টিএসসিতে শিক্ষার্থীদের মিছিল-সমাবেশ-মোমবাতি প্রজ্বলন
কলকাতার আর জি কর হাসপাতালের চিকিৎসক ধর্ষণ-হত্যার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় মিছিল, সমাবেশ ও মোমবাতি প্রজ্বলন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
এ সময় বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে ধর্ষণ-যৌন নিপীড়নের প্রতিটি ঘটনার বিচার দাবি করা হয়।
শিক্ষার্থীরা শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় প্রথমে মিছিল করেন। এরপর সমাবেশ ও মোমবাতি প্রজ্বলন করেন তারা। এর আগে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে শুরু হয়ে ভিসি চত্বর ও শহীদ মিনার ঘুরে আবার টিএসসিতে এসে শেষ হয়। সেখানে শিক্ষার্থী সমাবেশ করেন। এক মিনিট নীরবতা পালনের পরে তারা মোমবাতি প্রজ্বলন করেন।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম বলেন, 'বহু ধর্ষক আছে, যারা ধর্ষণকে অপরাধ বলে মনে করে না। এটা যেন নারীর প্রতি পুরুষের একটু কর্তৃত্ব দেখানো। নারীর প্রতি যদি সমাজের এই দৃষ্টিভঙ্গি না পাল্টায়; সমাজ যখন বলছি, তখন নারী-পুরুষ উভয়কেই বোঝাচ্ছি। একটি এলাকার মধ্যে যদি কোনো মেয়ে একটু মডার্ন পোশাক পরে বের হয়, এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠ নারীরা তাকে নিয়ে খারাপ কথা বলেন।'
এই রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক সময় পোশাকের স্বাধীনতা নিয়ে আন্দোলন হয়েছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
নুসরাত আরও বলেন, 'একদল এসে বলবে, সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে, বাসে সিট রাখা হয়েছে। মেয়েদের একটু কিছু বললেই ভিকটিম কার্ড খেলে দেয়। বাসে তোমরা সিট চাইবে, আবার সমান অধিকার চাইবে।'
তিনি বলেন, 'আপনারা নিজেদের ছোট ভাইদের জিজ্ঞাসা করবেন, তার জীবনের কতবার ব্যাড টাচের শিকার হয়েছে। একটা বাচ্চা ছেলে কতবার বলাৎকারের ভয়ের মধ্য দিয়ে গেছে। ধর্ষকের কাছ থেকে নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ কেউ নিরাপদ না। ধর্ষককে নারী-পুরুষ, ক্ষমতাসীন হিসেবে দেখা বন্ধ করে যতদিন না শুধুমাত্র ধর্ষণ ও অপরাধী হিসেবে দেখা শুরু হবে, ততদিন না ভারতে, না বাংলাদেশে—কোনো জায়গায় ধর্ষণের বিচার হবে না।
'ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া আছে মৃত্যুদণ্ড। মনে করুন, শেষ কবে বাংলাদেশে ধর্ষণের অপরাধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে দেখেছেন। আইন আছে কিন্তু বিচার নেই। বিচার চাইলে বলা হয়, আমরা তো আইন করেছি, আর কী আইন করতে পারি। আইনটা করা হয় কিন্তু বিচারটা করবে কে,' প্রশ্ন রাখেন তিনি।
আরেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা বলেন, 'কলকাতায় চিকিৎসক মৌমিতা ধর্ষণ ও বিচারের দাবিতে আমরা আজকে এখানে দাঁড়িয়েছি। বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের শাসন আমলে আমরা দেখেছি যে, ক্ষমতাসীন ও তাদের মদদপুষ্ট লোকজন ধর্ষণ-যৌন নিপীড়নের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল।'
'বাংলাদেশে এমন একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যেখানে একজন মানুষ যতই ক্ষমতাধর হোক না কেন—ধর্ষণ, হত্যা, যৌন নিপীড়ন করে যেন পার পেতে না পারে,' যোগ করেন তিনি।
ফাতেমা বলেন, 'গত ১৫ বছরে যত ধর্ষণ-হত্যা-যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে, সবগুলোর বিচার করতে হবে।'
Comments