ইভিএম হচ্ছে ভোটের রেজাল্ট কারচুপির সিস্টেম: জাপা মহাসচিব

মুজিবুল হক চুন্নু। স্টার ফাইল ফটো

জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, ইভিএম হচ্ছে ভোটের রেজাল্ট কারচুপির সিস্টেম। ১৫০ আসনে ইভিএম কেনার সিদ্ধান্ত উচ্চাভিলাষী। দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় ইভিএমের বিপক্ষে মতামত দিয়েছে। শুধু সরকার ও তাদের কয়েকটি মিত্র রাজনৈতিক দল ইভিএমে নির্বাচন চেয়েছে।

তিনি বলেন, 'এমন বাস্তবতায় নির্বাচন কমিশন বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের মতামত উপেক্ষা করে ইভিএমে নির্বাচন করতে চাচ্ছে। এই মেশিনে ভোট কারচুপি করলে, তার কোনো প্রমাণ থাকে না। আবার প্রমাণের অভাবে সংক্ষুব্ধ হয়ে কেউ আইনের সহায়তা নিতে পারবে না। আমরা এখনো ইভিএমে নির্বাচন চাই না।'

আজ বুধবার দুপুরে জাপা চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে জাতীয় ভূমিহীন আন্দোলন সুরক্ষা পার্টির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে মুজিবুল হক চুন্নু এ কথা বলেন।

জাপা মহাসচিব বলেন, 'নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ মূল্যহীন। যে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা নেই তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে বলে মনে হয় না। আইনে আছে, নির্বাচনের সময় দেশের নির্বাহী বিভাগ নির্বাচন কমিশনের অধীনে কাজ করবে। কিন্তু নির্বাহী বিভাগ যদি নির্বাচন কমিশনের কথা না শোনে তাহলে কী হবে তা বলা নেই। তাই নির্বাচন কমিশনের কথা নির্বাহী বিভাগ মানতে বাধ্য নয়।'

'আমরা চেয়েছিলাম নির্বাচন কমিশনকে ক্ষমতা দিয়ে আইন করা হোক। কেউ নির্দেশ অমান্য করলে যেন কমিশন সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু, নির্বাচন কমিশনই ক্ষমতা চায় না,' বলেন তিনি।

তিনি বলেন, 'শুরু থেকেই নির্বাচন কমিশন স্ববিরোধী কথা বলছে। তারা বলছে, কাউকে হাতে-পায়ে ধরে নির্বাচনে আনা নাকি তাদের কাজ নয়। তাহলে এতগুলো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করলেন কেন? আবার তারা বলেছেন, সবাই চাইলে নাকি ব্যালটে নির্বাচন হবে। শাসক দল তো ইভিএম চায়, তাহলে কী বেশিরভাগ দলের মতামত উপেক্ষা করে ইভিএমে নির্বাচন করবে কমিশন?'

'১৫০ আসনে ইভিএমে নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশন আরও ২ লাখ ইভিএম কিনতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া ইভিএম সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দেশের ১০টি অঞ্চলে ১০টি ওয়্যার হাউস নির্মাণ করবে তারা। এজন্য প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকার একটি বাজেটও তৈরি করেছে নির্বাচন কমিশন। দেশের অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে এমন সিদ্ধান্ত অগ্রহণযোগ্য,' যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, 'যখন মানুষ অর্থনৈতিক কষ্টে জীবন চালাতে পারছে না তখন কার স্বার্থে নির্বাচন কমিশন ৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ইভিএম কিনতে চাচ্ছে। যদি রাজনৈতিক দলের মতামতের গুরুত্ব নাই দেওয়া হয় তাহলে কেন তাদের সাথে দফায়-দফায় আলোচনা করা হলো। দেশের মানুষ জানতে চায়, কার স্বার্থে ইভিএমে নির্বাচন করতে চাচ্ছে? নির্বাচন কমিশন (ইসি) কার অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে কাজ করছে? যারা মানুষের ভোটাধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে দেশের মানুষ তাদের ক্ষমা করবে না। জনতার আদালতে ভোটাধিকার হরণকারীদের বিচার একদিন হবেই।'

'দেশের মানুষ আর আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে চায় না। ২টি দল দেশে সুশাসন দিতে ব্যর্থ হয়েছে। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে একটি তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি দেখতে চায়। জাতীয় পার্টি সেই বিকল্প শক্তি হতে চেষ্টা করছে। জাতীয় পার্টি কারো সঙ্গে জোট করবে না। জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনেই নির্বাচন করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। জাতীয় পার্টি আর কারো জোটে যাবে না। কোনো রাজনৈতিক শক্তি জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব মেনে আমাদের সঙ্গে জোট করতে চাইলে, আমরা বিবেচনা করব,' বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

5h ago