বাংলাদেশ
নারায়ণগঞ্জ

৯৩ টাকায় আমদানি করা পেঁয়াজ ২০০ টাকায় বিক্রি

‘বাজারে এখন যে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে, সেগুলো আগেই আমদানি করা। ভারতের নিষেধাজ্ঞার প্রভাব বাজারে এখনই পড়ার কথা না৷ কিন্তু ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেলেই দাম বাড়িয়ে দেন। এটা এখন আমাদের দেশে নিয়মিত অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
নারায়ণগঞ্জ শহরের বৃহত্তম পাইকারি ও খুচরা বাজার দিগুবাবুর বাজারে অভিযান চালায় কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন। ছবি: সংগৃহীত

দেশের অন্যান্য জেলার মতো নারায়ণগঞ্জের বাজারেও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। কেজি প্রতি ৯৩ টাকা ৩০ পয়সায় আমদানি করা পেঁয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়৷

আজ রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের বৃহত্তম পাইকারি ও খুচরা বাজার দিগুবাবুর বাজারে অভিযান চালিয়ে বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করায় ইউনুস বেপারী নামে এক ব্যবসায়ীকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট৷

র‌্যাব সদস্যদের সহায়তায় কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন যৌথভাবে এ অভিযান চালায়।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের কৃষি বিপণন কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, 'প্রথমে আমরা বাজারে পেঁয়াজের দাম পর্যবেক্ষণ করেছি। এরপর অভিযান চালাই। আমরা টাকার রসিদ সংগ্রহ করেছি এবং পেঁয়াজের দাম নিয়ে আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।'

রসিদ ও ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সাতক্ষীরা জেলার এক আমদানিকারক ৯৩ টাকা ৩০ টাকা দরে পেঁয়াজ আমদানি করে রাজধানীর শ্যামবাজারের ব্যবসায়ীদের কাছে ৫০ পয়সা কমিশনে বিক্রি করতে বলেন।

আতিকুল বলেন, 'কিন্তু শ্যামবাজারের ব্যবসায়ীরা প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন ১৫৬ টাকায়। নারায়ণগঞ্জের দিগুবাবুর বাজারে একই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফরাশিদ বিন এনাম এক ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছেন৷ এ ছাড়া, বাজারে বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি না করার জন্য সতর্ক করা হয়েছে।'

অভিযানকালে পেঁয়াজ ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল। তবে ক্রেতাদের দাবি, সরকারি কর্মকর্তারা চলে গেলেই ব্যবসায়ীরা আবারও দাম বাড়িয়ে ২০০ টাকার ওপরে উঠবেন। নিয়মিত মনিটরিং ছাড়া পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে না৷

নগরীর উত্তর চাষাড়া এলাকার বাসিন্দা খোরশেদ আলম বলেন, 'শনিবার পেঁয়াজ কিনেছি ১৮০ টাকা করে। অথচ, দুদিন আগেও ৯০ থেকে ১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছিল। বাজারে এখন যে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে, সেগুলো আগেই আমদানি করা। ভারতের নিষেধাজ্ঞার প্রভাব বাজারে এখনই পড়ার কথা না৷ কিন্তু ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেলেই দাম বাড়িয়ে দেন। এটা এখন আমাদের দেশে নিয়মিত অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে।'

কৃষি বিপণন কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম বলেন, 'খুচরা বিক্রেতারা অভিযোগ করেছেন যে পাইকারি ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ বিক্রির সময় সঠিক অর্থের রসিদ দেন না। এ কারণে আমদানি ও পাইকারি বাজার মূল্য বিবেচনায় পেঁয়াজের দাম কত হবে তা নিয়ে খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আলোচনা চলছে।'

Comments