

শাহজাহান বিয়ে করেনি এবং তার বাবা-মাও বেঁচে নেই। তারপরও তিনি কারাগার থেকে বের হওয়ার পর গ্রামের বাড়িতে যেতে চান জানিয়ে সুভাষ বলেন, 'তিনি (শাহজাহান) আমাদের বলেছিলেন যে বাকি জীবন পৈতৃক গ্রামে কাটানোর ইচ্ছা তার।'

Comments