বৃষ্টিতে ডেঙ্গুর উদ্বেগ বাড়ছে

ছবি: স্টার

চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৪৫ জন মারা গেছেন এবং তিন হাজার ৭০২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলমান বৃষ্টির কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, গত বছরের জুনে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ হাজার ৯৫৬ থাকলেও জুলাইয়ে তা বেড়ে ৪৩ হাজার ৮৫৪ জনে পৌঁছায়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, 'বর্ষার বৃষ্টির সঙ্গে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যাও এখন বাড়তে শুরু করবে। এই মাস থেকে আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়তে শুরু করতে পারে।'

তিনি বলেন, অনেক ভবনের ছাদে, বারান্দায় ও ঢাকার রাস্তায়ও বৃষ্টির পানি জমে এডিস মশার জন্য আদর্শ প্রজননক্ষেত্র তৈরি করছে।

'আমরা গোরান, খিলগাঁও, মুগদা, মান্ডা, রসুলপুর, মানিকনগর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, জুরাইন, দনিয়া ও পোস্তগোলা এলাকার বাড়িঘর এবং আশপাশে বিপুল সংখ্যক এডিস মশার লার্ভার তথ্য পাচ্ছি।'

এডিস মশা প্রতিরোধে দেশব্যাপী বর্জ্য ব্যবস্থাপনার গুরুত্বের ওপর জোর দেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মোশতাক হোসেন। তিনি বলেন, 'শুধু পানির পাত্র পরিষ্কার করাই যথেষ্ট নয়। বৃষ্টির পানি জমা ঠেকাতে আবর্জনাও পুঁতে ফেলতে হবে। অন্যথায় তা মশার প্রজননস্থলে পরিণত হতে পারে।'

তিনি ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা মোকাবিলায় দেশব্যাপী পরিচ্ছন্নতা অভিযানের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

মোশতাক বলেন, এক্ষেত্রে সরকারের নেতৃত্ব ও সহায়তায় কমিউনিটিভিত্তিক সম্পৃক্ততা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ডেঙ্গুতে প্রাণহানি কমাতে তিনি বর্তমান স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা সংস্কারেরও আহ্বান জানান তিন ধাপে চিকিৎসা দেওয়ার মাধ্যমে—প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও হাসপাতালে সেবা।

বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ জানান, প্রাথমিক স্তরে রোগীর রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা দেওয়ার জন্য শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা স্থাপন করা, যাতে হাসপাতালের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি না হয়।

তিনি গ্রাম ও উপজেলা পর্যায়ে জনবল, ওষুধ ও ডায়াগনস্টিক সুবিধার অভাবের কথাও উল্লেখ করেন, যার ফলে প্রাথমিকভাবে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা বাধাগ্রস্ত হয়।

মাধ্যমিক স্তরে চিকিৎসাসেবার আওতায় থাকবে অন্তঃসত্ত্বা নারী, বয়স্ক ও শিশুসহ যাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশি, তারা। এতে করে বড় হাসপাতাল ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটগুলোর ওপর তেমন চাপ পড়বে না।

সবশেষে শুধুমাত্র গুরুতর রোগীদের বড় হাসপাতালে স্থানান্তর করা উচিত।

কীটতত্ত্ববিদ জিএম সাইফুর রহমানও সতর্ক করে বলেন, বর্তমানে বৃষ্টির যে ধরন, এতে প্রজননস্থল বেড়ে এডিসের সংখ্যাও বাড়বে। তাই এখন এডিসের প্রজননস্থল ধ্বংস করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রতিকূল আবহাওয়ায় কীটনাশক প্রয়োগ কম কার্যকর উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'তাই প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করার দিকেই এখন নজর দেওয়া উচিত।'

Comments

The Daily Star  | English
shutdown at Jagannath University

Students, teachers call for JnU 'shutdown'

JnU students have continued their blockade at the capital's Kakrail intersection for the second consecutive day

4h ago