নাশকতাকারীদের ক্ষমা নেই, শাস্তি ভোগ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

গণভবনে এফবিসিসিআইয়ের নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়কালে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে নাশকতা করছে তাদের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।

'তাদের জন্য কোনো ক্ষমা নেই। তাদের শাস্তি ভোগ করতে হবে। আমি জনগণকেও বলব তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে' হরতাল-অবরোধের নামে বিএনপি-জামায়াত চক্র গাজীপুরে রেললাইন উপড়ে ফেলার কারণে যে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা উল্লেখ করে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বুধবার গণভবনে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, 'যারা মানুষ মারার জন্য রেললাইন উপড়ে ফেলে বা রেললাইন কেটে দিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে মানুষ মারার কল্পনা করে বা জীবন্ত মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারে, এদের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ বলে কিচ্ছু নেই। এটা জনগণকেই প্রতিহত করতে হবে। সেটাই আমার আহ্বান সারাদেশের মানুষের প্রতি।'

'যারা রেললাইন কেটে দিয়ে বগি ফেলে দিয়ে মানুষ হত্যার পরিকল্পনা করে আর আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ায়, আর পিটিয়ে পিটিয়ে পুলিশ সাংবাদিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষকে মারে, মিছিলে মেয়েদের ওপর অত্যাচার করে এদের ক্ষমা নেই। এদের শাস্তি একদিন পেতেই হবে। জনগণকে বলব এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য', যোগ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আগের রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় গ্যাস কাটার মেশিন দিয়ে প্রায় ২০ ফুট রেল ট্র্যাক কাটার ফলে নেত্রকোনা থেকে আসা মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের ৮টি বগি গাজীপুরে লাইনচ্যুত হয়ে একজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'তার মানে কী? এর আগেও কয়েকবার এ ধরনের কাজ বিএনপি সন্ত্রাসীরা করেছে, সেটা সঙ্গে সঙ্গে ধরা পড়েছে। কাজেই আমরা সেখানে মানুষকে বাঁচাতে পেরেছি। কিন্তু এটা হয়েছে একেবারে ভোররাতের দিকে, সাড়ে ৪টার দিকে। গ্যাস সিলিন্ডারসহ, গ্যাস কাটার মেশিন দিয়ে এই রেললাইন কেটেছে। ওটা ফেলে চলে গেছে। ওটা উদ্ধার করেছে পুলিশ।'

তিনি বলেন, 'একটু চিন্তা করে দেখুন, কীরকম ধ্বংসাত্মক কাজ, এর নাম আন্দোলন। তার মানে হচ্ছে রেলের বগি ফেলে দিয়ে মানুষকে হত্যা করা। মানুষকে হত্যা করে সরকার উৎখাত করবে? মানুষ হত্যা করে আন্দোলন?'

শেখ হাসিনা বলেন, 'আমি জানি না এই আন্দোলন করে কী পাবে তারা। বিএনপি যে এই জ্বালাও-পোড়াও করে যাচ্ছে। প্রতিদিন তারা অবরোধ আর হরতাল ডেকে যাচ্ছে। হরতাল অবরোধ মানে কি কয়েকখান বাস পোড়ানো, গাড়ি পোড়ানো, যাত্রীসহ বাস পোড়ানো? চাল যাচ্ছে, চালের গাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে, ধান যাচ্ছে ধানের গাড়ি পোড়াচ্ছে। মানে মানুষকে ক্ষুধায় মারা। এই ঘটনা এর আগেও তারা করেছে ২০১৩ সালে। আমি জানি না তাদের কোনোমতে কেউ থামাতে পারবেন কি না। এই মানুষ হত্যা করে সরকার উৎখাত তো করতে পারবে না।'

বিএনপির রাজনীতির লক্ষ্য এবং আদর্শ নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেন তিনি।

তিনি বলেন, 'এই দেশে তারা কী রাজনীতি করে, তাদের দলটা কোথায়। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে দুর্ভাগ্য। যেখানে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, সারা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা, সেই সময় যদি এই ধরনের ঘটনা ঘটায় এ দেশের ভবিষ্যৎটা কী। সেটাই আমার প্রশ্ন।'

প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে বলেন, 'জনগণের কাছে যাবে, জনগণ যাকে ভোট দেবে, সে ক্ষমতায় আসবে। ক্ষমতা আঁকড়ে ধরার তো কোনো চেষ্টা আমাদের নেই। আমরা যতক্ষণ ক্ষমতায় আছি দেশের উন্নতি করছি এবং দেশে যে উন্নতি হয়েছে এটা তো কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। আজকে বাংলাদেশটা বদলে গেছে।'

তিনি বলেন, 'আমাদের তো হাওয়া ভবন নেই। কাউকে পাওনা দিয়ে ব্যবসা নিতে হয় না। ব্যবসায়ীরা স্বাধীনভাবে ব্যবসা করতে পারেন। অন্তত এইটুকু সুযোগ আমরা করে দিয়েছি। ২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের যাত্রা শুরু হবে।'

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বে ২০২৩ সালের আগস্টে নির্বাচিত ২০২৩-২০২৫ মেয়াদের জন্য নতুন কমিটি আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

এফবিসিসিআই জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী এবং তিন সহ-সভাপতি খায়রুল হুদা চপল, মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার ও যশোদা জীবন দেবনাথ নবনির্বাচিত কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English
government decision to abolish DSA

A law that gagged

Some made a differing comment, some drew a political cartoon and some made a joke online – and they all ended up in jail, in some cases for months. This is how the Digital Security Act (DSA) and later the Cyber Security Act (CSA) were used to gag freedom of expression and freedom of the press.

12h ago