সারা দেশে আজ থেকে নো হেলমেট, নো ফুয়েল: কাদের

নো হেলমেট নো ফুয়েল
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

সারা দেশে আজ থেকে 'নো হেলমেট, নো ফুয়েল' কার্যক্রম চালুর নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ বুধবার সকালে রাজধানীর বনানীতে বিআরটিএর সদর দপ্তরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ আইন ২০১৭ অধীনে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম বৈঠকে তিনি এ নির্দেশ দেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'ঈদের আগের চেয়ে ঈদের পরে দুর্ঘটনা বেশি এবং মর্মান্তিক কিছু দুর্ঘটনা হয়েছে। এগুলো মন্ত্রী নয়, মানুষ হিসেবে আমাদেরকে কষ্ট দেয়।'

তিনি বলেন, 'এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছি এত দিন। এ বছর ঈদে যে যানজট এবং দুর্ঘটনা, আগামী বছর এর চেয়ে কম হবে সেটিই তো টার্গেট। তার পরের বছর আরও কম হবে। (সেটা যদি না হয়) তাহলে আমরা এখানে কাজ করছি কেন! আমাদের টিম ওয়ার্কের সফলতাটা কোথায়?'

ইতোমধ্যে নেওয়া নানা উদ্যোগ ও পরিকল্পনা প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, 'এগুলোর রেজাল্ট তো পাচ্ছি না! রেজাল্ট না পেলে এগুলো করে কী লাভ! রেজাল্ট তো পাচ্ছি না। কথা তো শুনতে হয় আমাকে। বিআরটিএ (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ) চেয়ারম্যানকে তো কেউ কিছু বলবে না।'

তিনি বলেন, 'এত রাস্তা বাংলাদেশে, সীমান্ত এলাকা পর্যন্ত এবং সমতল থেকে পাহাড়ে আজকে রাস্তা, যে দিকে যান সুন্দর সুন্দর রাস্তা। এত রাস্তা হওয়ার পরেও শৃঙ্খলা আসে না কেন? শৃঙ্খলা না থাকলে এসবের রেজাল্ট আমরা তো পাব না।'

দুর্ঘটনা নিয়ে নানা কথা আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'অন্যান্য দেশের হিসাব করেন, কত দুর্ঘটনা কোন দেশে হয়। আজকে সৌদি আরবের আবুধাবিতে দুর্ঘটনায় দেড়শ-পৌনে ২০০ লোক মারা যায়, সেটা নিয়ে কিন্তু কোনো উচ্চবাচ্য ওইসব দেশেও হবে না।

'আমাদের এখানে ক্যাজুয়ালটি বেশি হচ্ছে। কারণ হলো মোটরসাইকেল-ইজিবাইকের মতো গাড়ি রাস্তায় চলাচল করছে। একটি ইজিবাইকে আট থেকে ১০ জন লোক থাকে, একটি বড় গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগলে ইজিবাইকের সব মারা যায়। তখন ক্যাজুয়ালটি বেড়ে যায়,' বলেন তিনি।

মোটরসাইকেল ইদানিং আরেক উপদ্রব—উল্লেখ করে কাদের বলেন, 'আজকে ঢাকা সিটিতে আমরা মোটরসাইকেল অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করেছি। এখানে হেলমেট ছাড়া নরমালি দেখা যায় না, সবাই হেলমেট পরে এবং দুইজন (আরোহী থাকেন)।'

মফস্বলে এই নীতি চালু করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'ডিসি-এসপিদের বলেন যে ওইসব এলাকায় কাউকে তেল দেওয়া হবে না যদি হেলমেট না থাকে।'

কাদের বলেন, 'খালি ঢাকা শহরে করলে তো হবে না, পুরো বাংলাদেশে করতে হবে নো হেলমেট, নো ফুয়েল। এই সিদ্ধান্ত আমরা নিলাম আজকে।' 

সভায় জানানো হয়, ঈদের পর থেকে প্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। পুরোনো গাড়ি রাস্তায় নামলে ধরা হচ্ছে, ডাম্পিং করা হচ্ছে। পুলিশের সমস্যা, তাদের কাছে গাড়ি রাখার জায়গা নেই।

ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন করেন, ৪৩ বছরের পুরোনো গাড়ি কীভাবে রাস্তায়  চলে?

জবাবে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী জানান, গাড়িগুলো লুকিয়ে রাখা হয়। শুক্রবার-শনিবার হঠাৎ করে বের করে।

তিনি আরও জানান, রামপুরা রোডে বিমানবন্দর থেকে সায়েদাবাদ যাওয়ার পথে শনিবার গাড়িগুলো বের হয়। এত খারাপ গাড়ি! দেখলে মনে হয়, কীভাবে রাস্তায় নামে। ঈদের সময় গাড়িগুলো নামে। ঈদযাত্রায় তিনটি বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে।

নুরী বলেন, একবার ঈদের সময় এত আনফিট গাড়ি নেমেছিল যে পুলিশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।

ওবায়দুল কাদের এগুলো বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। এছাড়া ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচল বন্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
Unhealthy election controversy must be resolved

Unhealthy election controversy must be resolved

Just as the fundamental reforms are necessary for the country, so is an elected government.

8h ago