নারায়ণগঞ্জ

৪ মাসের বকেয়া না দিয়ে ‘বিনা নোটিশে’ ৫৬ কর্মী ছাঁটাই

মঙ্গলবার সকালে ফতুল্লায় কারখানায় গিয়ে ছাঁটাইয়ের নোটিশ দেখার পর বিক্ষোভ করেন তারা।
আজ মঙ্গলবার সকালে কারখানায় গিয়ে ছাঁটাইয়ের নোটিশ দেখতে পান কর্মচারীরা। ছবি: সংগৃহীত

বকেয়া ৪ মাসের বেতন পরিশোধ না করে 'বিনা নোটিশে' ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ক্রোনি অ্যাপারেলস লিমিটেডের অন্তত ৫৬ কর্মকর্তা-কর্মচারী। 

আজ মঙ্গলবার সকালে ফতুল্লার কাশীপুর ইউনিয়নের হাটখোলা এলাকায় কারখানাটির সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা।

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানা এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ে পৃথক লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন ছাঁটাই হওয়া কর্মীরা।

ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আযম দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কর্মচারীরা জানায়, মঙ্গলবার সকালে তারা অন্য দিনের মতো কর্মস্থলে গেলে কারখানার গেটে তাদের ছবি ও আইডি নম্বরসহ একটি নোটিশ দেখতে পান। 

নোটিশে বলা হয়, কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের চাকরিচ্যুত করেছে। তবে নোটিশে চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্তের কোনো কারণ দেখানো হয়নি।

চাকরিচ্যুত হয়েছেন কারখানাটির আইটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মাহাদী হাসান। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কোনো কারণ না জানিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের চাকরিচ্যুত করেছে। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গত ৪ মাসের বেতনও আমরা পাইনি। আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বলেছে যে, আমাদের শুধু ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন দেওয়া হবে। তারা আমাদের দুই মাস আগের তারিখের পদত্যাগপত্রে সই করার জন্য চাপ দিচ্ছে।'

চাকরিচ্যুত কারখানার স্টোর ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন বলেন, 'চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে কেউ কেউ এই প্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ বছর ধরেও চাকরি করছিলেন। শ্রম আইন অনুযায়ী চাকরিচ্যুত করার আগে আমাদের সব বকেয়া ও তিন মাসের অগ্রিম বেতন পরিশোধ করার কথা আছে। আমরা আইন অনুযায়ী ন্যায্য পাওনা পরিশোধের দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় প্রয়োজনে আমরা শ্রম আদালতে যাব।'

তবে ক্রোনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসলাম সানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কারখানার বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করে কয়েকজন কর্মচারী ছাঁটাই করা হয়েছে। তবে, কার কত পাওনা, তা আমরা হিসাব করছি। সব কর্মচারীর বকেয়া পরিশোধ করা হবে। তাদের আপাতত এক মাসের বেতন নিতে বলা হয়েছে। বাকিটাও পর্যায়ক্রমে দেওয়া হবে।'

জানতে চাইলে ওসি নুরে আযম বলেন, 'কর্মচারীরা ছাঁটাই ও বকেয়া দাবির বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

এর আগে, গত ২৪ ডিসেম্বর 'বিদেশি অর্ডার কমে গেছে' উল্লেখ করে ক্রোনি গ্রুপের আরেকটি কোম্পানি ক্রোনি টেক্স সোয়েটার লিমিটেডকে লে-অফ ঘোষণা করা হয়। প্রতিবাদে পরদিন সকালে কারখানার কয়েকশত শ্রমিক ঢাকা-মুন্সীগঞ্জ সড়কে বিক্ষোভ করে।

এরপর ৮ ফেব্রুয়ারি অন্তত ৭ হাজার শ্রমিক-কর্মচারীর বকেয়া পরিশোধ না করে একই গ্রুপের অবন্তী কালার লিমিটেড কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

Comments