নির্দিষ্ট কোনো সরকার নয়, আমাদের সহযোগিতা বাংলাদেশের মানুষের জন্য: চীনা রাষ্ট্রদূত

সেন্টার ফর অলটারনেটিভ আয়োজিত সেমিনারে আয়োজিত সেমিনারে বক্তব্য দেন চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, আমাদের সহযোগিতা বাংলাদেশের জনগণের জন্য, নির্দিষ্ট কোনো সরকারের জন্য নয়।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে 'বাংলাদেশে চীনের জাতীয় ভাবমূর্তি' শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। 

রাষ্ট্রদূত বলেন, 'আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বা কোন দেশের অভ্যন্তরে যে পরিবর্তনই হোক না কেন, আমাদের নীতি স্পষ্ট। চীন অংশীদার হিসেবেই থাকবে।'

'আমাদের সহযোগিতা বাংলাদেশ, দেশের জনগণ ও চীনা জনগণের জন্য,' তিনি বলেন।

তিনি আরও বলেন, 'চীন সবসময় একটি দেশ ও তার জনগণের সঙ্গে থাকে, কোনো নির্দিষ্ট সরকারের সঙ্গে নয়।'

রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, 'প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে চীন বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা, ঐক্য ও গণতন্ত্রের বিকাশ দেখতে চান।'

আগামী ২৬-২৯ মার্চ প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন চীন সফর সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'চীন বিশ্বের সব দেশের প্রধানমন্ত্রী বা সরকার প্রধানকে আমন্ত্রণ জানায় এবং এ মুহূর্তে এ সফরের অগ্রাধিকার সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করা যাচ্ছে না।'

তিনি আরও বলেন, 'গণতন্ত্রের কোনো সার্বজনীন রূপ নেই এবং এটি দেশ থেকে দেশে ভিন্ন হতে পারে। কোনো দেশের জনগণ এটি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়।'

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর অলটারনেটিভ আয়োজিত সেমিনারে ২০২৪ সালের একটি জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ। তিনি জানান, জরিপে অংশ নেওয়া ৯৯ শতাংশ মানুষ চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে সমর্থন করে।

২০২৪ সালে প্রায় ৬৭ শতাংশ বাংলাদেশি চীন সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা পোষণ করেছেন, যা ২০২২ সালের ৬০ শতাংশ থেকে বেশি।

জরিপের ফলাফলে বলা হয়, অন্তত ৭৫ শতাংশ বাংলাদেশি উচ্চশিক্ষার জন্য চীনে ব্যক্তিগতভাবে যেতে বা তাদের সন্তানদের পাঠাতে ইচ্ছুক, যা ২০২২ সালের তুলনায় ৫ শতাংশ বেশি।

ইয়াও ওয়েন বলেন, 'বাংলাদেশিরা চীনা বিনিয়োগকে ব্যাপকভাবে স্বাগত জানায় এবং বাংলাদেশের জাতীয় উন্নয়ন, নির্মাণ ও দারিদ্র্য বিমোচনে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা বলে থাকেন।'

তিনি বলেন, 'এই তথ্যগুলো বাংলাদেশ-চীন কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারত্বকে আরও এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে চীনকে আস্থা যুগিয়েছে।'

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে ১৪টি চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে ২১৩ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। গণঅভ্যুত্থানে আহত রোগীদের প্রথম একটি দল গত ১০ মার্চ উন্নত চিকিৎসার জন্য চীনে যান বলেও উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে ইয়াও ওয়েন বলেন, 'এটি মূলত বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সমস্যা। চীন এতে মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু মিয়ানমারে, বিশেষ করে রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির কারণে সেই প্রচেষ্টা থমকে গেছে।'

Comments

The Daily Star  | English
Election Commission

EC’s accountability is key to Bangladesh’s electoral reform

Success of wider electoral reforms depends heavily on the EC’s willingness to adopt reforms.

8h ago