কাজ একই, মজুরি অর্ধেক

কখনো কখনো দেখা যায় নারী শ্রমিকরা পুরুষদের তুলনায় বেশি কাজ করছেন। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

ফরিদা বেগম (৪৬) ও তার স্বামী কবিদুল ইসলাম (৫২) দুজনই কৃষি শ্রমিক। কৃষি জমিতে কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। বাড়ি লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা নদীর চর কালমাটি এলাকায়। প্রতিদিন একসঙ্গেই কাজ শুরু করেন তারা, কাজ শেষও করেন একসঙ্গে। দুজনের কাজ ও শ্রমের পরিমাণ একই হলেও মজুরি সমান নয়। 

কবিদুল দৈনিক মজুরি পান ৪০০ টাকা আর ফরিদা পান ২০০ টাকা।
 
'গ্রামে বিকল্প কোনো কাজ না থাকায় বাধ্য হয়েই কম মজুরিতে কৃষি শ্রমিক হিসেবে ফসলের ক্ষেতে কাজ করি। অর্ধেক মজুরিতে কাজ করতে না চাইলে গ্রামে কাজও পাওয়া যায় না। এমন না যে, আমি স্বামীর তুলনায় কম কাজ করি, তবুও স্বামীর মজুরি আমার চেয়ে বেশি', বলেন ফরিদা।

ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

ফরিদার স্বামী কবিদুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্রামে পুরুষ শ্রমিকের চেয়ে নারী শ্রমিকের সংখ্যা বেশি। কখনো কখনো দেখা যায় নারী শ্রমিকরা পুরুষদের তুলনায় বেশি কাজ করছেন। তবু তাদের অর্ধেক মজুরি দেওয়া হয়।'

এই গ্রামের অন্য নারীরাও মজুরি নিয়ে অসন্তোষ ও ক্ষোভ জানান।
 
একই চিত্র দেখা যায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার চর সোনাইকাজী গ্রামেও। এ গ্রামের নারী শ্রমিক মেহেরা বেওয়া (৫৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সমান কাজ করি অথচ মজুরি পাই অর্ধেক। এই মজুরি দিয়ে কোনোমতে সংসার চলে। দুজনই সমান মজুরি পেলে হয়ত ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করতে পারতাম।'

ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

চর সোনাইকাজী গ্রামের কৃষক আহাদ আলী (৬৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পুরুষ শ্রমিকরা ফসল পরিবহন করতে পারেন কিন্তু নারী শ্রমিকরা এটা পারেন না। এ কারণে নারী শ্রমিকরা অর্ধেক মজুরি পান। গ্রামে নারী শ্রমিকের সংখ্যা বেশি। ফসলের ক্ষেতে বেশিভাগ নারী শ্রমিকই কাজ করেন।'

এ বিষয়ে লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সৈয়দা সিফাত জাহান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নারী কৃষি শ্রমিকরা বহুকাল ধরে ন্যায্য মজুরি বঞ্চিত হচ্ছেন। ফসল বহন করা ছাড়া ফসলের ক্ষেতে সব কাজই নারী শ্রমিকরা করেন। নারী শ্রমিকদের কম মজুরি দেওয়াটা সমাজে প্রচলিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। নারী শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ হলে তারা তাদের অধিকার আদায় করতে পারবে বলে মনে করি।'
 

Comments

The Daily Star  | English

Economist Abul Barkat held in corruption case

Prof Abul Barkat was the chairman of state-owned Janata Bank PLC

7m ago