বেইলি ব্রিজের বেহাল দশা, পারাপারের প্রতি পদে ঝুঁকি

নাজুক এই ব্রিজটির ওপর দিয়ে প্রতিদিন পথচারীদের পাশাপাশি শত শত হালকা ও ভারী যানবাহন চলাচল করছে। ঘটছে ছোট-খাটো দুর্ঘটনা। বাড়াচ্ছে আরও বড় দুর্ঘটনার ঝুঁকি।
দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটি সংস্কারের পাশাপাশি ভুলুয়া খালের ওপর নতুন একটি পাকা সেতু তৈরির দাবি জানিয়ে আসছেন স্থানীয়রা। ছবি: আনোয়ারুল হায়দার/স্টার

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলী ইউনিয়ন ও লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী ভুলুয়া খালের উপর তৈরি বেইলি ব্রিজটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে অনেক আগেই। এখন এর পাটাতনে মরিচা ধরে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত।  

এ অবস্থায় নাজুক এই ব্রিজটির ওপর দিয়ে প্রতিদিন পথচারীদের পাশাপাশি শত শত হালকা ও ভারী যানবাহন চলাচল করছে। ঘটছে ছোট-খাটো দুর্ঘটনা। বাড়াচ্ছে আরও বড় দুর্ঘটনার ঝুঁকি।

স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের ভাষ্য, তারা দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটি সংস্কারের পাশাপাশি ভুলুয়া খালের ওপর নতুন একটি পাকা সেতু তৈরির দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু তাদের সে চাওয়া আজ অবধি পূরণ হয়নি।

রামগতি উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ৮০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩ মিটার প্রস্থের এই বেইলি ব্রিজটি নির্মিত হয়েছিল ৩০ বছর আগে। অনেকদিন যাবৎ এর কোনো সংস্কার হয়নি। সুবর্ণচর উপজেলা থেকে লক্ষীপুরের রামগতি উপজেলায় যাওয়ার ক্ষেত্রে এই ব্রিজ ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই।

পারাপারের প্রতি পদেই ঝুঁকি। ছবি: স্টার

রামগতি উপজেলার চর আফজল গ্রামের অটোরিকশা চালক রাকিব (৩০) জানান, অনেকদিন ধরেই তারা যাত্রী নিয়ে এই ব্রিজ পার হতে পারেন না তারা। এতে অটেরিকশার চাকা মরিচা ধরা পটাতনের ফাঁক গলে আটকে যায়, যে কোরণে এই এলাকার অটোরিকশা চালকদের আয় অর্ধেকে নেমে এসেছে।  

গত বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই খুব ধীরে ধীরে ব্রিজের ওপর দিয়ে সিএনজি চালিত অটোরিকশার পাশাপাশি মালবাহী পিকআপ ভ্যান ও ট্রাক চলাচল করছে। একইভাবে পার হচ্ছেন পথচারীরা।

সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ খসরু বলেন, 'ব্রিজের মরিচা ধরা পাটাতন ও রেলিং ভেঙে এর ওপর দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন যেকোনো সময় গভীর খালে পড়ার আশঙ্কা আছে। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী এই বেইলি ব্রিজটি ভেঙে নতুন একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসলেও তা আমলে নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।'

ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ভারি যানবাহন। ছবি: স্টার

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় লক্ষ্মীপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের রামগতি উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, 'বেইলি ব্রিজটি সংস্কারের জন্য ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে যত দ্রুত সম্ভব দরপত্র আহ্বান করা হবে।'

এর পাশাপাশি এখানে নতুন একটি সেতু নির্মাণের জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

Comments