‘ত্বকীর ঘাতকরা আইনের আওতায় আসে না, প্রশাসন নিরাপত্তা দেয়’

ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১২৪ মাস উপলক্ষে আলোক প্রজ্জ্বালন কর্মসূচিতে ত্বকির বাবা রফিউর রাব্বি বলেন, ‘সরকার দুর্বৃত্ত রক্ষার রাজনীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে।’
ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১২৪ মাস উপলক্ষে আলোক প্রজ্জ্বালন কর্মসূচিতে বক্তব্য দিচ্ছেন রফিউর রাব্বি। ছবি: সংগৃহীত

কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীর ঘাতকদের প্রশাসন নিরাপত্তা দেয় এবং এ কারণে তারা আইনের আওতায় আসে না বলে মন্তব্য করেছেন নিহত ত্বকীর বাবা ও সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি। 

তিনি বলেছেন, 'গণমানুষের আস্থা হারিয়ে দুর্বৃত্ত আর পেশীশক্তির উপর নির্ভরশীল হয়েছে সরকার। আর সে জন্যই ত্বকীর ঘাতকরা আইনের আওতায় আসে না। প্রশাসন তাদের নিরাপত্তা দেয়।'

শনিবার সন্ধ্যায় ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১২৪ মাস উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ শহরের ডিআইটি এলাকায় আলী আহাম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তন প্রাঙ্গণে আলোক প্রজ্জ্বালন কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন তিনি। 

প্রতিমাসে ত্বকী হত্যার বিচারের দাবিতে এ কর্মসূচির আয়োজন করে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।

রফিউর রাব্বি বলেন, 'সরকার দুর্বৃত্ত রক্ষার রাজনীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। একে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলে বলে মানুষকে ধোঁকা দিয়ে চলেছে। তারা রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেছে, তা তারা  ভূলুণ্ঠিত করেছে। বৈষম্য থেকে মুক্তির জন্য যুদ্ধ করেছে অথচ স্বাধীন দেশে বৈষম্য আরও বেড়েছে।'

২০১৩ সালের ৬ মার্চ বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিল কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। ৮ মার্চ সকালে শীতলক্ষ্যা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার হয়।

দশ বছরেও ত্বকী হত্যার বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব হালিম আজাদ বলেন, 'আপনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছিলেন কারা ত্বকীকে হত্যা করেছে আপনি সব জানেন। তা হলে কেন বিচার করছেন না?'

মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহাবুবুর রহমান মাসুম বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী আপনি বিচার করেন। নয়তো এই বিচার বন্ধ করে রাখার অপরাধে আপনাকেও একদিন বিচারের আওতায় আসতে হবে। ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। ইতিহাসে বহু লৌহমানব ধিকৃত হয়েছে।'

নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহীন মাহমুদের সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি প্রদীপ ঘোষ বাবু, সিপিবি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবর্তী, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন ও চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি প্রবীর সরকার।

 

Comments