‘জানি না ভাগ্যে কী আছে’

মালয়েশিয়া যেতে উড়োজাহাজের টিকিট ছাড়াই হাজারো মানুষ আজ শুক্রবার সকাল থেকে ঢাকার হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে ভিড় করেছেন। ছবি: রাশেদ সুমন/স্টার

রিক্রুটিং এজেন্সি সিন্ডিকেটের অনিয়মের কারণে চার বছর বন্ধ থাকার পর ২০২২ সালে বাংলাদেশিদের জন্য আবার মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্ত হয়। তখন আবার সিন্ডিকেট গঠিত হলে এর পরিপ্রেক্ষিতে গত মার্চে মালয়েশিয়া জানায়, দেশটি আপাতত আর শ্রমিক নেবে না। যারা অনুমোদন পেয়েছেন, ভিসা পেয়েছেন, তাদের ৩১ মের মধ্যে মালয়েশিয়ায় ঢুকতে হবে।

এরমধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে (রিক্রুটিং এজেন্সি) টাকা দেওয়া বহু মানুষ এখন বিপদে পড়েছেন। হাতে আর সময় না থাকায় উড়োজাহাজের টিকিট ছাড়াই তারা এখন বিমানবন্দরে এসে ভিড় করছেন।

তারা বিমানবন্দরের টার্মিনাল-১ ও টার্মিনাল-২ এর সামনে বসে রিক্রুটিং এজেন্সি কর্মীদের ডাকের অপেক্ষায় ছিলেন।

শ্রমিকরা জানান, তারা জমি বন্ধক রেখে ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে রিক্রুটিং এজেন্সিকে পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা দিয়েছেন।

তারা আরও জানান, মালয়েশিয়ায় পাঠানো হবে বলে দুই-তিন দিন আগে রিক্রুটিং এজেন্সি তাদের বিমানবন্দরে নিয়ে আসে। তবে সবচেয়ে খারাপ বিষয় হলো, এখন রিক্রুটিং এজেন্সির কর্মীরা তাদের ফোনই ধরছেন না।

মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য গত তিন ধরে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অপক্ষো করছেন ঝিনাইদহের মো. নুরুল ইসলাম।

আজ শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে একজন দালাল নুরুলকে আশ্বাস দেন যে, তিনি বিকেল ৫টার মধ্যে টিকিট ম্যানেজ করতে পারবেন এবং নুরুলকে বিমানবন্দরে অপেক্ষা করতে বলেন।

তবে বিকেল ৩টা ১১ মিনিটের দিকে যখন নুরুলের সঙ্গে দ্য ডেইলি স্টারের কথা হয়, কুয়ালালামপুর যাওয়ার সময়সীমা শেষ হতে কয়েক ঘণ্টা বাকি থাকলেও নুরুল তখনও টিকেট পাননি।
 
কাঁদতে কাঁদতে নুরুল বলেন, 'মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য দালালকে ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়েছি। রাত ১২টার আগে যেতে না পারলে আমি মহা বিপদে পড়ব।'

'জানি না ভাগ্যে কী আছে', বলেন তিনি।

নুরুলের মতো আরও হাজারো শ্রমিক নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কুয়ালালামপুরে যেতে বিমানবন্দরে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। যাদের অনেকে বিনা টিকিটেই বিমানবন্দরে এসেছেন।

দোহারের বাসিন্দা সাইদুল ইসলাম বলেন, 'ধার করে ও জমি বন্ধক রেখে মালয়েশিয়া যাওয়ার টাকা দিয়েছি। এখন যদি যেতে না পারি তাহলে ঋণ শোধ করব কী করে।'

মালয়েশিয়াগামী যাত্রীদের ভিড় সম্পর্কে জানতে চাইলে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক কামরুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, দুই দিন ধরে মালয়েশিয়াগামী যাত্রীর অনেক চাপ। বাড়তি চাপ সামলাতে নিয়মিত ফ্লাইটের পাশাপাশি অতিরিক্ত ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Divisions widen over July Charter’s status, implementation

Major political parties are divided over the July Charter’s implementation timeline

10h ago