পদ্মা সেতু প্রকল্পের নামে আনা পণ্য ‘অপব্যবহারের’ কথা স্বীকার করল সিনোহাইড্রো

পদ্মা সেতুর জন্য আনা এসব ক্রেনের কয়েকটি বিক্রি করে দেয় সিনোহাইড্রো। ছবি: স্টার

পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা পণ্য ফেরত না নিয়ে 'অপব্যবহার' করা হয়েছে বলে স্বীকার করেছে চীনা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড। 

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কারণ দর্শানো নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ জানুয়ারি সিনোহাইড্রো লিখিত জবাবে শুল্কমুক্ত ‍সুবিধার অপব্যবহারের কথা স্বীকার করে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফয়জুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, গত ৩১ ডিসেম্বর দ্য ডেইলি স্টার 'পদ্মা সেতু প্রকল্পের নামে আনা পণ্য বিক্রি করছে সিনোহাইড্রো' শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড শুল্কমুক্ত সুবিধায় গত ৯ বছরে প্রায় ১০৩ মিলিয়ন ডলার বা এক হাজার ১৪৫ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি, যানবাহন ও আনুষঙ্গিক পণ্য আমদানি করেছে। শর্ত ছিল, এসব পণ্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অনুমতি ছাড়া বাংলাদেশের কারও কাছে বিক্রি বা হস্তান্তর করা যাবে না। তা সত্ত্বেও কোম্পানিটি দেশের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে অনেক মালামাল বিক্রি করেছে এবং এখনো করছে।

পরে প্রতিষ্ঠানটিকে গত ৩ ও ৪ জানুয়ারি ৮টি চালানের জন্য পৃথক ৮টি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় কাস্টমস।

জবাবে সিনোহাইড্রো জানায়, পদ্মা বহুমুখী সেতু নদী প্রশিক্ষণ ওয়ার্কস প্রকল্পের জন্য পুনঃরপ্তানি শর্তে পণ্য আমদানি করার পর তা ফেরত নেয়নি তারা। 

তবে তাদের দাবি, এটি অনিচ্ছাকৃত ছিল এবং চীনে অবস্থিত প্রধান কার্যালয় দায়ীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছে। 

সিনোহাইড্রোর বক্তব্য, 'এটি দুঃখজনক যে আমরা উপরোক্ত বিষয়গুলো সময়মতো মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছি যার জন্য আমাদের প্রধান কার্যালয় দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। চীনে আমাদের সদর দপ্তর ও বাংলাদেশের স্থানীয় অফিসকে ভবিষ্যতে আরও সতর্ক হবে যেন ভবিষ্যতে এমন ভুল না হয়।' 

পণ্যগুলো পুনরায় রপ্তানি করতে ব্যর্থতার কারণ হিসেবে সংস্থাটি বলেছে, 'মূল প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় অনেক কর্মী চীনে চলে গেছেন। পণ্য খালাসের সঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত অনেকে চলে যাওয়ার সময় আমাদের প্রকল্প অফিসে সব তথ্য ও নথি হস্তান্তর করেননি। যার ফলে আমদানি অনুমতিপত্র মেয়াদ বাড়াতে ব্যর্থ হয়েছি।' 

পণ্য বিক্রি বা অপব্যবহারের বিষয়ে সিনোহাইড্রোর সঙ্গে ডেইলি স্টারের পক্ষ থেকে ইমেইলে যোগাযোগ করা হলেও, প্রতিষ্ঠানটি কোনো মন্তব্য করেনি।

জানতে চাইলে কমিশনার মোহাম্মদ ফয়জুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কাস্টমস থেকে ৮টি কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার পর তারা জবাব দিয়েছে। এখন কোম্পানির বিরুদ্ধে যে কোনো সময় দাবিনামা জারি করা হবে। কারণ তারা স্বীকার করেছে যে তারা পুনরায় রপ্তানি করেনি।'

সংশোধন: কাস্টমসের কাছে সিনোহাইড্রোর দেওয়া জবাবে পণ্য বিক্রি নয়, 'অপব্যবহারের' কথা উল্লেখ থাকায় শিরোনামটি পরিবর্তন করা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
NBR speeds up auction process of abandoned goods

NBR moves to speed up auction of abandoned goods

About 2 lakh tonnes of imported goods left abandoned at Chattogram port alone for years

2h ago