পাউবোর জায়গায় গড়ে তোলা আ. লীগ নেতার রেস্তোরাঁসহ ৪৮ স্থাপনা উচ্ছেদ
লালমনিরহাটে অবশেষে ভেঙ্গে ফেলা হলো পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে তোলা আওয়ামী লীগ নেতার রেস্তোরাঁ 'বৈরালী'। লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানীতে তিস্তা ব্যারেজের পাশে গড়ে তোলা হয় এই অবৈধ স্থাপনা।
রেস্তোরাটি হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলের। এছাড়াও তিনি লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেনের একান্ত ব্যক্তিগত সচিব।
আজ এই রেস্তোরাঁটি ছাড়াও পাউবোর জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা আরও ৪৭টি অস্থায়ী স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন লালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টি এম এ মোমিন।
তিস্তা ব্যারেজে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদদৌলা দ্য ডেইল স্টারকে বলেন, ২০২১ সালের আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তিস্তা ব্যারেজ সংলগ্ন ফ্লাড বাইপাস সড়কের পাশে আওয়ামী লীগ নেতা আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল পাউবোর ৩০ শতাংশ জায়গা দখল করে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু করেন। কাজটি বন্ধ করার জন্য ওই বছরের ১১ আগস্ট তাকে নোটিশ দেওয়া হয়। কাজ বন্ধ না করায় পুনরায় ২৫ আগস্ট তাকে আবারও নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু এতেও তিনি কাজ বন্ধ করেননি। ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলের বিরুদ্ধে হাতীবান্ধা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু এতেও কোনো কাজ হয়নি। অবৈধ স্থাপনাটি উচ্ছেদের জন্য লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কাছে দুই দফায় ২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর এবং ২০২২ সালের ৬ জুন লিখিত আবেদন করা হয়।
আজ দুপুরে পাউবোর জায়গা থেকে এই অবৈধ স্থাপনাটি উচ্ছেদ করা হয়েছে, তিনি বলেন।
উচ্ছেদ প্রক্রিয়া বন্ধ করতে আওয়ামী লীগ নেতা শ্যামল নানাভাবে হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ আছে।
এ বিষয়ে জানতে আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলকে আজ একাধিকবার ফোন কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ঘটনাস্থলে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ সাংবাদিকদের জানান, তিস্তা ব্যারেজের পাশে পাউবোর জায়গায় গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযান সম্পন্ন করতে প্রশাসনের সবধরনের প্রস্তুতি ছিল।
Comments