টাঙ্গাইলে হেফাজতের আপত্তিতে লালন স্মরণোৎসব বন্ধ

হেফাজতে ইসলামের আপত্তির মুখে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলায় বন্ধ হয়ে গেছে লালন স্মরণোৎসব।
আজ বুধবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে মধুপুর উপজেলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় লালন স্মরণোৎসব-২০২৫ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
ফকির লালন সাঁইজির ১৩৪তম তিরোধান বর্ষ উদযাপন উপলক্ষে মধুপুর লালন সংঘ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. জুবায়ের হোসেনের উপস্থিত থাকার কথা ছিল।
এ ব্যাপারে জানতে উৎসব আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক সবুজ মিয়াকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে তিনি ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।
সবুজ লেখেন, 'হঠাৎ করেই খবর পাই মধুপুর হেফাজতে ইসলাম আমাদের অনুষ্ঠান নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে।'
এ নিয়ে গতকাল আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এতে অংশ নেন উপজেলা হেফাজতের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল্লাহ, কওমি উলামা পরিষদের সভাপতি সোলায়মান কাসেমীসহ ১০-১৫ জন। লালন সংঘের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি ফরহাদ হোসেন তরফদার ও সবুজ মিয়া। দুপক্ষের মধ্যস্থতা করেন মধুপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকির হোসেন সরকার।
'আমাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আমরা এখানে মতাদর্শ প্রচারের জন্য এই আয়োজন করিনি। এখানে লালন এর মতাদর্শ নিয়ে কোনো আলোচনা ইতোপূর্বে হয়নি, এবারও হবে না। আমরা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করি শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য। এছাড়া যে গানগুলো নিয়ে তাদের আপত্তি, সেই গানগুলো অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা হবে না,' লেখেন সবুজ।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, লালন বাদ দিয়ে সাধারণ কনসার্ট করলে আপত্তি থাকবে না—শুরুতে হেফাজত নেতারা এমন কথা জানালেও পরবর্তীতে বলেন, কিছুতেই অনুষ্ঠান করতে দেবেন না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হেফাজত সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় আমরা ভ্রান্ত লালন মতাদর্শ প্রচারে আপত্তি জানিয়েছি।
যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জুবায়ের হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে মঙ্গলবার রাতে আয়োজকরা জানিয়েছেন, অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'এই ধরনের আয়োজন করার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়। মধুপুর লালন সংঘ প্রশাসনকে না জানিয়ে এই আয়োজন করেছিল।'
Comments