‘বিভেদ-ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে গেছে, আমরা এর ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করতে চাই’

দ্য ডেইলি স্টারের মুখোমুখি হয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী ও মুখপাত্র সামান্তা শারমিন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে রাষ্ট্রের সংস্কার ও পুনর্গঠনে গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটি বলছে তারা কোনো রাজনৈতিক দল নয়। তবে জুলাই অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী সরকারকে হটানোর পর গণতান্ত্রিক সমাজ ও দেশ নির্মাণে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে আত্মপ্রকাশ করেছে ৫৫ সদস্যের এই কমিটি।

এর আগে গত ২৩ আগস্ট সংগঠক, অ্যাকটিভিস্ট, শিক্ষক, গবেষক, লেখক, সাংবাদিকদের এক সভায় এ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে গত ৮ সেপ্টেম্বর শহীদ মিনারের পাদদেশে কমিটি ঘোষণা করা হয় এবং ১৪ সেপ্টেম্বর তারা প্রথম সংবাদ সম্মেলন করে।

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অভ্যুত্থানের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা সমুন্নত রাখা, রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্কারকাজে সহযোগিতা করাসহ আট দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নে সারাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করার পরিকল্পনা এ নাগরিক কমিটির।

দ্য ডেইলি স্টারের মুখোমুখি হয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী ও মুখপাত্র সামান্তা শারমিন। উত্তর দিয়েছেন কেন এ ধরনের উদ্যোগের প্রয়োজন, কীভাবে এসব কার্যক্রম পরিচালিত হবে এবং দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট সম্পর্কিত প্রশ্নের।

দ্য ডেইলি স্টার: প্রথমেই জানতে চাই কেন এই নাগরিক কমিটি?

সামান্তা শারমীন: জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র ও জনতার দুটি শক্তিশালী অংশ কাজ করেছে। ছাত্ররা এখনো কাজ করে যাচ্ছে এবং তারা সংহত। জনতার বা সর্বস্তরের মানুষের যে অংশগ্রহণ বা যে সম্মিলিত অংশগ্রহণ আমরা গণঅভ্যুত্থানে দেখতে পেয়েছি, সেটা দেশ পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজন। সেই জায়গা থেকে আমরা ভেবেছি একটি প্ল্যাটফর্মের কথা, যেখানে সব মানুষ তাদের নিজস্ব জায়গা থেকে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করার উদ্দেশে এবং দেশ পুনর্গঠনের উদ্দেশে জড়ো হতে পারেন। এখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নিজস্ব মতবাদের ঊর্ধ্বে উঠে সবাই কাজ করতে পারবে। তা ছাড়া আমরা এটাও স্বীকার করি যে, আমাদের দেশের নাগরিকদের সার্বভৌমত্ব এখানে দশকের পর দশক ধরে লুণ্ঠন করা হয়েছে। আমরা চাই নাগরিকরা তাদের হারানো মর্যাদা ফিরে পাক। সেই জায়গা থেকে আমরা এটিকে জাতীয় রূপ দিতে জাতীয় নাগরিক কমিটি গঠন করেছি।

ডেইলি স্টার: ৫৫ জন সদস্য নিয়ে শুরু করলেন। কমিটিতে যাদের নিয়েছেন বা ভবিষ্যতে নেবেন, তাদের যোগ্যতার মাপকাঠি কী হবে?

নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী: প্রাথমিকভাবে গণঅভ্যুত্থানের একদফার প্রতি তাদের সমর্থন থাকতে হবে। আমাদের একটি ন্যাশনাল কজ আছে, সেটি হলো 'বাংলাদেশ কজ' অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রতি কমিটেড থাকতে হবে দল-মতের ঊর্ধ্বে থেকে। বিশেষত তরুণ যারা এ আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, তারা এখানে কাজ করবেন। এসব মাপকাঠি ঠিক করেছি। এরপর মানুষ হিসেবে সততাসহ যে মৌলিক সদগুণগুলো থাকতে হয়, সেগুলো তো মাপকাঠির মধ্যে থাকছেই। পাশাপাশি ফ্যাসিবাদী রেজিমের কোনো দোসর কিংবা যারা তাদের হয়ে কাজ করেছে, তাদের কাউকে আমরা নিচ্ছি না।

ডেইলি স্টার: নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলছেন। এটা দিয়ে আসলে কী বোঝাতে চাচ্ছেন?

নাসির উদ্দিন: একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং এরপর বাহাত্তরে যে রাজনৈতিক বন্দোবস্ত হয়েছিল, সেটি ব্যর্থ হয়েছে বিভিন্ন কারণে এবং একদলীয় বাকশাল তৈরি হয়েছিল। পরে নব্বইতেও একটি গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল এবং বাংলাদেশের মানুষ আশা করেছিল নতুন কিছু হবে। কিন্তু সেটিও ব্যর্থ হয়। এবার ২০২৪ সালে এসে আমরা দেখেছি আবার একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সে সম্ভাবনার জায়গা থেকে বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ আন্দোলনের মাঠে ছিল। সবাই এক ছাতার নিচে এসে ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন ঘটিয়েছে। সে জায়গা থেকে আমরা মনে করি এবার আমাদের সামনে আবার নতুন করে রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরির সুযোগ এসেছে এবং সে সুযোগকে আমরা কাজে লাগাতে চাচ্ছি।

এ আন্দোলনে অনেকগুলো ভাষা তৈরি হয়েছে। একজন সবজি বিক্রেতার ভাষাটা কেমন ছিল বা একজন রিকশাচালকের ভাষা কিংবা একজন গবেষকের... প্রত্যেকেই একটি আকাঙ্ক্ষা থেকে এ গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছিল। এই সবগুলো ভাষা যখন আপনি এক করতে পারবেন, তখন একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত চিন্তা করতে পারবেন। মানুষের আকাঙ্ক্ষার জায়গাগুলোকে যদি এক করতে পারি, তাহলে সেখান থেকে হয়তো বাংলাদেশে একটি নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা দাঁড়াবে। এবারের গণঅভ্যুত্থানে কোনো অর্গানাইজিং ফোর্স বা পলিটিক্যাল ফোর্স ছিল না, যেটি পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। এই গণঅভ্যুত্থানে যারা ছিল, তাদের বিভিন্ন অংশের সঙ্গে আমরা কথা বলছি। কীভাবে তাদের একসঙ্গে করা যায়, যেন গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটটা নিয়েই সামনের দিনগুলোতে কাজ করা যায়—এসব নিয়ে আমরা ইতোমধ্যে অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি এবং সামনেও এ আলোচনা বিদ্যমান থাকবে।

ডেইলি স্টার: 'বাংলাদেশ কজ' বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন?

সামান্তা শারমীন: বাংলাদেশে নানা ধরনের ধর্ম, মত ও পলিটিক্যাল আইডিওলজি রয়েছে। পলিটিক্যাল আইডিওলজির অনেকগুলো আগে ব্যর্থ হয়েছে। এখনো ধর্ম-মত সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে রাষ্ট্রের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান যেন কাজ করে, প্রত্যেকটি বাহিনী যেন কাজ করে, তাদের জবাবদিহিতা যেন নিশ্চিত হয় এবং সংবিধান প্রশ্নে সবাই একমত হওয়া—যেহেতু এটি নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রশ্ন, সে বিষয়টিকে আমরা বলছি 'বাংলাদেশ কজ'।

নাসির উদ্দিন: এক্ষেত্রে আমি দুটি টার্ম বলব। একটি হলো প্রোটেক্ট, আর অন্যটি প্রোগ্রেস। এমন কিছু চুক্তি হয়েছে যেগুলো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, যা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষ ক্ষুব্ধ। এসব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের কথাও স্মরণে রাখতে হবে এবং হয়তো সামনে এমন বিপ্লব আরও হবে। আর এই 'রক্ষা ও প্রোগ্রেস'কে আমরা বলছি 'বাংলাদেশ কজ'।

ডেইলি স্টার: আপনারা বলছেন নাগরিক কমিটি কোনো রাজনৈতিক দল না। কিন্তু রাজনৈতিক পুনর্গঠন নিয়েই আপনারা কাজ করবেন। দেশে যেসব রাজনৈতিক দল আছে, সেগুলো আপনাদের কীভাবে দেখবে বা তাদের সঙ্গে কীভাবে সমঝোতা করবেন?

সামান্তা শারমীন: ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানটিকে আমরা পুরোপুরি পলিটিক্যাল অ্যাকশন হিসেবে দেখি। এটিকে আমরা কোনো সোশ্যাল বা সফট মুভমেন্ট হিসেবে দেখি না। এটি পুরোপুরি রাজনৈতিক সচেতনতার জায়গা থেকে তৈরি হয়েছে এবং এটির লিগ্যাসি আমরা ধরে রাখতে চাই। আমরা মনে করি বাংলাদেশের তরুণদের দল-মত নির্বিশেষে একটি জায়গা তৈরি করা দরকার এবং সে জায়গাটি আমরা তৈরি করে দিতে চাই। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অবশ্যই কিছু বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তবে তা তখনই হবে যখন তাদের সংস্কার প্রস্তাবনা এবং আমাদের সংস্কার প্রস্তাবনা ভিন্ন হবে। আমাদের সংস্কার প্রস্তাবনা পুরোপুরি জনগণের মধ্য থেকে উঠে আসবে। এখানে জনগণের সম্পৃক্ততা থাকবে এবং এখানে কোনো ধরনের কনফ্লিক্ট যেন না থাকে, সেগুলো আমরা নিশ্চিত করার চেষ্টা করব। সে জায়গা থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যদি কোনো আলাপ-আলোচনা করতে হয়, সে জায়গাটি আমরা ওপেন রেখেছি এবং এই ব্রিজটি ক্রস করার জন্য আমরা আগ্রহী। এটাই হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আমাদের বোঝাপড়া নিয়ে ভাবনা, যা হতে পারে সমন্বয়ভিত্তিক।

ডেইলি স্টার: জনগণের সম্পৃক্ততা কীভাবে নিশ্চিত করবেন?

সামান্তা শারমীন: আমরা সারাদেশে জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি এবং প্রয়োজনভেদে থানা ও এলাকা কমিটি গঠনের চিন্তা করছি। গণঅভ্যুত্থানের পর দেখেছি প্রতিটি এলাকায় শুধু ডাকাত প্রতিহত করতে মানুষ জোটবদ্ধ হয়েছিল। এরকম বিভিন্ন এলাকায় মানুষ একত্রিত আছে। শুধু তাদের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতাটা প্রয়োজন, যা দেশ পুনর্গঠনে কাজে লাগবে। বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ রাষ্ট্রযন্ত্রের সবকয়টি উপকরণ নষ্ট করা হয়েছে। পাশাপাশি সংবিধানের কথা বলতে হয়, সেক্ষেত্রে সংবিধান পুনর্লিখন হোক কিংবা সংস্কার, জনগণের একতাবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। আমরা কমিটিগুলোর মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করব এবং সামাজিক ও অন্যান্য সংগঠনের সঙ্গে বসা ও আলোচনা করা—সেটিও আমরা তৈরি করার চেষ্টা করছি।

ডেইলি স্টার: আপনারা যেহেতু রাজনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে ভাবছেন, আপনাদের কি মনে হয় আওয়ামী লীগ আবার বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফিরতে পারবে?

নাসির উদ্দিন: এক্ষেত্রে আমরা দুটি শব্দ ব্যবহার করি। একটি হলো রিডেম্পশন, আরেকটি রিকনসিলিয়েশন। আওয়ামী লীগের যারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল, আমরা চাই তাদের বিচার হোক এবং সেটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনেই হোক। দ্বিতীয়ত, আওয়ামী লীগের যারা নিচের স্তরের কর্মী বা যারা আওয়ামী লীগকে মৌন সমর্থন দিয়েছে, সেই জায়গা থেকে তারা পুরো সংগঠনটি জাতির কাছে দায়বদ্ধ। আমি মনে করি সংগঠন এবং ব্যক্তি—দুই জায়গা থেকেই আওয়ামী লীগকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত।

ডেইলি স্টার: একমাসের বেশি সময় হলো অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। তাদের কাজ নিয়ে আপনাদের পর্যবেক্ষণ কী?

সামান্তা শারমীন: এখানে কোনো সন্দেহ নেই যে এটি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত সরকার। আমরা 'পিপলস উইল'কে যেকোনো লিখিত ডকুমেন্টসের ঊর্ধ্বে রাখি। 'পিপলস উইল' তাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে এবং তাদের সুনির্দিষ্ট কিছু কাজ করতে বলেছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো বাংলাদেশকে একটি নির্বাচনের জন্য তৈরি করা। নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করার কাজটি মোটেও সহজ না এবং এখানে অনেক কাজ আছে যেগুলো না করে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব না। এখানে রাষ্ট্রের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানকে স্বতন্ত্র করা, প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের যে অর্পিত দায়িত্ব সেখানে জবাবদিহিতা আনা এবং জনগণের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট যেসব নীতিমালা আছে সেগুলো নিরীক্ষা করে এর মধ্যে জনবিরোধী কোনো উপাদান আছে কি না দেখা এবং থাকলে সেগুলো সরানো। এসব না করা হলে বাংলাদেশের মানুষ আবারও অন্ধকারের মধ্যে পড়ে যাবে বলে আমরা মনে করি। আমরা চাই অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমে এ বিষয়গুলো সমাধান হোক। সরকারের কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা মনে করি দুর্বলতা আছে। কিছু কমিশন গঠন হয়েছে, যেটি দারুণ খবর। আমরা চাই তারা দ্রুতগতিতে কাজ করুক। কিন্তু সবচেয়ে বেশি যেটি নিয়ে আমরা নাগরিক কমিটি খুব হতাশ, সেটি হলো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো উন্নতি ঘটছে না। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বারবার বসার পরও আমরা কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি না। ফলে মানুষের মধ্যে এক ধরনের বিভাজনের রাজনীতি তৈরি হচ্ছে এবং এ ধরনের রাজনীতি আমরা আর রাখতে চাই না। এখনই যদি এসব বিষয়ে কাজ না করা হয়, আমি মনে করি এ সরকারের বিরুদ্ধেও জনগণ দাঁড়িয়ে যেতে পারে, জনগণের সে অধিকার আছে।

ডেইলি স্টার: আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রমে কেন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না? এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আপনাদের ভাবনা কী?

নাসির উদ্দিন: জনগণ আন্দোলন করেছে, তারা চেয়েছে ইতিবাচক পরিবর্তন হোক। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলে, আবার জনগণের ওপরই গুলি চালিয়েছে, এতে মানুষ ক্ষুব্ধ হয়েছে। নাগরিকের সঙ্গে অবিচার হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর যারা অপরাধ করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। বাকিদের বিশ্বাসের জায়গায় আসতে হবে। জনগণের কাছে তাদের ট্রাস্টের জায়গা তৈরি করতে হবে, রিডেম্পশন করতে হবে। এরপর জনগণের সঙ্গে তাদের একটি রিকনসিলিয়েশনের জায়গা তৈরি হবে। এ জায়গা থেকে আমরা নাগরিক কমিটি চিন্তা করছি, বাহিনীগুলোর দায়িত্ব জনগণের কাছে যাওয়া এবং তাদের সঙ্গে বসা, তাদের বিশ্বাস অর্জন করা। এগুলো হলে এসব প্রতিষ্ঠান ভালোভাবে কাজ শুরু করতে পারবে। তাই আমি চাইব সরকারের পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে কাজ করা হোক এবং নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে জনগণকে বলব, আপনারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশ্বাসের জায়গায় নিয়ে আসুন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বলব জনগণের সঙ্গে মিশে আপনারা একটি বিশ্বাসের জায়গা তৈরি করুন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছেন যে পুলিশের ছবি দেখেই একজন মারতে যাচ্ছে। আমিও থানা দেখলে ভয়ে আঁতকে উঠি। কিন্তু একটি থানা তো নির্ভরতার প্রতীক হওয়া উচিত। যদি সংস্কারের মধ্য দিয়ে জনগণের মধ্যে বিশ্বাস ফিরিয়ে আনা যায়, তাহলে হয়তো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ঠিকমতো কাজ করবে। জনগণ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও রাষ্ট্র—এ তিনের একসঙ্গে কাজ করার জন্য আমরা নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি এবং আমরাও এ বিষয়ে মাঠে নেমে কাজ করব।

ডেইলি স্টার: জনগণ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকার—এ তিনের মধ্যে সংযোগ ঘটানোর ক্ষেত্রে আপনারা কীভাবে কাজ করতে পারেন?

নাসির উদ্দিন: আমরা জনগণের কাছে যাব, বলব যে আমাদের একটি এসব সংস্থাকে পেশাদার করা প্রয়োজন, কারণ জনগণের ট্যাক্সের টাকায় এগুলো চলে। যারা অপরাধ করেছে তাদের বিচারের আওতায় এনে জনগণের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর যে সংযোগ সেটি তৈরি করব। পাশাপাশি থানা ও ট্রাফিক পর্যায়ে কোন ধরনের সংস্কার করা প্রয়োজন, সেসব বিষয়ে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনার কাজটি আমরা দ্রুত শুরু করব।

ডেইলি স্টার: অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ কীভাবে হবে বা আপনাদের বার্তা তাদের কাছে কীভাবে পৌঁছাবেন?

নাসির উদ্দিন: আমরা জনগণের পক্ষে কথা বলছি। বার্তা পৌঁছানোর ক্ষেত্রে দুইটি বিষয় আছে। একটি হলো আলোচনা, আরেকটি হলো পর্যালোচনা। এক্ষেত্রে বিভিন্ন মিডিয়ার সাহায্যে আমরা জনগণের কাছে দ্যোতনা তৈরি করব এবং সেটি সরকারের কাছে পৌঁছে দেবো। সরকারের জন্য বলব, জনগণের যে ভাষা রয়েছে এবং আন্দোলনে যে ভাষা ছিল, বিভিন্ন চ্যানেল থেকে তাদের সে ভাষা শোনার আহ্বান জানাব।

ডেইলি স্টার: সাম্প্রতিক সময়ে আমরা দেখছি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছেন এবং বাধার মুখে পড়ছেন। আপনারা সারা দেশের মানুষের কাছে যাবেন৷ সেক্ষেত্রে বাধার মুখোমুখি হতে পারেন কি না এবং কীভাবে সেটি মোকাবিলা করবেন?

সামান্তা শারমীন: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে, যেখানে সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেছে এবং সে জায়গায় আমরা কাজ করব বলছি। আমরা মনে করি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে এ জায়গাগুলোতে আমাদের সমন্বয় করতে হবে। আমরা চাইব যে ছাত্র ও জনতা আবার একতাবদ্ধ হোক। বিভিন্ন এলাকায় যখন আমরা সফরে যাব, তার জন্য আমরা কিছু নীতিমালা ঠিক করেছি এবং সেগুলোর মধ্যে থেকেই আমরা আমাদের কাজ করব। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জনগণ সবাইকে নিয়ে আমরা কাজ করতে চাই।

নাসির উদ্দিন: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছে—এটি আমরা সারফেস লেভেলে দেখছি। কিন্তু ইনার সেন্স থেকে যদি বলি, তাহলে এখানে দুইটি বিষয় কাজ করেছে৷ একটি হলো মতবাদ, আরেকটি হলো দলীয় বিবাদ। একটি প্ল্যাটফর্ম যখন তৈরি হয়, তখন সেখানে সব মানুষ অংশগ্রহণ করে। কিন্তু যখন একটি ঐক্যবদ্ধ দাবির ভিত্তিতে কোনো কিছু ঘটে যায়, তখন ওই মানুষগুলোর স্বকীয় সত্তাই নতুন পরিচয়ের মধ্য দিয়ে নিজেকে আইডেন্টিফাই করতে চায়। মতবাদের বিষয়ে বলব যার যার মতবাদ তার কাছে। দলীয় বিবাদ মোকাবিলায় আমরা সব দলের সঙ্গেই বসছি এবং বলছি আমরা কোনো দলীয় বিবাদ দেখতে চাই না। কিন্তু 'বাংলাদেশ কজে' কেউ যদি আমাদের সামনে দাঁড়ায়, সেক্ষেত্রে আমরা বলব আপনারা দলীয় বিভেদ ভুলে একসঙ্গে আসুন। আপাতত আমাদের এ দুটি প্রতিবন্ধকতা আছে এবং এগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি।

ডেইলি স্টার: গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনীর কাছে যেমনটা আশা ছিল—অনেকে বলছেন তেমন না হয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে তাদের এক ধরনের নিষ্ক্রিয়তা ছিল। এ বিষয়টিকে আপনারা কীভাবে দেখছেন?

সামান্তা শারমীন: সেনাবাহিনীর প্রতি এ দেশের মানুষের একটি বড় আস্থার জায়গা আছে। আন্দোলনের সময় আমরা 'সেনাবাহিনীর সরকার' নিয়ে স্লোগান দিতে শুনেছি। তাদের কিছু সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে। যেকোনো দেশে যখন ক্যাবিনেট ভেঙে যায়, তখন জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া প্রথম কাজ। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি এ জায়গাটাতে এখনো সেভাবে কাজ হচ্ছে না। তাই সেনাবাহিনীর প্রতি এ কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান থাকবে। কারণ তারা গণমানুষের পক্ষের, সে জায়গায় তারা ইতোমধ্যে অনেক কিছুই করেছে। কিন্তু আমরা চাই না এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হোক, যেটির মধ্যে দিয়ে তারা বিতর্কিত হোক। সামনের দিনগুলোতেও তারা আগের মতোই প্রশংসিত হোক এমনটি চাই।

নাসির উদ্দিন: সেনাবাহিনী একটি ফোর্স, যারা দেশপ্রেমের আদর্শে উদ্বুদ্ধ। এ জায়গায় বিতর্ক থাকতে পারে। কিন্তু প্রতিষ্ঠান হিসেবে যখন আমি চিন্তা করব, তখন আমি চাইব এটিকে শক্তিশালী করার জন্য এবং এর বিকল্প আমার কাছে নেই। মেন্টালি তারা শক্তিশালী আছে। কিন্তু টেকনিক্যালি তাদের কিছু সমস্যা আছে। এ জায়গাগুলো যদি ঠিক করা যায়, তাহলে সেনাবাহিনী ও জনতার মিলন আমরা মাঠে-ঘাটে দেখতে পারব।

ডেইলি স্টার: সারাদেশে আমরা এক ধরনের 'মব-সন্ত্রাসের' প্রবণতা দেখছি। এটি প্রতিরোধে আপনাদের কোনো পরিকল্পনা আছে কি?

সামান্তা শারমীন: এ ধরনের কাজ একেবারেই কাম্য নয়। এগুলো দ্রুত বন্ধ করতে হবে। কারণ আমরা চাই না গণঅভ্যুত্থানের সরকার বিতর্কিত হোক। এখানে নাগরিক কমিটির কাজ করার একটি বড় জায়গা আছে। অদূর ভবিষ্যতে আমরা চাইব প্রত্যেকটি এলাকায় মানুষের সঙ্গে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে সমস্যা নিষ্পত্তি করতে। আমরা চাইব আমাদের কমিটিগুলো যখন কাজ শুরু করবে, তখন কোনো এলাকায় যদি এরকম মব-সন্ত্রাস হয়, সেখানকার কমিটিগুলো আলোচনা করবে। এখানে গণআলোচনার সংস্কৃতি তৈরি করা উচিত। এটি করা উচিত এ কারণে যে নানা ধরনের নিপীড়ন, সন্ত্রাস, বঞ্চনার মধ্য দিয়ে যেতে যেতে আমাদের সবার মধ্যে এক ধরনের সোশ্যাল ট্রমা তৈরি হয়েছে। এগুলো দূর করতে সময় লাগবে ঠিক। কিন্তু আমরা সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে এগুলো দূর করতে পারব না। এর জন্য আমাদের আলোচনায় বসতে হবে।

নাসির উদ্দিন: এখানে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সংঘবদ্ধ রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী। আন্দোলনের মধ্যে আমরা সংঘবদ্ধ জনগোষ্ঠী দেখেছি। তারা এখন বিক্ষিপ্তভাবে আছে, তাদের যদি একসঙ্গে আনা যায়, তাহলে হয়তো মব-জাস্টিস বন্ধ করা সম্ভব।

ডেইলি স্টার: আপনারা গণপরিষদ গঠনের কথা বলেছেন। সেটি কীভাবে হবে এবং সেটি আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই হওয়া উচিত কি না?

নাসির উদ্দিন: গণপরিষদের বিষয়টি এসেছে সংবিধান বিতর্ক থেকে। আমরা বলছি গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের যে আকাঙ্ক্ষা, সেটি বাস্তবায়নের জন্য আমরা একটি নতুন সংবিধান চাই। সে নতুন সংবিধানের জন্য আমরা একটি নতুন সংবিধান সভা আয়োজন করব৷ সে সংবিধান সভায় আলোচনার মাধ্যমে জনগণের রায়ে ঠিক হবে গণপরিষদ গঠন হবে, নাকি পার্লামেন্ট হবে, নাকি এ বিষয়ে নির্বাচন হবে। সেখানে জনগণের সম্মতি নেওয়া হবে যে সংবিধান পুনর্লিখন নাকি সংস্কার হবে। এক্ষেত্রে আমরা মনে করি গণপরিষদ একটি আবশ্যক বিষয়, যেখানে দল-মতবাদের বিভেদ ছাড়া সবার অংশগ্রহণ থাকবে এবং এটি ছাড়া সংবিধান সংস্কারের কাজে যাওয়া উচিত না বলে মনে করি।

ডেইলি স্টার: সংবিধান পুনর্লিখন বা সংস্কার যেটিই হোক না কেন, এক্ষেত্রে জাতীয় নাগরিক কমিটির ভূমিকা কী হতে পারে?

নাসির উদ্দিন: জাতীয় নাগরিক কমিটি তিন স্তরে কাজ করতে পারে—সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক। আমরা চাই গণপরিষদে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকসহ সবগুলো জায়গায় তরুণ নেতৃত্ব আসুক। তাদের গণপরিষদে নিয়ে এসে সুন্দর সংবিধান তৈরির লক্ষ্যে আমরা কাজ করব।

ডেইলি স্টার: আপনারা গণমাধ্যম সংস্কারের কথা বলেছেন। কী ধরনের সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করছেন?

সামান্তা শারমীন: গণঅভ্যুত্থানের সময় আমরা গণমাধ্যম থেকে পূর্ণ সহায়তা পাইনি। আমরা জানি গণমাধ্যমও জুলুমের শিকার। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমের নীতি-নির্ধারণী বিষয়গুলো আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন এবং গণমাধ্যমকর্মীদের মোবিলাইজেশনও এক্ষেত্রে জরুরি। তাদেরকে তাদের বিষয়গুলো আদায় করে নিতে হবে। বিভিন্ন মিডিয়া হাউসগুলোকে বলব, তারা তাদের দাবিগুলো যাতে সরকারকে পাঠায়। এক্ষেত্রে মিডিয়ার বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে আমরা বসতে চাই। আমাদের পাশের দেশের গণমাধ্যম যে জায়গায় চলে গেছে, আমরা এখনো সেখানে যেতে পারছি না। আমরা মনে করি এখানে উন্নতি করা সম্ভব এবং বেসরকারি বিনিয়োগ আসা দরকার। আমরাও চাই আমাদের গণমাধ্যম এগিয়ে যাক, চাই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার মতো জায়গায় যাক।

নাসির উদ্দিন: গণমাধ্যমের অনেক কর্মী এ আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন। আমরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আমরা দেখেছি অনেক গণমাধ্যমকর্মী আন্দোলনে মার খেয়েও দায়িত্ব পালন করে গেছেন। পাশাপাশি যেসব গণমাধ্যম ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসেবে আন্দোলনের সময় কাজ করেছে, তাদেরও মানুষ দেখেছে। তাই আশা করি পেশাদার সাংবাদিকদের নিয়ে আগামীতে মিডিয়া কমিশন গঠিত হবে।

ডেইলি স্টার: আপনারা জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার কথা বলছেন। এক্ষেত্রে দেশপ্রেমিক জনগণ যেমন আছেন, ঠিক তেমনি সাম্প্রতিক সময়ে আমরা দেখেছি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর অনুসারী আছেন, মাজারভক্ত আছেন, আবার মাজার-বিরোধীও আছেন। সবাইকে নিয়ে আপনারা কীভাবে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করবেন?

সামান্তা শারমীন: আমরা গণআলোচনার কথা বলছি। এতদিন আমরা কখনো শান্তিপূর্ণ আলোচনার ওপর জোর দিইনি, জোর দিয়েছি ব্যক্তিগত লাভ-ক্ষতির ওপর। এটিই কালচার হয়ে গিয়েছিল। এর পরিবর্তন দরকার। ভিন্ন মত ও লাইফস্টাইলের সঙ্গে আমরা কীভাবে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করব, সেটি নিয়ে আমাদের ভাবা উচিত। এক্ষেত্রে আমরা চাই সব বিভেদের ঊর্ধ্বে উঠে রাষ্ট্রকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করা। আমরা জানি এক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ইতোমধ্যে বিভেদ ও ষড়যন্ত্র তৈরি শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা এগুলোর ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করতে চাই। কারণ আমরা পিপলস উইলে বিশ্বাস করি। বিভেদ তৈরির চেষ্টা হলে মানুষ আবার ঐক্যবদ্ধ হবে। কারণ গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি এখনো মানুষের মাথা থেকে যায়নি।

ডেইলি স্টার: জনগণের কাছে আপনাদের প্রত্যাশা কী?

নাসির উদ্দিন: গণঅভ্যুত্থানের সময় এক দফা দাবি আদায়ে যেখানে মানুষ ধর্ম-মত ভুলে আন্দোলনে এসেছিল, এ ছাড়া এখন একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করাও এক দফা দাবির অন্তর্ভুক্ত। জনগণের কাছে আমাদের প্রত্যাশা হলো জনগণ যেভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়েছিল ফ্যাসিস্ট রেজিমের বিরুদ্ধে, সে লড়াই শেষ না করে তাদের ঘরে না ফেরার অনুরোধ জানাচ্ছি এবং দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে একটি নতুন রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থা তৈরি করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করার আহ্বান জানাচ্ছি।

 

Comments

The Daily Star  | English

Mob justice is just murder

Sadly, when one lynching can be said to be more barbaric than another, it can only indicate the level of depravity of some our university students

2h ago