ট্রাম্প-শুল্ক: করণীয় নির্ধারণে সন্ধ্যায় জরুরি বৈঠক যমুনায়

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় হবে যমুনা
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘যমুনা’। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন 'রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ' নীতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর আরোপিত ৩৭ শতাংশ শুল্কের ঘোষণায় করণীয় নির্ধারণে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, শীর্ষ বিশেষজ্ঞ, উপদেষ্টা ও কর্মকর্তারা এই বৈঠকে যোগ দেবেন।

গত বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজ প্রকাশিত একটি চার্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশ কার্যত মার্কিন পণ্যের ওপর ৭৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। তাই, বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ 'ডিসকাউন্টেড রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ' ধার্য করা হয়েছে।

যেসব দেশ মার্কিন পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে ট্রাম্প প্রশাসন 'লিবারেশন ডে' উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই 'রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ' চালু করেছে।

এই নীতির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে সব ধরনের পণ্য আমদানির ওপর প্রাথমিকভাবে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তবে কিছু দেশের জন্য এই শুল্কহার আরও বেশি।

৩৭ শতাংশ 'রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ'র এই ঘোষণা বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বাংলাদেশে। কারণ, পণ্য রপ্তানি, বিশেষ করে পোশাক রপ্তানির ওপর দেশের অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভরশীল, যার সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। ঢাকার শিল্পখাতের নেতারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এই উচ্চ শুল্ক বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা দুর্বল করে দিতে পারে।

এই শুল্ক আরোপের ঘোষণার দিনই প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, 'আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করছি। যেহেতু এটি আলোচনাযোগ্য, তাই আমরা আলোচনা করব এবং আমি নিশ্চিত যে আমরা সর্বোত্তম সমাধানে পৌঁছাতে পারব।'

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্য আমদানির ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, 'এখনো পুরো বিষয়টি আলোচনা শুরুর পর্যায়ে রয়েছে। আমরা এটা পর্যালোচনা করছি এবং আমরা যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করছি, তাতে আশাবাদী সামনের দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে। আমরা এমন একটা সমাধানের দিকে যেতে পারব, যাতে উভয়পক্ষের জন্য উইন-উইন সিচুয়েশন হয়।'

প্রেস সচিব দূঢ় আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন, আমরা এমন কিছু করব যেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ উভয়ের স্বার্থ সংরক্ষণ হয়। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখছে বলে জানান তিনি।

ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধের প্রধান লক্ষ্যবস্তু চীনকে ৩৪ শতাংশ রেসিপ্রোকাল ট্যারিফের সম্মুখীন হতে হবে। এর সঙ্গে মাদক সংক্রান্ত বিদ্যমান ২০ শতাংশ শুল্ক এবং সোলার প্যানেলের মতো পণ্যের ওপর পৃথক শুল্ক যুক্ত হবে। ফলে অনেক চীনা পণ্যের ওপর কার্যকর শুল্কের হার ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। ব্লুমবার্গ ইকোনমিকসের বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, এর ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা রপ্তানি ৯০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে।

এর বিপরীতে শুক্রবার মার্কিন পণ্যের ওপর নতুন করে ৩৪ শতাংশ শুল্কের ঘোষণা দিয়েছে চীন। দেশটির স্টেট কাউন্সিলের বরাত দিয়ে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানায়, আগামী ১০ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে নতুন এই শুল্ক।

Comments

The Daily Star  | English
yunus calls on youth to join politics

Yunus urges young people to engage more in politics

Yunus made the call when a group of young political activists from different political parties of Norway called on him at the state guest house Jamuna today

53m ago