‘রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিকত্বসহ প্রত্যাবাসন চায় মিয়ানমার ঐক্য সরকার’

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি আয়োজিত ওয়েবিনারে ভার্চুয়ালি অংশ নেন মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্য সরকারের মুখপাত্র কিয়াও জাও। ছবি: সংগৃহীত :

রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব এবং অন্যান্য অধিকারসহ প্রকৃত প্রত্যাবাসন চায় মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি)।

ঐক্য সরকার বলছে, মিয়ানমারের জনগণ ও বিভিন্ন সম্প্রদায়সহ বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ। 

মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্য সরকার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ও উপদেষ্টা কিয়াও জাও আজ বুধবার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত মিয়ানমার সংকট বিষয়ক এক ওয়েবিনারে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন।

২০২১ সালে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেয় সামরিক বাহিনী।

কিয়াও জাও বলেন, 'জাতীয় ঐক্য সরকার সামরিক জান্তার পতন ঘটাবে। আমরা একটি ফেডারেল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করব।'

গত বছরের অক্টোবর থেকে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো চীন, ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বেশকিছু সামরিক ঘাঁটি ও শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ বাংলাদেশের জন্য গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। ইতোমধ্যে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে এবং সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যে এখনো মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে।

এছাড়াও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারতসহ বিশ্ব শক্তিগুলোর বিরোধপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ এ পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে।

২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পরে মিয়ানমারে ন্যাশনাল লিগ অফ ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেতারা সমান্তরালভাবে জাতীয় ঐক্য সরকার গঠন করে।

এ সরকারের মুখপাত্র কিয়াও জাও বলেন, 'কয়েক দশক ধরে সেনাবাহিনী কখনোই রোহিঙ্গাদের প্রকৃত প্রত্যাবাসন চায়নি। আমরা ক্ষমতায় ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে মিয়ানমারের সব মানুষের ন্যায়বিচার ও অধিকার নিশ্চিত করতে ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইনসহ সব বৈষম্যমূলক আইন সংশোধন করব।'

বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বিভেদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'ঐক্য সরকার সব জাতি ও অন্যান্য গোষ্ঠীর সঙ্গে সংলাপে বসবে এবং মিয়ানমারে ফেডারেল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে।'

কিয়াও জাও বলেন, 'মিয়ানমারকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হওয়া উচিত নয়।'

ওয়েবিনারে ইউনিভার্সিটির সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্সের সিনিয়র ফেলো ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, 'মিয়ানমারে চলমান অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে রোহিঙ্গা সংকট আরও তীব্র হচ্ছে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।'

এনএসইউর রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. রেমন্ড কুন-সান লাউ বলেন, 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় মিত্রদের নিষেধাজ্ঞা মিয়ানমারে সামরিক জান্তার অবস্থানের পরিবর্তন ঘটাতে পারবে না।'

এদিকে, বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্পের জন্য চীন এ অঞ্চলে তার স্বার্থ রক্ষার জন্য মিয়ানমারকে আয়ত্তে রাখার চেষ্টা করছে।

এসআইপিজির সিনিয়র ফেলো প্রফেসর শহিদুল হক বলেন, 'মিয়ানমার ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। কারণ মিয়ানমার দিয়ে ভারত আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে ভৌগোলিক যোগাযোগ রক্ষা করে।'

'সুতরাং, ভারত মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে চায়,' বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
Binimoy platform suspended by Bangladesh Bank

BB suspends Binimoy over irregularities

During the previous AL govt, it was developed by the IDEA under the ICT Division at a cost of Tk 65 crore.

10h ago