কেন গুলি চালানো হলো, পুলিশকে জবাব দিতে হবে: রুমিন ফারহানা

কোনোরকম উস্কানি না থাকা সত্ত্বেও কেন গুলি চালানো হলো, পুলিশকে এর জবাব দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা।
চরশিবপুর গ্রামে নিহত নয়নের বাড়িতে রুমিন ফারহানা। ছবি: সংগৃহীত

কোনোরকম উস্কানি না থাকা সত্ত্বেও কেন গুলি চালানো হলো, পুলিশকে এর জবাব দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা।

আজ বুধবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের চরশিবপুর গ্রামে পুলিশের গুলিতে নিহত ছাত্রদল নেতা রফিকুল ইসলাম নয়নের গ্রামে আয়োজিত শোকসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

এর আগে, সকালে কেন্দ্রীয় বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল নয়নের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের প্রতি সমবেদনা জানান। প্রতিনিধি দলে রুমিন ফারহানা ছাড়াও ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী, ছাত্রদল সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল ও কেন্দ্রীয় কৃষক দলের যুগ্ম-সম্পাদক কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশসহ অনেকে।

সেসময় রুমিন ফারহানা বলেন, 'শুধু লিফলেট বিতরণ করার কারণে বিনা উস্কানিতে হাসিনার পুলিশ লীগ পাখির মতো গুলি করে নয়নকে হত্যা করেছে। তাকে হত্যার পর সেই মামলা না নিয়ে কেন বিএনপির অন্যান্য নেতাকর্মীদের আসামি করে মামলা করা হলো, তার জবাবও পুলিশকে দিতে হবে।'

তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের মানুষ সহ্য করে, সহনশীল। কিন্তু তারা ভুলে যায় না। ৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের দুঃশাসন এ দেশের মানুষ ভুলেনি। ৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত তাদের অপশাসনও বাংলাদেশের মানুষ ভুলেনি। ২০০৮ সাল থেকে বিনাভোটে মধ্যরাতে নির্বাচন করে নির্লজ্জের মতো তারা ক্ষমতা আঁকড়ে বসে আছে। তারা মনে করে এর জবাব দিতে হবে না, কিন্তু সব হিসাব আমরা নেব। সব ঘটনার জবাব দিতে হবে। গত চৌদ্দ বছরে কেন বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীকে বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছে, গুম করা হয়েছে, সেই জবাব দিতে হবে।'

বিএনপির এই নেত্রী বলেন, 'একদিন বাঞ্ছারামপুরের মাটিতেই নয়ন হত্যার বিচার করা হবে। এই ধরনের হত্যাকাণ্ডের জন্য র‍্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। এই দিন বেশি দূরে নয়, সাধারণ মানুষ এখন পুলিশের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা চায়।'

এজন্য তিনি বাংলাদেশ পুলিশের উদ্দেশে এই ধরনের হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে সাবধান হওয়ার কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে রুমিন ফারহানা বলেন, 'আওয়ামী লীগ ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে যেভাবে বিনাভোটে লুটপাটের মাধ্যমে মধ্যরাতে নির্বাচন করে ক্ষমতায় এসেছে, মনে করবেন না ২০২৪ সালেও আপনারা সেই ওয়াকওভার পাবেন। ২০২৪ সালে বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের এসবের সমুচিত জবাব দেবে।'

বিএনপির এই প্রতিনিধি দলের সদস্যরা নিহত নয়নের পরিবারকে সবসময় সহায়তার আশ্বাস দেন। পরে তারা চরশিবপুর গ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

উল্লেখ্য, আগামী ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় বিএনপির মহাসমাবেশ সফল করতে গত ১৯ নভেম্বর শনিবার বিকেলে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদরে মিছিল যোগে লিফলেট বিতরণ করার সময় পুলিশ বাধা দিলে নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশের ছোড়া শটগানের গুলি সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম নয়নের পেটে ও বুকে বিদ্ধ হয়। এরপর তাকে প্রথমে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর রাত সাড়ে ৭টার দিকে তিনি মারা যান।

এই ঘটনায় আজ নয়নের বাবা মো. রহমত উল্লাহ বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমানসহ ৮ জন পুলিশ সদস্যের নাম উল্লেখ করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।

Comments

The Daily Star  | English
justice delayed due to fake cases

A curious tale of two cases

Two cases were filed over the killing of two men in the capital’s Jatrabari during the mass uprising that toppled the Awami League government.

16h ago