রাজধানী প্রায় ফাঁকা

মোড়ে মোড়ে পুলিশি পাহারা
চিত্রটি আগারগাঁওয়ের আজ সকাল ১১টার। ছবি: মামুনুর রশীদ/স্টার

প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের সমাবেশ ঘিরে আজ শনিবার রাজধানী ঢাকায় গণপরিবহন নেই বললেই চলে। ব্যক্তিগত গাড়িও তেমন চলছে না। সড়কে লোকজনও কম।

আজ সকাল থেকে রাজধানীর কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, মিরপুর-১০, আসাদগেট, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর ও মগবাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদক জানান, হাতেগোনা কিছুসংখ্যক বাস রাজধানীর সড়কে চলতে দেখা গেছে। ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যাও কম। অল্প কিছু সংখ্যক মানুষকে যাওয়া-আসা করতে দেখা গেছে। যানবাহনের মধ্যে রিকশাই বেশি চলাচল করছে।

বাংলামোটর মোড়ে কথা হয় ব্যবসায়ী রকিবুল ইসলামের সঙ্গে। ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'ব্যবসার কাজে সদর ঘাটের দিকে যাব। কিন্তু ৩০ মিনিট দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো যানবাহন পাচ্ছি না।'

ডেইলি স্টার প্রতিবেদক আরও জানান, ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ফাঁকা দেখা গেলেও বিএনপির সমাবেশস্থল নয়াপল্টন ও আওয়ামী লীগের সমাবেশস্থল বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেট এলাকায় লোকসমাগম দেখা গেছে।

চিত্রটি কারওয়ান বাজারের আজ সকাল ১১টার। ছবি: মামুনুর রশীদ/স্টার

নয়াপল্টনের আশপাশের এলাকা থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের টুকরো টুকরো মিছিল নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে সমাবেশস্থলের দিকে আসতে দেখা গেছে। সমাবেশস্থলের আশপাশের এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

রাজধানীর এসব এলাকার মোড়ে পুলিশকে অবস্থান নিতে দেখা গেছে বলেও জানান ডেইলি স্টার প্রতিবেদক।

আজ নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপি এবং দুই কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে অবস্থিত বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

গতকাল রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) দুই দলকে তাদের প্রস্তাবিত দুই জায়গায় সমাবেশের এই অনুমতি দেয়।

ডিএমপি জানিয়েছে, ২০ শর্তে শনিবার দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিএনপিকে নয়াপল্টনে ও আওয়ামী লীগকে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেইটে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হলো।

রাজধানীর মোড়ে মোড়ে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। ছবি: মামুনুর রশীদ/স্টার

বিএনপি সমাবেশ করবে নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে। আর এর পরিপ্রেক্ষিতেই পাল্টা সমাবেশ করছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ, যার নাম তারা দিয়েছে 'শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ'।

বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, দলটির অধিকাংশ নেতাকর্মী এই সমাবেশে যোগ দিতে রাজধানীতে এসেছেন। তারা নিজেদের ব্যাপক জনপ্রিয়তা প্রদর্শন করে ক্ষমতাসীন দলকে বার্তা দিতে চান।

আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, তারা বিএনপির চেয়ে বড় সমাবেশ করে দেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তাদের জনপ্রিয়তা সম্পর্কে বার্তা দিতে চায়।

একই দিন মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সমাবেশের অনুমতি চাইলে তা পায়নি জামায়াতে ইসলামী। অনুমতি না পেলেও এক বিবৃতি তারা জানিয়েছে, যেভাবেই হোক তারা সমাবেশ করবে। জামায়াতে ইসলামী নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত দল নয়।

সমাবেশ ঘিরে গতকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশপথে নিরাপত্তা চৌকি বসিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। আজ সকাল থেকে তল্লাশি আরও জোরদার করা হয়েছে।

নয়াপল্টনের আশেপাশের এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে আসছেন। ছবি: মামুনুর রশীদ/স্টার

পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন করা হয়েছে দেড় হাজার র‌্যাব সদস্যকে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশকেও (এপিবিএন)।

গতকাল নয়াপল্টন এলাকায় ৬০টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছে ডিএমপি।

সমাবেশকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে আজ রাজধানীতে বাস চলাচলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে গতকাল জানিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি জানিয়েছে।

সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, 'শনিবার আমরা রাজধানীতে বাস চলাচল বন্ধের কোনো নির্দেশনা দেইনি।'

Comments