ড. ইউনূসের সঙ্গে প্যারিস অলিম্পিক আয়োজকদের আলোচনা

প্যারিসের মনোরম সিটি হলে বক্তব্য রাখছেন প্রফেসর ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

শান্তিতে নোবেল জয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস সামাজিক ব্যবসাভিত্তিক অলিম্পিকের অগ্রগতি নিয়ে বিভিন্ন ফোরাম ও বৈঠকে আলোচনা করেছেন তার সাম্প্রতিক ফ্রান্স সফরকালে।

আজ মঙ্গলবার ইউনূস সেন্টারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০-২২ মার্চ ফ্রান্সের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে তিনি ক্ষুদ্রঋণ, দারিদ্র দূরীকরণে ক্রীড়ার গুরুত্বপূর্ণ শক্তি এবং প্যারিস অলিম্পিক ২০২৪ আয়োজনে সামাজিক ব্যবসার ভূমিকা নিয়ে নিজের রূপকল্প তুলে ধরেন।

২১ মার্চ ইউরোপের অন্যতম বৃহত্তম ব্যাংক বিএনপি পারিবাসের আমন্ত্রণে এক বিশেষ আয়োজনে বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ইউনূস। প্যারিস ইমপ্যাক্ট নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন ব্যাংক ও ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের ৫০ জনের বেশি ফরাসি বিশেষজ্ঞ এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি পারিবাস এনগেজমেন্টের প্রধান এবং বিএনপি পারিবাস নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যান্টোনিও সায়ার। বক্তব্য শেষে তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ড. ইউনূস।

প্যারিসের মেয়র অ্যান হিদালগো হোটেল দ্য ভিলে নিজ কার্যালয়ে প্রফেসর ইউনূসকে অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন। ছবি: সংগৃহীত

একই দিন সকালে প্রফেসর ইউনূস সেনেগালে যুব বেকারত্ব অবসানে সেদেশে প্রফেসর ইউনূস উদ্ভাবিত মডেলে একটি 'নবীন উদ্যোক্তা কর্মসূচি' চালুর লক্ষ্যে গ্রামীণ ট্রাস্ট, ইউনূস ফ্রান্স এবং গ্রামীণ ক্রেডিট এগ্রিকোল মাইক্রোফাইনান্স ফাউন্ডেশনের মধ্যে সম্পাদিত একটি চুক্তিতে সই করেন।

একই দিন প্রফেসর ইউনূস ফ্রেঞ্চ ন্যাশনাল অলিম্পিক অ্যান্ড স্পোর্টস কমিটির সংগঠন ল্য স্পোর্ট অ্যা দ্যু কোর অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত 'স্পোর্টস অ্যান্ড পোভার্টি ফোরামে' সম্মানিত অতিথি হিসেবে যোগ দেন। ক্রীড়াবিদ, সমাজবিজ্ঞানী, চিকিৎসক, মনোবিজ্ঞানী, ক্রীড়া শিক্ষাবিদ, বিভিন্ন সংগঠনের নেতা ও জনপ্রতিনিধি এবং ক্রীড়া ফেডারেশনের প্রতিনিধিরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

ড. ইউনূস তার ভাষণে বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক সমস্যা, বিশেষ করে দারিদ্র মোকাবিলায় ক্রীড়ার রূপান্তরকারী শক্তির ওপর জোর দেন। সামাজিক ব্যবসা ও ক্রীড়ার সম্মিলিত শক্তির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রফেসর ইউনূস দারিদ্র মোকাবিলায় ক্রীড়ার শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে তার উদ্ভাবনশীল ধারণা তুলে ধরেন।

এরপর প্রফেসর ইউনূস প্যারিস অলিম্পিক ২০২৪ প্রোগ্রামে অংশ নেন। প্যারিসের মেয়র অ্যান হিদালগোর নেতৃত্বে এই ঐতিহাসিক অলিম্পিকের লক্ষ্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সহায়ক অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক গেমসের আয়োজন করা।

লা ক্যানোর মহাপরিচালক এলিসা ইয়াভচিজ প্রফেসর ইউনূসকে প্যারিস ২০২৪ অলিম্পিকের সামাজিক খাতে অংশগ্রহণের ওপর ব্রিফ করছেন। লা ক্যানো প্যারিস ২০২৪ অলিম্পিকে সামাজিক খাতের অংশগ্রহণ বাস্তবায়নের দায়িত্বে নিয়োজিত। ছবি: সংগৃহীত

অনুষ্ঠানের সভাপতি মেয়র হিদালগো এবং লা ক্যানোর প্রধান নির্বাহী এলিসা ইয়াভচিজসহ প্যারিসের মনোরম সিটি হলে উপস্থিত আট শতাধিক অতিথি প্যারিস ২০২৪ অলিম্পিক ডিজাইনে প্রফেসর ইউনূসের অবদানকে অভিনন্দন জানান।

চার শতাধিক সামাজিক ব্যবসা এরই মধ্যে অলিম্পিক গেমসকে বিভিন্ন সেবা দিতে শুরু করেছে বা সেবা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। নির্মাণ সাইটগুলোতে এর মধ্যে ২৬ লাখ ঘণ্টা সামাজিক অঙ্গীভূতকরণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং অনেক সামাজিক ও পরিবেশবাদী উদ্ভাবন এই বিশাল কর্মযজ্ঞে স্থান করে নিতে পেরেছে।

বিএনপি পারিবাস ও প্যারিস ইমপ্যাক্ট নেটওয়ার্কের বিশেষজ্ঞদের কাছে ক্ষুদ্রঋণের ভবিষ্যৎ নিয়ে অন্তর্দৃষ্টি তুলে ধরছেন প্রফেসর ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

২২ মার্চ প্রফেসর ইউনূস ডেকাথলনের প্রধান নির্বাহী বারবারা মার্টিন-কোপোল্লা এবং প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাঁ পিয়ার হ্যামারলাইনের আমন্ত্রণে ফ্রান্সের লিল নগরে অবস্থিত ডেকাথলনের সদর দপ্তর পরিদর্শন করেন। কোম্পানিটির কর্মচারীদের সাধারণ সভায় তাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দানকালে তিনি বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা মোকাবিলায় ক্রীড়ার সামাজিক শক্তির ওপর জোর দেন এবং এই পরিপ্রেক্ষিতে ইউনূস স্পোর্টস হাব, ডেকাথলন ফাউন্ডেশন ও ডেকাথলনের মধ্যকার সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন।

ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া অলান্ড প্যারিসে তার কার্যালয়ে প্রফেসর ইউনূসকে স্বাগত জানাচ্ছেন। ছবি: সংগৃহীত

প্যারিস সফরকালে প্রফেসর ইউনূস ফ্রান্সের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া অলান্ডের আমন্ত্রণে তার সঙ্গে বৈঠক করেন। তাদের বৈঠকে বিভিন্ন বৈশ্বিক উদ্যোগ, বিশেষ করে প্যারিস অলিম্পিক ২০২৪ নিয়ে আলোচনা হয়।

এ ছাড়া, প্রফেসর ইউনূস তার দীর্ঘদিনের বন্ধু আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন লেখক ও প্রাক্তন ফরাসি প্রেসিডেন্ট মিতেরার  বিশেষ উপদেষ্টা জ্যাক আটালির সঙ্গে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মতবিনিময় করেন।

Comments

The Daily Star  | English
cyber security act

A law that gagged

Some made a differing comment, some drew a political cartoon and some made a joke online – and they all ended up in jail, in some cases for months. This is how the Digital Security Act (DSA) and later the Cyber Security Act (CSA) were used to gag freedom of expression and freedom of the press.

5h ago