বৃষ্টির জন্য ব্যাঙের বিয়ে

গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্যাঙের বিয়ের অনুষ্ঠান চলে।
ব্যাঙের বিয়ে, বৃষ্টির আশা, তীব্র তাপপ্রবাহ, ঐতিহ্য,  রাজশাহী,
বৃষ্টির আশায় রাজশাহীর পুঠিয়ার তাতারপুর গ্রামে ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করে গ্রামবাসী। ছবি: সংগৃহীত

চলমান তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে স্বস্তি পেতে বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে রাজশাহীতে।

পুঠিয়া উপজেলার তাতারপুর গ্রামে গতকাল ঐতিহ্যবাহী এ অনুষ্ঠান পালন করে গ্রামবাসী।

দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এ অনুষ্ঠানে শতাধিক গ্রামবাসী অংশ নেয়।

তারা দুটি পুরুষ ও স্ত্রী ব্যাঙ ধরে তাদের বিয়ে দেয়। 

গ্রামবাসীরা পুরো সময় 'আল্লাহ মেঘ দে পানি দে ছায়া দে রে তুই' গেয়ে নেচেছেন। অনুষ্ঠানের সময় রঙ খেলাও হয়।

সন্ধ্যায় তারা বিবাহিত ব্যাঙগুলোকে কলাপাতার বাক্সে নিয়ে পুরো গ্রামে ঘুরে বেড়ান। এসময় গ্রামবাসীদের কাছ থেকে চাল, ডাল, মুরগি ও মসলা সংগ্রহ করে রাতের খাবারের আয়োজন করা হয়।

ব্যাঙের বিয়ের অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক ছিলেন স্থানীয় তরুণী হাবিবা খাতুন এবং তাকে সহযোগিতা করেন তার পরিবারের সদস্যরা ও গ্রামবাসী।

হাবিবা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রচণ্ড গরমে আমরা পরিবারের সদস্যরা ২০০৮ সালের একটি ঘটনার কথা স্মরণ করছিলাম। সে বছর গ্রামবাসীরা দুটো ব্যাঙের বিয়ে দিয়েছিল এবং পরদিন বৃষ্টি হয়।'

'তাই আমরা বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেই,' বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, 'আমরা অনুষ্ঠান করার পর এখনো বৃষ্টি হয়নি। কিন্তু রাজশাহীতে মেঘ জমে ইতোমধ্যে গরম কমেছে।'

হাবিবার চাচা ইউসুফ আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বৃষ্টি না হওয়ায় গ্রামবাসী নলকূপে পানি পাচ্ছে না। খাবার পানি, সেচের পানি যোগাড় করতে কষ্ট হচ্ছে, পুকুর শুকিয়ে গেছে, আম ও লিচু ঝরে পড়ছে।'

'বৃষ্টি হবে কি না, জানি না। কিন্তু আমরা পুরো দেশে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেছি। আমাদের পূর্বপুরুষরাও একই কাজ করতেন এবং আমরা তাদের অনুসরণ করলাম,' বলেন তিনি।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, পুরো এপ্রিল মাসের মধ্যে ১৪ এপ্রিল মাত্র ০ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয় এবং পরদিন থেকে এ অঞ্চলে তীব্র ও মাঝারি তাপপ্রবাহ চলছে।

আজ মঙ্গলবার শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং গত দুই দিন ছিল ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 


 

Comments