জিম্মি এমভি আব্দুল্লাহ থেকে সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানালেন এক নাবিক

জলদস্যুদের হাতে জিম্মি এমভি আব্দুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

সোমালিয়া উপকূলে পৌঁছানোর পর জলদস্যুরা জিম্মিকৃত এমভি আবদুল্লাহর ক্রুদের জাহাজের ব্রিজ থেকে কেবিনে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন জাহাজটির একজন নাবিক।

আজ বৃহস্পতিবার নিজের ছোট ভাইকে পাঠানো এক ভয়েস মেসেজে এ কথা জানান তিনি। নিরাপত্তাজনিত কারণে তার ও পরিচয় আমরা প্রকাশ করছি না।

মঙ্গলবার দুপুরে জলদস্যুরা জাহাজটি জিম্মি করার পর থেকে ২৩ জন ক্রু সদস্যকে জাহাজের ব্রিজ রুমে বন্দি করে রাখা হয়েছিল।

ভয়েস মেসেজের শুরুতে ওই নাবিক বলেন, 'কেমন আছো তোমরা? আমরা আছি, আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি, সুস্থ আছি। কিন্তু মানসিকভাবে একটু বিপর্যস্ত। আমরা যে সবাই ব্রিজে ঘুমাই একসঙ্গে, এরকম তো আমাদের অভ্যাস নেই। তারপরও এভাবে চলছি। একটা ওয়াসরুম ব্যবহার করি সবাই।'

নাবিকের ছোট ভাই দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আজ বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে ভয়েস মেসেজ পেয়েছেন তিনি।

ভয়েস মেসেজে নাবিক বলেন, 'গতকাল একটা নেভি জাহাজ এসেছিল। আজকেও একটা নেভি জাহাজ এসেছিল। মোট দুটি সুসজ্জিত জাহাজ আমাদের রেসকিউ করতে চেয়েছিল।'

'কিন্তু, এটা সম্ভব না' জানিয়ে তিনি বলেছেন, 'কারণ, তখন ওরা (জলদস্যুরা) আমাদের জিম্মি করে রাখে, আমাদের মাথায় বন্দুক ধরে রাখে। নেভির বড় বড় ফ্রিগেট দেখেই ওরা আমাদের জিম্মি করে। এসব বড় জাহাজ দেখেও ওরা ভয় পায় না। কারণ, আমাদের জিম্মি করে রাখে।'

এখন পর্যন্ত জলদস্যুরা কাউকে আঘাত করেনি উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, 'তবে, আমি যেখানে ঘুমাই সেখানে পাশ ফিরলেই দেখতে পাই যে আমার দিকে বড় বড় মেশিনগান তাক করে রেখেছে। এই অবস্থায় ঘুম যা হওয়ার হচ্ছে। তারপরও মানসিকভাবে চাপে থাকলেও সুস্থ থাকার চেষ্টা করছি।'

জাহাজে থাকা খাবার তাদের সঙ্গে জলদস্যুরাও খাচ্ছে এবং এর ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যে তা শেষ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, 'আলহামদুলিল্লাহ, এখনো খাবার আছে। কিন্তু, যেহেতু জলদস্যুরাও আমাদের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করছে, আমাদের পানি ব্যবহার করছে, আমাদের খাবার আর কতদিন যাবে সেটা বলতে পারছি না। আর হয়তো ১০-১৫ দিন বড়জোর যেতে পারে। এরপর খাবার শেষ হয়ে গেলে আমরা খুব কষ্টে পড়ে যাব। পানি শেষ হয়ে গেলে খুব কষ্টে পড়ে যাব।'

সোমালিয়া উপকূলে পৌঁছানোর পর ক্রু সদস্যদের সঙ্গে জলদস্যুদের ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে জানিয়ে ভয়েস মেসেজে তিনি বলেন, 'আজকে আমরা সোমালিয়া এলাম। ওদের সঙ্গে আমাদের একটু ভালো রিলেশন হয়েছে। ওদের বলে কয়ে আমরা একটু কেবিনে এলাম। কিন্তু আবার ব্রিজে চলে যেতে হবে।'

তিনি বলেন, 'মানসিকভাবে আল্লাহ যে কদিন ভালো রাখেন আরকি। তোমরাও ভালো থেকো। সবাইকে দোয়া করতে বলো, আমরা যেন নিরাপদে আসতে পারি। আল্লাহ যেন আমাদের সময়টা সহজ করে দেন রোজার উসিলায়।'

সরকার ও জাহাজের মালিকপক্ষ তাদের উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছে এবং গণমাধ্যম নিয়মিত তাদের খবর প্রকাশ করছে বলে খানিকটা আশ্বস্ত রয়েছেন বলে জানা যায় তার ভয়েস মেসেজ থেকে।

তিনি বলেন, 'আমি আশা করি শিগগির পরিবারের কাছে ফিরে যেতে পারব। ঈদের আগে যেন পরিবারের কাছে ফিরে যেতে পারি, সেটাই আমরা চাই।'

 

Comments

The Daily Star  | English
cyber security act

A law that gagged

Some made a differing comment, some drew a political cartoon and some made a joke online – and they all ended up in jail, in some cases for months. This is how the Digital Security Act (DSA) and later the Cyber Security Act (CSA) were used to gag freedom of expression and freedom of the press.

5h ago