ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা এক মাস পেছানোর দাবি ব্যবসায়ীদের

ছবি: টিটু দাস/স্টার

ইলিশের নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২২ দিন ইলিশ রক্ষা অভিযানের অংশ হিসেবে মা ইলিশ ধরা ও বিক্রি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও এই অভিযান পেছানোর দাবি জানিয়েছেন বরিশালের ইলিশ ব্যবসায়ীরা।

আজ সোমবার সকাল ১১টায় বরিশালের পোর্ট রোড জেলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল সদর থানা মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশন এ দাবি জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল সদর থানা মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর সিকদারের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাধারণ সম্পাদক মো. নিরব হোসেন টুটুল।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, 'জলবায়ু পরিবর্তনসহ প্রাকৃতিক নানা কারণে ইলিশ মাছের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এবার ইলিশের সরবরাহ গত ১০ বছরের চেয়ে কম। বিগত বছরের মতো এ বছরও সাগর উত্তাল থাকায় জেলেরা সাগরে মাছ শিকার করতে পারেনি। প্রাকৃতিক কারণে এ বছর মাছের মৌসুমে প্রতিটি অমাবশ্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে সাগরে সতর্কতা সংকেত থাকায় জেলেরা সাগরে মাছ ধরতে যেতে পারেনি। এ ছাড়া প্রাকৃতিক কারণে ইলিশ মাছের এখনো ডিম না আসায় এই নিষেধাজ্ঞা কোনো কাজে লাগবে না। এমন পরিস্থিতিতে এ বছর শুধু বরিশাল মোকামে শত কোটি টাকা লোকসানের আশঙ্কা করছি।'

তিনি আরও বলেন, 'এরমধ্যে আবার আগামী ১২ অক্টোবর থেকে নিষেধাজ্ঞার বদলে আগামী ১২ নভেম্বর থেকে শুরু করার অনুরোধ জানাচ্ছি।'

এ ছাড়া সরকারের ইলিশ রপ্তানি কার্যক্রম আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, 'নিষেধাজ্ঞা থাকলে মাছ রপ্তানিতে সমস্যা হবে। এ ছাড়া রপ্তানি না হলে চোরাচালানের মাধ্যমে ইলিশ বিদেশে গেলে দেশ বৈদেশিক মুদ্রা থেকে বঞ্চিত হবে।' 

বক্তারা আরও জানান, তারা এই আবেদন সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে আজই পৌঁছে দেবেন।

দেশের বাজারে ইলিশের দাম বেশি হলেও মাত্র ১০ ডলারে এই রপ্তানি কেন? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে বক্তারা বলেন, 'দেশীয় বাজারে বিভিন্ন সাইজের মাছ আমরা পাঠিয়ে থাকি। এ ছাড়া আগামীতে দাম কমবে বলে আমরা আশা করছি।'

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বরিশাল সদর থানা মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, কোষাধ্যক্ষ মো. ইয়ার হোসেন, সদস্য মো. নাসির উদ্দিন, শেখ রিপন, মো. গণি সিকদার, মো. আইউব আলীসহ অনেকে।

এদিকে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বরিশালের পোর্ট রোড বাজারে খুব সামান্য পরিমাণে ইলিশ মাছ দেখা গেছে। এরই মধ্যে চলছে রপ্তানি ইলিশের প্রস্তুতি। মাছের সরবরাহ কম থাকায় দেশীয় বাজারে এক কেজির মাছ ১ হাজার ৮০০ টাকা ও ৭০০ থেকে ৯০০ গ্রামের মাছ ১ হাজার ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মৎস্য শ্রমিক মো. হালিম জানান, ভাদ্র মাসের এই সময়ে গত ৪০ বছরের মধ্যে এত কম মাছ দেখিনি।

বিভাগীয় মৎস্য অফিসের উপপরিচালক নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস জানান, এ বছর মাছের ডিম এখনো আসেনি এটা সত্য। ভোলাসহ বিভিন্ন এলাকার জেলেরা  সভা করে নিষেধাজ্ঞা পিছিয়ে দেওয়ার দাবি করেছে। আমরা এই প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে নিষেধাজ্ঞার জন্য প্রস্তাব দিলেও জাতীয়ভাবে কার্যকর করতে পারিনি। 

ইলিশ গবেষক আনিসুর রহমান বলেন, 'ইলিশ ডিম ছাড়ে পূর্ণিমা ও অমাবশ্যা ঘিরে। সে কারণেই এই নিষেধাজ্ঞা, এটি পিছিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Yunus places 7-point roadmap for Rohingya repatriation

'Time for action now,' he says at dialogue on Rohingya crisis in Cox’s Bazar

30m ago