নরসিংদীতে আ. লীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষে আহত অন্তত ১৬

সংঘর্ষের সময় বেশকিছু বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন।

আজ বুধবার সকালে সদর উপজেলার চরাঞ্চলের আলোকবালী ইউনিয়নের বাখরনগর, মুরাদনগর ও বকশালীপুর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আসাদ উল্লাহর সমর্থকদের সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দিপুর সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানা গেছে।

সংঘর্ষে আসাদ উল্লাহ সমর্থকদের ১২-১৪টি বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে সংঘর্ষের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। 

জানুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী নজরুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুজ্জামানের পক্ষে-বিপক্ষে সমর্থন দেওয়া নিয়ে দুই গ্রুপের বিরোধ আরও বেড়ে যায়। 

এ নিয়ে দফায় দফায় দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হলে নৌকার সমর্থক দীপুর লোকজন আসাদ উল্লাহ গ্রুপের ১৫-২০ জন সমর্থককে এলাকা ছাড়া করে। 

আজ বুধবার সকালে এলাকা ছাড়া হওয়া আসাদ উল্লাহর সমর্থকরা বাখরনগর গ্রামে ফিরে এলে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। পরে একযোগে তিন গ্রামজুড়ে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

এ সময় রাবার বুলেটবিদ্ধ ও মারধরে অন্তত ১৬ জন আহত হয়। আহতরা হলেন-মনির উদ্দিন (৫৩), বজলুর রহমান (৪৫), আব্দুর রহমান (২২), মাহফুজ মিয়া (২০), শীতল মিয়া (৫০), খোকা মিয়া (৬৫), সজিব মিয়া (২৫), মুরাদ মিয়া (২২), আল মাসুদ (১৮), ওবায়দুল (২৬), রমজান মিয়া (২৫), মোজাম্মেল হক (১৮), আমজাদ মিয়া (২০), সাইফুল ইসলাম (১৭), মামুন মিয়া (১৬) এবং মোমেন মিয়া (৪৬)।

তাদের নরসিংদী সদর হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

যোগাযোগ করা হলে আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আসাদ উল্লাহ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক সরকার হত্যার আত্মস্বীকৃত আসামী ও ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব আব্দুল কাইয়ুম, সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপু জোট বেঁধে আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালিয়ে ৬ জনকে গুলি করে আহত করেছে।'

সংসদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুজ্জামানের পক্ষে কাজ করেছিলেন বলে জানান। তার অভিযোগ, নির্বাচনের পর তার পক্ষের ২০ জনকে বাড়িছাড়া করা হয়।

তিনি আরও বলেন, 'আগের ধারাবাহিকতায় তারা ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের নিয়ে অতর্কিত হামলা করে আমার কর্মী-সমর্থকদের বাড়িছাড়া করেছে।'

যোগাযোগ করা হলে দেলোয়ার হোসেন দিপু গ্রুপের নেতা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোমেন মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আসাদ উল্লাহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে আইনের মারপ্যাঁচে ফেলে দীর্ঘদিন ধরে অযথা হয়রানি করছেন। গত সপ্তাহে আমার নামেও মিথ্যা অপহরণ মামলা করেছেন। তার মামলা, হামলা ও অত্যাচার থেকে বাঁচতে সাধারণ লোকজন তাদের প্রতিহত করে এলাকা থেকে বের করে দিয়েছে।'

এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি। 

ওসি তানভীর আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এ ঘটনায় কোনো পক্ষ এখনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। কাউকে এখনো আটক করা যায়নি।'

Comments

The Daily Star  | English

Healthcare reform begins, service yet to improve

The health administration initiated a series of reforms to improve medical care but struggled to implement them, say health experts

8h ago