পুলিশ হেফাজতে নারীর মৃত্যু, দোষীদের চিহ্নিত করার নির্দেশ এনএইচআরসির

যশোরের অভয়নগরে পুলিশ হেফাজতে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি)। এই ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করে আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবকে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

আজ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত 'যশোরে পুলিশ হেফাজতে নারীর মৃত্যু, 'নির্যাতনে হত্যার' অভিযোগ পরিবারের' শীর্ষক সংবাদটি আমলে নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সুয়োমটো অভিযোগ গ্রহণ করেছে।

গণমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে এনএইচআরসির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগের বিবরণে বলা হয়, যশোরের অভয়নগর উপজেলায় পুলিশ হেফাজতে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ তাকে ইয়াবা দিয়ে আটকের পর টাকা না পেয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেছে। মৃত আফরোজা বেগম অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের জলিল মোল্যার স্ত্রী। গত রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তিনি।

আফরোজা বেগমের ছোট ছেলে নবম শ্রেণির ছাত্র সাব্বির মোল্যা বলেন, 'গতকাল রাত ১২টার দিকে আম্মু বাড়ির পাশে টিউবওয়েলে পানি আনতে যায়। সেসময় বাড়িতে পাঁচজন পুলিশ আসে। অভয়নগর থানার এএসআই সিলন আলী আম্মুকে বলে, তোর কাছে যা আছে বের করে দে। আম্মু তার কাছে কিছু নেই জানালে সিলন আলী একজন নারী পুলিশ দিয়ে তার দেহ তল্লাশি করেও কিছু পায়নি। পরে সিলন আলী আম্মুকে বেধড়ক মারধর করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। আমার সামনে আম্মুর চুল ফ্যানের সঙ্গে বেঁধে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।'

আফরোজা বেগমের বড় ছেলে ইজিবাইক চালক মুন্না মোল্যা বলেন, 'গ্রামের একটি মহলের ইন্ধনে অভয়নগর থানার এসআই সিলন ও শামছু গতরাত ১২টার দিকে আমাদের বাড়িতে আসে। পরে নিজেদের কাছে থাকা ইয়াবা দিয়ে মাকে আটক দেখায়।' তিনি জানান, সিলনসহ কয়েকজন পুলিশ তার মাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে মারধর করে। পরে রাত ১টার দিকে থানায় নিয়ে যায়।

মুন্না জানান, রোববার সকালে থানায় গিয়ে দেখেন তার মা খুব অসুস্থ। পরে পুলিশকে অনুরোধ করে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা কয়েকটি টেস্ট দিলেও পুলিশ সদস্যরা সেগুলো করতে না দিয়ে তাকে ফের থানায় নিয়ে যায়। আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মায়ের মৃত্যু হয়। মুন্না আরও অভিযোগ করেন, পুলিশ দুই লাখ টাকা ঘুষের দাবিতে তার মাকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে।

এ বিষয়ে কমিশনের সুয়োমটোতে উল্লেখ রয়েছে, পুলিশের কতিপয় সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় নিয়ে একজন নারীকে চুল ফ্যানের সঙ্গে বেঁধে ঝুলিয়ে নির্যাতন ও পরবর্তীতে উক্ত নারীর মৃত্যু সংক্রান্ত অভিযোগটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। পুলিশ বাহিনীর কতিপয় সদস্যের এমন অপেশাদারি ও দায়িত্বহীন আচরণে দেশে-বিদেশে পুরো বাহিনীর কর্মকাণ্ড প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সমীচীন।

Comments

The Daily Star  | English
probe committee for past elections in Bangladesh

Govt launches probe into last 3 national polls

The government has formed a committee to investigate allegations of corruption, irregularities, and criminal activities in the three national elections held in 2014, 2018, and 2024.

4h ago