গুলি মানিব্যাগ ভেদ করে ঢুকে বের হয় তলপেট দিয়ে

ইয়াসিন পুলিশের গুলি
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মো. ইয়াসিন। ছবি: স্টার

তেইশ বছর বয়সী মো. ইয়াসিন পেশায় পিকআপ ভ্যানের হেলপার। গত ১৯ জুলাই বাসার পাশের একটি দোকানে দাঁড়ানো অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হন তিনি।

দূর থেকে ছুটে আসা প্রচণ্ড গতির বুলেটটি ইয়াসিনের কোমরে থাকা মানিব্যাগ ভেদ করে শরীরে ঢুকে তলপেট ছিদ্র করে বের হয়ে যায়।

ইয়াসিন এখন রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।

ঘটনার দিন সন্ধ্যায় শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের পাশে রায়েরবাজার এলাকায় কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরতদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ হয়।

ইয়াসিন তার ভাই মো. মিজানের সঙ্গে রায়েরবাজার এলাকায় থাকেন। তার ভাই দিনমজুরের কাজ করেন।

দ্য ডেইলি স্টারকে ইয়াসিন বলেন, 'আমি বুঝতেই পারিনি এমন সংঘর্ষ হচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'আমার বাসা বড় রাস্তা থেকে অনেক ভেতরে। বাসার পাশের একটি দোকান থেকে সবজি কিনছিলাম। হঠাৎ গুলি এসে লাগে আমার গায়ে।'

'কোমরের ওপর আমার লুঙ্গিতে পেঁচানো ছিল মানিব্যাগ। বুলেট মানিব্যাগ ভেদ করে ঢুকে তলপেট দিয়ে বের হয়ে যায়,' যোগ করেন তিনি।

আশেপাশের মানুষজন তাকে দ্রুত সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে আড়াই ঘণ্টা ধরে অপারেশন হয় ইয়াসিনের।

কর্তব্যরত চিকিৎসক দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, কোলোস্টোমি ব্যাগের মাধ্যমে তার শরীরের বর্জ্য বের করা হচ্ছে।

অপারেশনের সময় তার চার ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়।

তিন ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট ইয়াসিন। হাসপাতালে তার সঙ্গে রয়েছেন বাবা রউফ শিকদার ও ভাই মিজান।

ঘটনার পর পিরোজপুরের নাজিরপুর থেকে ছুটে আসেন রউফ। দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'গুলি লাগার পর থেকেই ছেলেটা খুবই ভয়ে আছে। বারবার জিজ্ঞাসা করে, কবে সুস্থ হবে। যতবারই জেগে ওঠে, ব্যথায় কাঁদতে থাকে।'

মিজান জানান, বিনামূল্যে চিকিৎসার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তাদের অন্তত এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে, যা তারা বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ধার করেছেন।

তিনি বলেন, 'আমরা খুবই গরীব। আমরা কাজ করতে পারলে ঘরে খাবার যায়। কয়েকদিন ধরে কাজও করতে পারছি না। কবে যে সব ঠিক হবে জানি না।'

Comments

The Daily Star  | English
A freedom fighter’s journey to Mujibnagar

Who is a freedom fighter

The government's move to redefine freedom fighters has been at the centre of discussion

57m ago